নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের আয়ের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেই এ বিষয়ে নতুন নীতি নির্ধারণের পথে হাঁটতে চায় রাজ্য। যাতে বাস্তবের মাটিতে পা রেখে চলতে পারে ওই নয়া তথ্যপ্রযুক্তি নীতি। শুক্রবার সেই লক্ষ্যমাত্রার কথা জানিয়েও দিলেন রাজ্যের শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর ঘোষণা, রাজ্য সরকার চায়, সারা দেশে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি যে অঙ্ক আয় করে, ২০১৫ সালের মধ্যে তার ২৫% যেন হয় পশ্চিমবঙ্গেই। সুতরাং এখন অপেক্ষা পূর্ণাঙ্গ তথ্যপ্রযুক্তি নীতির।
শুক্রবার বানতলায় মার্কিন বহুজাতিক কগনিজ্যান্ট টোকনোলজির তথ্যপ্রযুক্তি পার্কের দ্বিতীয় পর্যায়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন পার্থবাবু। এই অনুষ্ঠানে তাঁর দাবি, “২০১৫-এর মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে প্রথম তিন রাজ্যের তালিকায় জায়গা পাবে পশ্চিমবঙ্গ। ওই সময়ের মধ্যে দেশে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির আয়ের ২৫% এ রাজ্যের দখলে আনার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছি।” বর্তমানে রাজ্যের ঝুলিতে তা রয়েছে ২.৬%।
রাজ্যে লগ্নি করতে সম্প্রতি জমি নিয়েছে ইনফোসিস এবং উইপ্রো। এ দিন আবার নিজেদের তথ্যপ্রযুক্তি পার্কের দ্বিতীয় পর্যায়ের শিলান্যাস করল কগনিজ্যান্ট। ২০০ কোটি টাকা লগ্নিতে সাড়ে ৫ লক্ষ বর্গ ফুটের এই পরিকাঠামো তৈরি হলে সেখানে কাজ করবেন প্রায় ৫ হাজার কর্মী। ২০১৫-এর মধ্যে রাজ্য কী ভাবে প্রথম তিনে উঠে আসবে তা বলতে গিয়ে এ দিন এই তিন সংস্থার উদাহরণই টেনে এনেছেন পার্থবাবু।
দেশে প্রথম তিনের মধ্যে আসার লক্ষ্যের কথা ২০১০-এ ঘোষণা করেছিল আগের বাম সরকারও। কিন্তু স্বপ্ন পূরণ হয়নি। এ বার উইপ্রো, ইনফোসিস, কগনিজ্যান্টের মতো সংস্থার নয়া প্রকল্পের উপর আস্থা রেখেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ফের সেই লক্ষ্য ছোঁয়ার কথা ভাবছে বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের।
প্রসঙ্গত, ২০০৭-এ ২০ একর জমি কিনে রাজ্যে তাদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরি শুরু করে কগনিজ্যান্ট। কিন্তু ক্যাম্পাস চালু করার ক্ষেত্রে সমস্যা ছিল চর্ম নগরীর দূষণ। তবে শেষ পর্যন্ত ২০১০-এ প্রথম পর্যায়ের পরিকাঠামো চালু করে সংস্থা। ভারতে সংস্থার প্রধান আর চন্দ্রশেখরন বলেন, “কলকাতা আমাদের আন্তর্জাতিক সম্প্রসারণ পরিকল্পনার অঙ্গ।”
জেলাতেও যে তাঁরা তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের লগ্নি ছড়িয়ে দিতে চান, এ দিন তা ফের মনে করিয়ে দিয়েছেন পার্থবাবু। তাঁর দাবি, এ জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে ১৩টি তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক তৈরির জায়গা। ফেব্রুয়ারির মধ্যে সেগুলির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হবে। কগনিজ্যান্টকেও এ দিন জেলা-শহরে লগ্নি করতে অনুরোধ করেন মন্ত্রী। কিন্তু সরাসরি কিছু না জানালেও, পরিকাঠামোর অভাব সে ক্ষেত্রে বাধা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে তারা। |