|
|
|
|
মিউটেশনের কয়েক হাজার আবেদন পড়ে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
দিনের পর দিন ফাইল পড়ে থাকে। কাজ সে ভাবে এগোয় না। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ নতুন নয়। রাজ্যে পালাবদল হয়েছে। প্রশাসনিক কাজে তৎপরতা আনতে উদ্যোগী হয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, সংশ্লিষ্ট দফতরের কাজের ‘হাল’ সেই একই রয়েছে বলে অভিযোগ। কাজ হাতে নিয়ে দফতরে আসছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু, ফাইল নড়ছে না!
সংশ্লিষ্ট দফতরের পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট, সময়ের মধ্যে কাজ সে ভাবে হচ্ছে না। গত বছর ১ এপ্রিল থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় মিউটেশনের কাজ হয়েছে ৪৯ হাজার ১৩৮টি। যেখানে আরও ৩২ হাজার ৬০টি আবেদন পড়ে রয়েছে। ভূমি সংস্কার দফতরের কাজে আরও গতি আনা প্রয়োজন বলে মানছে জেলা প্রশাসনও। জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে মিউটেশনের আবেদন পড়ে থাকছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কাজে আরও গতি আনা প্রয়োজন।”
শুধু জমি কেনাবেচাই নয়, জমির চরিত্র পরিবর্তন করার জন্যও অনেকে ভূমি দফতরে আসেন। নিয়ম মেনে আবেদন করেন। কিন্তু, সেই সব আবেদনও দীর্ঘ দিন পড়ে থাকে বলে অভিযোগ। সংশ্লিষ্ট দফতরের কাজকর্ম খতিয়ে দেখতে গত সপ্তাহেই জেলায় আসে বিধানসভার ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির এক প্রতিনিধি দল। মেদিনীপুরে বৈঠক হয়। সেখানে কাজে কী সমস্যা হচ্ছে, কেন সময়ের মধ্যে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না---এ সব নিয়ে আলোচনা হয়। সংশ্লিষ্ট দফতরের কাজকর্ম পর্যালোচনা করে স্ট্যাডিং কমিটিও মনে করছে, মিউটেশন-সহ বেশ কিছু কাজ সময়ের মধ্যে শেষ হচ্ছে না। কিছু ক্ষেত্রে গড়িমসি হচ্ছে। কমিটির চেয়ারম্যান অর্ধেন্দু মাইতি বলেন, “জমির চরিত্র পরিবর্তন ও মিউটেশনের ফাইল পড়ে থাকে। কিন্তু এ বার থেকে আর আবেদনপত্র ফেলে রাখা যাবে না।” পরিস্থিতির ‘হাল’ ফেরাতে প্রয়োজনে পঞ্চায়েত-স্তরে ক্যাম্প করে মিউটেশনের কাজ করতে হবে বলেও জানান তিনি। ভূমি সংস্কার দফতরে সময়ের মধ্যে কাজ পেতে একাংশ কর্মীকে ঘুষ দিতে হয় বলেও অভিযোগ। যদিও জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এমন অভিযোগ এলে তা খতিয়ে দেখে দ্রুত উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, গত বছর ১ এপ্রিল থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ জেলায় মিউটেশনের জন্য আবেদন জমা পড়েছিল ৮১ হাজার ১৯৮টি। তার মধ্যে ৩২ হাজার ৬০টিই পড়ে রয়েছে। একই অবস্থা জমির চরিত্র পরিবর্তনের ক্ষেত্রে। এ ক্ষেত্রে ওই সময়সীমায় আবেদন জমা পড়েছিল ৭ হাজার ১৮২টি। কাজ হয়েছে ৫ হাজার ২১৬ টির। অর্থাৎ ১ হাজার ৯৬৬টি আবেদন এখনও পড়ে রয়েছে। সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না-হওয়ার জন্য ভূমি সংস্কার দফতরের একাংশ অবশ্য কর্তৃপক্ষকেই দুষছেন। তাঁদের বক্তব্য, দফতরের অর্ধেক পদই শূন্য। এই অবস্থায় সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা মুশকিল। দফতর সূত্রে খবর, জেলায় ক্লার্কের অনুমোদিত পদ রয়েছে ৫৫২টি। তার মধ্যে ২৬৭টি পদই শূন্য। আমিন ও ড্রাফটসম্যান পদের সংখ্যা ৪০৬টি। রয়েছেন ১৯৭ জন। চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর অনুমোদিত পদের সংখ্যা ১০৬৪টি। রয়েছেন ৬৫০ জন। তবে, সাধারণ মানুষের বক্তব্য, সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মীদের একাংশ কাজের ক্ষেত্রে গড়িমসিও করেন। রয়েছে উৎকোচ-চক্রও। |
|
|
|
|
|