পূর্ব কলকাতা
নবদিগন্ত
যান শাসনে প্রয়াস
যেখানে হাতে গোনা কয়েক জন মাত্র পুলিশকর্মী থাকেন, সেখানেই এখন অসংখ্য পুলিশকর্মী। বাধ্য হয়েই সিগন্যাল মেনে গাড়ি চালাতে বাধ্য হলেন গাড়িচালকেরা। অন্য দিনের ‘অবাধ্য’ পথচারীরাও রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ মানলেন। পর্যায়ক্রমে বিধাননগরের পাঁচ নম্বর সেক্টরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে এ ভাবেই যানজট নিয়ন্ত্রণের কাজ করল পুলিশ।
যানজট নিয়ন্ত্রণে শিল্পতালুকের দায়িত্বপ্রাপ্ত নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষ একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছেন। তারই অঙ্গ হিসেবে অবশেষে পথনিরাপত্তা সপ্তাহ পালন করলেন নবদিগন্ত কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, গ্রিন পুলিশকর্মীদের প্রশিক্ষণ, গাড়িচালকদের সচেতনতা বাড়াতে কর্মশিবির ও চক্ষুপরীক্ষার আয়োজনও করেছিলেন কর্তৃপক্ষ।
আইটি কর্মী থেকে এই শিল্পতালুকে যাতায়াত করা পথচারীরা এই ধরনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে তাঁদের দাবি, একটি সপ্তাহ এই ধরনের কর্মসূচি পালন করে আখেরে বিশেষ লাভ নেই। নিয়মিত আকারে এই কাজ করলেই সুবিধা। নবদিগন্ত কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, সচেতনতা বাড়াতে পারলে সমস্যার অনেকটাই সমাধান সম্ভব। তাই প্রথমে এই ধরনের প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। তবে, এর পাশাপাশি বেশ কিছু স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যা কার্যকরী হলে যানজট সমস্যা অনেকটাই কমবে।
নতুন বছরের শুরুর দিন থেকেই এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে কলেজ মোড়েই বিশেষ নজর দেওয়া হয়। কারণ এই মোড়েই যানজট সমস্যা তীব্র আকার নিয়েছে বলে নবদিগন্ত সূত্রে খবর। কিন্তু পথচারীদের অভিজ্ঞতা, অসংখ্য পুলিশকর্মী থাকলেও তাঁদের অনেকেই যে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজে পোক্ত নন, তা বোঝা গিয়েছে। ফলে মাঝেমধ্যে সমস্যা দেখা দিয়েছে। উপরন্তু, পাঁচ নম্বর সেক্টরের বিভিন্ন রাস্তায় যত্রতত্র পার্কিংয়ের গেরোয় এই কর্মসূচি কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে।
গড়িয়ার বাসিন্দা তীর্থঙ্কর ঘোষ কর্মসূত্রে পাঁচ নম্বর সেক্টরে যাতায়াত করেন। তিনি বলেন, “এক সপ্তাহ ধরে পুলিশকর্মীরা অনেক বেশি সংখ্যায় পথে নেমে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন। এটা খুব দরকার ছিল। বিশেষত কলেজ মোড়ে খুবই যানজট হয়। যদিও তাঁরা সরে যেতেই যে-কে-সেই অবস্থা। পাশাপাশি, এই এলাকায় যত্রতত্র বাস দাঁড়িয়ে পড়ে যাত্রী ওঠানো-নামানোর কাজ করে। তা নিয়েও ভাবতে হবে কর্তৃপক্ষকে।”
৫০ জন গ্রিন পুলিশ ও ৫০ জন সাধারণ পুলিশকর্মী নিয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল নবদিগন্ত। কিন্তু অনেকেরই প্রশ্ন, প্রশিক্ষণের আগেই তাঁদের কেন পথে নামানো হল? ন্যাসকম-এর পূর্বাঞ্চলের অধিকর্তা তথা নবদিগন্তের বোর্ড সদস্য সুপর্ণ মৈত্র বলেন, “গ্রিন পুলিশকর্মীদের প্রশিক্ষণেরই অঙ্গ হিসেবে তাঁদেরকে এই কাজে যুক্ত করা হয়েছে। তবে ট্রাফিক বিধি নিয়ে পথচারী ও গাড়িচালকদের সচেতনতা বাড়ানোর দিকে আরও জোর দিতে হবে।”
নবদিগন্ত ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপ অথরিটির এগজিকিউটিভ অফিসার বদ্রীনারায়ণ করের কথায়: “গ্রিন পুলিশ নিয়োগ করা হলে যত্রতত্র পার্কিং বন্ধ-সহ ট্রাফিক সংক্রান্ত অন্য কাজ করা যাবে।” নবদিগন্ত কর্তৃপক্ষ জানান, যত্রতত্র পার্কিং বন্ধ ছাড়াও উন্নত বহুতল পার্কিং ব্যবস্থা তৈরি সমেত একগুচ্ছ পরিকল্পনা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তা কার্যকরী করা হবে।

ছবি: অর্কপ্রভ ঘোষ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.