বহু টালবাহানার পর কাল দিসপুর সচিবালয়ে মুখোমুখি বৈঠকে বসল নমনি সুবনসিরিতে বৃহৎ বাঁধ-বিরোধী মঞ্চের একটি অংশ ও মন্ত্রিসভার বাঁধ বিষয়ক বিশেষ কমিটি। বৈঠকে সঙ্কট নিরসনে কোনও সূত্র না মিললেও দু’তরফেরই অনড় মনোভাব কিছুটা শিথিল হয়েছে। কাল সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা হল কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি, আসু ও টিএমপিকে প্রতিনিধি দলের। ১৪ জানুয়ারি নাগরিক সমিতি ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরবর্তী পর্যায়ের বৈঠক হবে। ২০ জানুয়ারি বাঁধ-বিরোধী অন্য সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনার দিন নির্ধারিত হয়েছে। আলোচনা শেষ না হাওয়া অবধি এনএইচপিসিকে বাঁধের কাজ বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছে আসু। আর কৃষক নেতা অখিল গগৈ জানান, সরকারের সদিচ্ছায় আস্থা রেখে তাঁরা এখনই অর্থনৈতিক অবরোধের পথে হাঁটছেন না। শুধু, এনএইচপিসি প্রকল্পের বিরুদ্ধে অবরোধ চলবে। |
উল্লেখ্য, ১৬ ডিসেম্বর থেকে নমনি সুবনসিরিতে ২০০০ মেগাওয়াট বৃহৎ নদীবাঁধ গড়ার বিরোধিতায় কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি, আসু, টিএমপিকে, তাই-আহোম ছাত্র সংস্থা, এজেওয়াইসিপি, আমলু, আদসু-সহ ২০টি সংগঠন ৫২ নম্বর জাতীয় সড়কে অবরোধ চালাচ্ছে। সবগুলি সংগঠন মিলে গঠিত হয়েছে বাঁধ-বিরোধী মঞ্চ।
আলোচনা সেরে কাল সচিবালয় থেকে বেরিয়ে কৃষক নেতা অখিল গগৈ বলেন, “সমাধান কিছু হয়নি। তবে, আলোচনা প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানাই। আমাদের বক্তব্য সরকার শুনেছে। ভূকম্পপ্রবণ গেরুকামুখে আমরা নদীবাঁধ গড়তে দেব না, সে কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছি।”
আসু ও টিএমপিকে নেতারা সরকারের সঙ্গে বৈঠক সেরে জানান, আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে। তাঁরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন, যতদিন আলোচনাপর্ব চলবে, এনএইচপিসিকে কাজ বন্ধ রাখতে হবে। বিদ্যুৎমন্ত্রী প্রদ্যোৎ বরদলৈ অবশ্য এই প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়ে বলেন, “সরকার, এনএইচপিসিকে কাজ বন্ধ রাখতে বলতে পারে না।” এরপর আসু, এনএইচপিসি কর্তৃপক্ষের কাছেই আলোচনাপর্বকে সম্মান জানিয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার অনুরোধ জানিয়েছে। বাঁধ-বিরোধীরা, নিম্ন অববাহিকার জীববৈচিত্র্য ও ভূপ্রকৃতির উপরে বাঁধের প্রভাব নিয়ে বিশদ সমীক্ষা চালানোর দাবি জানান। সরকার সেই দাবি মেনে নিয়েছে।
এর মধ্যেই অরুণাচলের দইমুখে,কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীতে শ’খানেক তৈলবাহী ট্যাঙ্কার জড়ো হওয়ায় উত্তেজনা ছড়ায়। বাঁধ বিরোধী মঞ্চ ঘোষণা করে, কোনও পরিস্থিতেই তেলের ট্যাঙ্কার, টারবাইন, ট্রান্সফর্মার বা কোনও যন্ত্র লখিমপুরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। |