পঁচেটের ঝিলে ফের পরিযায়ীর ঢল
বামুনিয়া পাখির ঝাঁক ফের নেমেছে বড় বামুনিয়া ও ছোট বামুনিয়া দিঘিতে।
পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর থানা এলাকার পঁচেট গ্রাম সংলগ্ন বেশ কিছু দিঘি ও পুকুরে এদের দেখা গিয়েছিল গত বছরেই। এ বারও শীত পড়তেই ‘ব্রাহ্মণী হাঁস’ নামে পরিচিত এই পরিযায়ী পাখিরা দল বেঁধে আসতে শুরু করেছে। দুই বামুনিয়া ছাড়াও রাজবাড়ির হেমসাগর দিঘিতে তাদের অবাধ বিচরণ। উল্লসিত গ্রামবাসী অবশ্য পাখিদের নিরাপত্তা নিয়ে খানিকটা চিন্তিতও। শিকারি এবং অতি উৎসাহীদের হাত থেকে পাখিদের বাঁচাতে নজরদারি চালাচ্ছেন তাঁরা। এ বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য উদ্যোগী হয়েছে স্থানীয় পঞ্চায়েতও।
সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ বরফ পড়া শুরু হলে হিমালয়ের তিব্বত, কাশ্মীর, লাদাখ প্রভৃতি এলাকার হ্রদগুলি থেকে এই পরিযায়ী পাখির দল ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তানের উষ্ণ এলাকায় চলে আসে। হাঁস প্রজাতির এই পাখিদের শরীরের বেশিরভাগ অংশ কালচে চকোলেট রঙের। ঘন কালো ডানার প্রান্তভাগে সবুজ আভা ও লেজের প্রান্তে কালচে নীল আভা থাকে। পানা বা ঝাঁঝিঁওয়ালা দিঘি, পুকুর, বিল, মজে যাওয়া নদী এদের পছন্দের জায়গা। জলজ ঘাসের বীজ, গুগলি, শামুক, কুচো পোকা, মাছ এদের প্রিয় খাদ্য। জলা জায়গায় লতা-পাতা-পালক দিয়ে এরা বাসা বানায়। এক-একটি পাখি ৬-১০টি ডিম পাড়ে। মাস খানেকের মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। শীত শেষ হলে বড় পাখিরা তাদের নিয়ে আদি ঠিকানায় ফিরে যায়। এমনিতেই শীতে পঁচেটগড় রাজবাড়ি দেখতে পর্যটকদের ভাল ভিড় হয়। গত বছর থেকে পরিযায়ী পাখিদের আগমন তাতে বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে। ভোর থেকে সন্ধে পর্যন্ত দিঘিতে পাখিদের নানান কর্মকাণ্ড পর্যটকদের নজর কাড়ছে।
ছবি: কৌশিক মিশ্র।
পঁচেট ও আশপাশের গ্রামবাসীদের মনেও বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে পরিযায়ী পাখিগুলি। পাখি সম্বন্ধে কৌতূহলী পর্যটকদের যাবতীয় জিজ্ঞাসা ক্লান্তিহীন ভাবে মিটিয়ে চলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শিকারিদের হাত থেকে পাখিদের বাঁচাতেও কড়া নজর তাঁদের। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য কৃষ্ণা শীট, শিশির জানা, অশ্বিনী দাসেরা বলেন, “বিশ্বাস করে ওরা ফের আমাদের কাছে এসেছে। তার মর্যাদা তো রাখতে হবেই। তাই কড়া পাহারা চলছে।” পঁচেটগড় রাজবাড়ির ট্রাস্টির সম্পাদক সুব্রতনন্দন দাসমহাপাত্র বলেন, “নতুন করে পঁচেটের আকর্ষণ বাড়াচ্ছে পাখিগুলি। পঞ্চায়েত ও এলাকাবাসীকে নিয়ে আমরা তাদের আপ্যায়নের চেষ্টা করছি। কিন্তু এ বার শিকারিদের নজর পড়েছে পাখিদের উপর। তাই এলাকায় সচেতনতা সভা, পাখির ছবি ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে প্রচার চালানোর জন্য প্রশাসন ও বন দফতরের কাছে আবেদন জানিয়েছি আমরা।” দিন কয়েক আগেই গ্রামবাসীরা এক পাখি শিকারিকে হাতে-নাতে ধরে ফেলেন। তার কাছ থেকে বেশ কিছু মৃত পাখি উদ্ধারও হয়। মারধর করার পরে ওই শিকারীর কাছ থেকে জরিমানাও আদায় করেছেন গ্রামবাসীরা। পূর্ব মেদিনীপুরের এক বনাধিকারিক বলেন, “বিষয়গুলি আমাদের নজরে আছে। পাখিদের প্রতি গ্রামবাসীদের এই বোধ প্রশংসনীয়। পাখিদের রক্ষা করার ব্যাপারে বন দফতর উদ্যোগী হচ্ছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.