অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস ধর্মঘট |
দুর্ঘটনায় মৃত্যু, বাস ভাঙচুর সিউড়িতে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • সিউড়ি |
বাস থেকে নামার সময়ে চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক আদিবাসী মহিলার। এর পরে স্থানীয় বাসিন্দারা ওই বাসে ভাঙচুর চালান। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে সিউড়ি বাসস্ট্যান্ডে ঢোকার আগে নন্দগোপাল মোড়ের কাছে। তবে ওই মহিলার পরিচয় জানা যায়নি।
এ দিকে, বাস ভাঙচুরের ঘটনায় কিছুক্ষণের জন্য সিউড়ি থেকে যাতায়াতকারী সমস্ত রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বাস মালিক ও কর্মীদের দাবি, অভিলম্বে ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করতে হবে এবং রাস্তার উপরে বসা দোকানগুলিকে সরাতে হবে। এই সব দাবিতে সন্ধ্যায় তাঁরা মিছিল করে জেলাশাসকের দফতরে যান। |
ভাঙচুরের পরে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। |
অন্য দিকে, জেলা আইএনটিউসির নেতা মৃণাল বসু বলেন, “বিকেলে বাসমালিকদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়- বাসস্ট্যান্ডের ভিতর থেকে অস্থায়ী দোকান, স্থায়া দোকানের বর্ধিত চালা, বিভিন্ন জায়গায় ফল বিক্রেতাদের উৎপাত-সহ ছোট যান ঢোকা বন্ধ করতে হবে। শহরের সমস্ত রাস্তা দখলমুক্ত করতে হবে। এ দিনের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য আজ শনিবার থেকে সিউড়ির উপর দিয়ে চলা বাস বন্ধ থাকবে। নিরাপত্তার স্বার্থে বাসবন্ধ রাখতে হয়েছে।” জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “বাসবন্ধের ব্যাপারে আলোচনা শুরু করেছি। আজ, মহকুমাশাসক বাস মালিক কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আশা করি সমস্যা মিটে যাবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাসটি সাঁইথিয়া থেকে দিকে আসছিল। সিউড়ি বাসস্ট্যান্ডে ঢোকার আগে ওই মহিলা নন্দগোপাল মোড়ে নামতে গিয়ে ওই বাসে পিষ্ট হন। তখন স্থানীয় বাসিন্দারা বাসটিকে আটকে ভাঙচুর চালান। কোনও ক্রমে চালক ও বাসকর্মীরা পালিয়ে বেঁচে যান। পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ডেপুটি পুলিশ সুপার (শৃঙ্খলা ও প্রশিক্ষণ) প্রশান্তকুমার চৌধুরী, সিউড়ি থানার আইসি অসিত ভট্টাচার্য। স্থানীয় বাসিন্দা ও যাত্রীদের অভিযোগ, স্টপেজ না থাকলেও রাস্তায় অনেক সময় বাস থামিয়ে যাত্রী তোলায় কিছুটা সময় লাগে। ওই অতিরিক্ত সময় পূরণ করার জন্য গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেন চালকেরা। বিশেষ করে স্ট্যান্ডে ঢোকার মুখে গতি বেশি থাকে।
বাসমালিক সমিতির সম্পাদক সুভাশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, “যে ভাবেই হোক ওই মহিলা বাস থেকে নামতে গিয়ে পড়ে যান। এই ঘটনায় বাসকর্মীদের দোষ নেই। অহেতুক কিছু লোক বাসে ভাঙচুর করলেন।” বাসচালক শেখ মহসিন, শেখ রিন্টু, বিনয় মুখোপাধ্যায়রা বলেন, “কোনও কিছু হলেই এক শ্রেণির লোক বাসের উপরে চড়াও হন।” তাঁদের দাবি, “দিন দিন যে ভাবে রাস্তা ও বাসস্ট্যান্ডের ভিতরের জায়গা দখল হয়ে যাচ্ছে তাতে দুর্ঘটনা আরও বাড়বে।” পুলিশ বাসটিকে আটক করেছে। |