কত তাড়াতাড়ি সব কিছু বদলে যায়!
২০ নভেম্বর আর ৬ জানুয়ারি। সে দিন ছিল মরসুমের প্রথম ডার্বি। লাল-হলুদের মেহতাব হোসেন ছিলেন না। ছিলেন না টোলগে ওজবে। বড় ম্যাচের স্বাভাবিক নিয়মেই এগিয়ে ছিল মোহনবাগান।
আর দেড় মাস পর? পুরো উলটপুরাণ। ‘নেই’-এর যত হিসেবনিকেশ মোহন-শিবিরে। সুনীল ছেত্রী, সুরকুমার, মণীশ মৈথানিতিন বিভাগেই নেই অপরিহার্য ফুটবলাররা। সবচেয়ে বড় কথা, কোমরের চোটে হোসে ব্যারেটো ‘নামা-না নামা’র দোলাচলে। ইস্টবেঙ্গলে কার্ড-চোট কোনও সমস্যা নেই বললেই চলে। শুধু রবিন সিংহ আর নওবাকে পাচ্ছেন না মর্গ্যান। তবে হালে রবিন আর প্রথম এগারোয় থাকেন কই?
|
ইনি আজ বড় ম্যাচে বাঁশি মুখে। বিশ্বকাপ
সেমিফাইনাল খেলানো রেফারি রবসন। -নিজস্ব চিত্র |
আচমকা এমন হাওয়া বদলেও কিন্তু খুব বেশি নিশ্চিন্ত হচ্ছে না লাল-হলুদ শিবির। অধিনায়ক সঞ্জু প্রধান বললেন, “বড় ম্যাচের সঙ্গে অন্য ম্যাচের কোনও তুলনা হয় না। ব্যারেটো, সুনীলরা না খেললেও ওদের বদলে যারা খেলবে, তারাও বিপজ্জনক। নিজেকে উজাড় করার এটাই তো সেরা মঞ্চ। এই ম্যাচ খেলার জন্য প্রথম প্রথম আমরাও মুখিয়ে থাকতাম। ওরাও নিশ্চয়ই থাকবে।” সঞ্জুর আশঙ্কা ছেঁটে ফেলা যাচ্ছে না। কারণ, মোহনবাগানের অনূর্ধ্ব ১৯ ফুটবলার মণীশ ভার্গব বললেন, “এই ম্যাচটা যে করেই হোক ভাল খেলতে চাই। কোচ আমাকে খুব সাহায্য করছেন। অনেক টিপস দিচ্ছেন।”
ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের মুখে শুক্রবার একটা কথাই শোনা গেল, “বদলার ম্যাচ নয়।” তবে বহিরঙ্গের রং যাই হোক না কেন, অন্দরমহলে কিন্তু প্রতিশোধের হাওয়াই বইছে। সঞ্জু যেমন ঘুরিয়ে বললেন, “সাত পয়েন্টে এগিয়ে আছি। তবু যে করেই হোক এই ম্যাচটা জিততে চাই। সমর্থকদের জন্য।” পেন, টোলগে, ওপারার মুখে কুলুপ। হাবভাবে অবশ্য বদলার ছায়া। গাড়িতে ওঠার আগে তিনজনই বলে গেলেন, “যা বলব ম্যাচের পরে বলব। মাঠেই জবাব দেব।”
উল্টো দিকে, কলকাতা লিগ কার্যত হাতছাড়া হয়ে গেলেও ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাতে চাইছে মোহনবাগান। সুব্রত বললেন, “চোটআঘাতের সমস্যা আছে ঠিকই। তবে কে বলল আমরা পিছিয়ে?” আর ওডাফা? ঈশ্বরের হাতেই আপাতত সব ছেড়ে দিয়েছেন। মর্গ্যান যাঁকে ‘কিডন্যাপের’ হুমকি দিয়ে রেখেছেন। সুব্রত মুখে কিছু বলছেন না। কিন্তু তাঁর স্ট্র্যাটেজিতেও একজনকে ‘অপহরণের’ ছক থাকছে।
নামটা আন্দাজ করার জন্য পুরস্কার নেই। টোলগে ওজবে! |