উত্তর কলকাতা: পাইকপাড়া, ব্যারাকপুর
চলছে চোলাই
স্মৃতিতে সংগ্রামপুর
সংখ্য মানুষ সংগ্রামপুরে বিষমদের বলি হয়েছেন । কিন্তু চিত্রটি বিশেষ বদলায়নি বেলঘরিয়ায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, কামারহাটি পুরসভার বেলঘরিয়া অঞ্চলে এক শ্রেণির মদ্যপায়ীর দৌরাত্ম্যে বাস করাই কার্যত দুরূহ হয়ে উঠেছে। এর পিছনে রয়েছে বেলঘরিয়া অঞ্চল জুড়ে চোলাই মদের রমরমা কারবার। বার বার জানানো সত্ত্বেও উদাসীন প্রশাসন। যদিও প্রশাসনের দাবি, গ্রেফতার, ঠেক ভাঙা সমেত নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার চম্পক ভট্টাচার্য বলেন, “জেলা জুড়েই ব্যাপক ধরপাকড় চলছে। অনেক ঠেকও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আপাতত সমস্যা নেই বলেই মনে হয়।” কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেলঘরিয়া অঞ্চল জুড়ে অসংখ্য চোলাই মদের ঠেক চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, “উত্তর ২৪ পরগনার নিউ ব্যারাকপুর, মধ্যমগ্রাম, বারাসত-সংলগ্ন এলাকা থেকে দিনেই ট্রেনে করে চোলাই মদ চলে আসছে বেলঘরিয়ায়। রেললাইনের ধারে নির্জন নয়ানজুলির পাশে বাঁশের মাচায় চোলাই বিক্রি হয়।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বোতল এবং পাউচে পাইকারি ও খুচরো, দু’ভাবেই বিক্রি হচ্ছে চোলাই মদ। মদ্যপায়ীদের একাংশ মাতাল হয়ে রেললাইনের ধারে শুয়ে থাকে। কেউ কেউ পথচলতি মানুষের গায়ে পড়ে। প্রতিবাদ করলেই গালাগাল শুনতে হয়।
যদিও শিয়ালদহের রেল পুলিশ সুপার তাপসরঞ্জন ঘোষ বলেন, “ব্যাপক অভিযান চলছে। বেশ কিছু ঠেক ভাঙা হয়েছে। কয়েক জন গ্রেফতারও হয়েছেন।”
সন্ধ্যার পরে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। অভিযোগ উঠেছে, সন্ধ্যার পরে ফিডার রোডের ধারে একাধিক গলিতে ঠেক বসে যায়। সন্ধ্যা ৬টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ঠেক চলে। তা ছাড়া সাইকেলে করে ঘুরে ঘুরেও চোলাই বিক্রি চলে। সঙ্গে চাটও মেলে। কার্যত বিনা বাধায় দীর্ঘ দিন ধরে এই ব্যবসা চলছে। পথচারী রাজশ্রী গুহের কথায়: “সন্ধ্যার পরে স্টেশনের দিকে যাতায়াত করতে ভয় করে। দিনেও মাতালদের জন্য সমস্যা হয়। ছেলেমেয়ে নিয়ে পথ চলাই দুরূহ। অথচ পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয় না।”
বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, শুধু বেলঘরিয়াই নয়, কামারহাটি পুরসভার আড়িয়াদহ, দক্ষিণেশ্বর, কামারহাটি, নন্দননগরেও একই অবস্থা। প্রশাসনিক উদাসীনতায় ঠেকগুলির বাড়বাড়ন্ত। কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান সিপিএমের তমাল দে-র কথায়: “আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ আসেনি। লুকিয়ে-চুরিয়ে কোথাও হয়তো হচ্ছে। অভিযোগ পেলে পুলিশকে জানাবো।” আবগারি দফতরের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সুপার সমর স্বর্ণকারের বক্তব্য: “পরিকাঠামোর ঘাটতি রয়েছে। তবুও জেলা জুড়ে জোরদার অভিযান চলছে। বেলঘরিয়াতেও ঠেক ভাঙা হয়েছে। কয়েক জন গ্রেফতারও হয়েছেন। লুকিয়ে কোথাও ঠেক চললে তাও ভেঙে দেওয়া হবে।”

অলঙ্করণ: সুমন চৌধুরী




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.