নান্দাল গ্রামে সিপিএমের হামলায় আট তৃণমূল কর্মী আহত হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। শুক্রবার বিকেলের মধ্যেই সরিয়ে দেওয়া হল রায়না থানার ওসি সুজিত দাশগুপ্তকে। বর্ধমান থানার এসআই রাকেশ সিংহকে তাঁর জায়গায় পাঠানো হয়েছে।
আহত আট জনকে প্রথমে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। পরে সেখান থেকে দু’জনকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়। হামলার অভিযোগে পুলিশ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে। আটক করা হয়েছে আরও পাঁচ জনকে। তবে তাদের রাজনৈতিক পরিচয় পুলিশ জানায়নি।
এ দিন বর্ধমান মেডিক্যালে আহতদের দেখতে যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। পরে তিনি বলেন, “থানার ভালমন্দের সমস্ত দায়িত্ব ওসি-র। সেই দায়িত্ব পালন করতে না পারলে তো সরে যেতেই হবে।” বর্ধমানের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “অনেকগুলি ঘটনায় ওসি সদর্থক ভূমিকা নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। গতকালের ঘটনা তার একটি। তাই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল।” |
গত বুধবার কৃষি বন্ধের সমর্থনে নান্দাল গ্রামে মিছিল বের করেছিল সিপিএম। রায়নার তৃণমূল নেতা বামদেব মণ্ডলের অভিযোগ, “মিছিল থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে কুরুচিকর স্লোগান দেওয়া হচ্ছিল। আমাদের সমর্থকেরা প্রতিবাদ করলে তাঁদের হুমকি দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁরা রায়না থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সন্ধ্যায় তাঁরা যখন গ্রামে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বসে, সিপিএমের ২৫-৩০ জন লোক লাঠি-টাঙ্গি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। অনেকে আহত হয়েছেন। বারবার থানায় ফোন করা হলেও পুলিশ আসেনি।”
রায়না থানার ‘নিষ্ক্রিয়তা’র অভিযোগ কার্যত মেনে নিয়ে পুলিশ সুপার জানান, তিনিই রাতে ফোন করে ওসি-কে ঘটনাস্থলে যেতে বলেন। তার আগে তিনি যাননি। সিপিএম অবশ্য হামলার মানতে চায়নি। উল্টে শুক্রবার সন্ধ্যায় তৃণমূল তাঁর গাড়িতে হামলা চালিয়েছে বলে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন দলের জেলা কমিটির সদস্য শ্যামাপ্রসাদ পাল। তাঁর অভিযোগ, কামারগোড়িয়া গ্রামে বাড়ি ফেরার পথে তাঁর গাড়ির চালককে মারধর করা হয়। তিনিও নিগৃহীত হন। তৃণমূলের বর্ধমান জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথ অবশ্য দাবি করেন, “তৃণমূলের উপরে হামলার ঘটনা থেকে দৃষ্টি সরাতে এখন নাটক করছে সিপিএম।” মুকুলবাবুর দাবি, “গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ সিপিএমের চুরির জায়গা। আগামী নির্বাচনে এগুলির দখল রাখতে তারা পরিকল্পনা মাফিক রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাস চালাচ্ছে। সুকৌশলে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে। তৃণমূল রাজনৈতিক ভাবেই এ সবের মোকাবিলা করবে।”
|