শিক্ষামন্ত্রীকে স্মারকলিপি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ময়নাগুড়ি |
রায়গঞ্জ কলেজে অধ্যক্ষ নিগ্রহের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানালো উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ পরিষদ। সেই সঙ্গে গোলমাল এড়াতে নির্বাচন কমিশনের মতো নিরপেক্ষ সংস্থা তৈরি করে রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ সংসদ নির্বাচন পরিচালনার দাবিও তুলেছেন তাঁরা। ওই দাবিতে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পাঠাচ্ছেন তাঁরা। অধ্যক্ষ পরিষদের সম্পাদক দেবকুমার মুখ্যোপাধ্যায় বলেন, “শুধুমাত্র বৃহস্পতিবার নয়, তার আগে দু’দিন ধরে রায়গঞ্জ কলেজে তাণ্ডব চলেছে। আমরা সমস্ত ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে জড়িতদের এমন শাস্তির দাবি জানাচ্ছি যেন ভবিষ্যতে কেউ অধ্যক্ষ লাঞ্ছনার সাহস না-পায়। পরিষদের তরফে শিক্ষামন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিয়ে কলেজ সংসদ নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশনের মতো সংস্থা তৈরির প্রস্তাব পাঠানো হবে।” বৃহস্পতিবারের ঘটনার পর থেকে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ এবং শিক্ষকরা এতটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন যে অনেকে কলেজে যেতে ভয় পাচ্ছেন। ডালখোলা কলেজের অধ্যক্ষ পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। অধ্যক্ষ পরিষদের কর্তাদের ফোনে প্রত্যেকে আতঙ্কের কথা জানাচ্ছেন। পরিষদ মনে করছে এ ভাবে চলতে থাকলে অধ্যক্ষ ও শিক্ষকরা কাজ করতে পারবেন না। শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংস হবে। তাই রায়গঞ্জ কলেজের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ধূপগুড়ি কলেজের অধ্যক্ষ নীলাংশুশেখর দাস বলেন, “আতঙ্কের মধ্যে আছি। মন খুলে কাজ করতে পারছি না। কলেজে বহিরাগতরা ঢুকে পড়ছে। কলেজ গেটে কয়েকশো মানুষ ভিড় করছে। বাইরে ভিড় কেমন সেটা খোঁজ নিয়ে কলেজ ছাড়তে হচ্ছে।” ৪ ফেব্রয়ারি শিলিগুড়ি মহকুমা এবং জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন কলেজ সংসদ নির্বাচন হবে। বৃহস্পতিবারের ঘটনার পরে স্থানীয় বিভন্ন কলেজ কর্তৃপক্ষ বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। জলপাইগুড়ি আনন্দচন্দ্র কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, “নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসছে ততই ভয় হচ্ছে। জানি না কী হবে! অধ্যক্ষ পরিষদ অশান্তি এড়াতে নির্বাচনের আগে ও পরে কলেজ ক্যাম্পাসে কড়া নিরাপত্তার দাবি তুলেছেন। শিক্ষামন্ত্রীকেও দাবির কথা তাঁরা জানাবেন। পরিষদের সম্পাদক বলেন, “কলেজ ক্যাম্পাসে আমরা অসহায়। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে সংসদের নির্বাচন করতে হবে। নিরাপত্তার ব্যবস্থা কী হবে সেটা রাজ্য সরকার ঠিক করবেন। তাঁরা পুলিশ পিকেট বসাতে পারেন। আবার প্রাইভেট এজেন্সিকে দায়িত্ব দিতে পারেন। নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে।” অধ্যক্ষ পরিষদের কর্তারা মনে করেন ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে কোনও সমস্যা হয় না কলেজ কর্তৃপক্ষের। গোলমালের সৃষ্টি করে বহিরাগতরা। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের হাত ধরে ওঁরা কলেজে ঢুকছে। ওই দলে দুষ্কৃতীরাও থাকে। বিভিন্ন দলের ঝাণ্ডা নিয়ে অশান্তির সৃষ্টি করে। কিন্তু কলেজের পক্ষে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ ঠেকানো সম্ভব নয়। তাই অশান্তির আশঙ্কা থেকেই যায়। ওই বিপদ এড়াতে নির্বাচন কমিশনের মতো সংস্থা তৈরি করে কলেজ সংসদ নির্বাচন পরিচালনার প্রস্তাব শিক্ষামন্ত্রীকে দেওয়া হচ্ছে। পরিষদের সম্পাদক বলেন, “বিকল্প কোনও পথ খোলা নেই। দিনের পর দিন সমস্যা বেড়ে চলেছে। তাই নির্বাচন কমিশনের মতো সংস্থা তৈরি করে সংসদ নির্বাচন পরিচালনা জরুরি হয়ে পড়েছে।”
|