নিলামে জোড়া কাঠ-চোর
মাল ধরা পড়া কাঠ পাচারে অভিযুক্ত ‘দুই চোর’কে নিলামে চড়াল বন দফতর। মাথা পিছু ১০ হাজার টাকা করে শুরুতে দাম উঠলেও শেষ পর্যন্ত সর্বোচ্চ দর দাঁড়াল ১৫ হাজার। সব মিলিয়ে ৩০ হাজার টাকায় ওই দুই চোরকে কিনলেন ডুয়ার্সের কুমারগ্রাম থানার পূর্ব শালবাড়ি বাসিন্দা অনিল চন্দ্র রায়। হাসিমুখে দুই চোরকে সৎপথে রোজগারের পথ দেখানোর পরিকল্পনাও তিনি ঠিক করে ফেলেছেন। বৃহস্পতিবার এই চোর নিলামের ঘটনা নিয়ে রীতিমত তোলপাড় পড়েছে রাজ্যের বন প্রশাসনে। বনকর্তা, কর্মীদের একাংশের দাবি, উত্তরবঙ্গে তো বটেই গোটা রাজ্যে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি। চোর দু’টি আসলে দুটি পূর্ণ বয়স্ক মোষ! মাস খানেক আগে ডুয়ার্সের বক্সা (পূর্ব) ডিভিশনের ভলকা রোডের জঙ্গলে কাঠ পাচারের চেষ্টা করছিল দুষ্কৃতীরা। মোষ দুটির পিঠে গাছের গুড়ি বাধা ছিল। বনকর্মীরা পাচারের চেষ্টার সময় মোষ দুটিকে ধরেন। কাঠের গুড়িও উদ্ধার হয়। তার পর থেকে বারবিশার একটি খোঁয়াড়ে ঠাঁই হয়েছিল দু’টির। বন দফতরের ডাকা গণশুনানিতেও কেউ তাদের মালিকানা দাবি করেনি। ঊর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষের অনুমতি নিয়ে এদিন ভলকা রেঞ্জ অফিস চত্বরে নিলাম ডাকা হয়। উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) রবীন্দ্র কৃষ্ণমূর্তি বলেন, “কাঠ পাচারে পরিবহণ কাজে গাড়ি, নৌকা বাজেয়াপ্ত করে আগে নিলাম হয়েছে।
ছবি: রাজু সাহা।
আইন অনুসারে পরিবহণে ব্যবহৃত সবই বাজেয়াপ্ত করা হয়। এটাই সেই ভাবে নিলাম হয়েছে। এতে পাচারকারীরা মোষ ব্যবহারের ঝুঁকির বার্তাটাও পেয়েছে যাবে।” বক্সার ক্ষেত্র অধিকর্তা রবীন্দ্র প্রতাপ সাইনি বলেন, “কাঠ-সহ দড়ি বাধা অবস্থায় মোষ দুটিকে ধরা হয়েছিল। এদিন সমস্ত নিয়ম মেনেই নিলাম ডাকেন।” অসমের পাচারকারী একটি দল মোষ দুটি পরিবহণের কাজে এনেছিল বলে তদন্তের পর জানা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন বক্সা (পূর্ব) ডিভিশনের ডেপুটি ফিল্ড ডাইরেক্টর ভাস্কর জেভি। বক্সা (পূর্ব) ডিভিশনের চ্যাংমারি বিটের ভলকা রেঞ্জের জঙ্গল পার হয়ে কিছুটা এগোলেই খোরা নদী। তার পরেই অসমের কোকরাঝাড় জেলার কচুগাঁও এলাকা। ওই জঙ্গলে কাট পাচারকারীরা ঢুকে কাঠ কেটে পরে তা মোষের মাধ্যমে পাচার করে। তবে এর আগে ধরা পড়ার ঘটনা ঘটেনি। ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট সার্ভিস এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের উত্তরবঙ্গের সম্পাদক নব্যেন্দু কর বলেন, “অসমের দুষ্কৃতীরা দীর্ঘদিন ধরে মোষকে কাজে লাগিয়ে কাজ কাঠ পাচার করেছ। নতুন সরকারের আমলে নজরদারি বাড়তেই এবার মোষ ধরা পড়েছে। রাজ্যে বন দফতরের মোষ নিলামের এটাই প্রথম ঘটনা।” নিলামের সময় কোনও আওয়াজ না করলেও নতুন মালিক দেখেই জোরে কয়েকবার চিৎকার করে ওঠেন সন্দেহভাজন ওই কাঠ চোর মোষেরা। তাদের নতুন মালিক অনিল চন্দ্র রায় বলেন, “মনে হচ্ছে বাধ্য হয়েই ওরা অপরাধ চক্রের সঙ্গে চলে যায়। দুটিকে দিয়ে গাড়ি তৈরির পাশাপাশি চাষবাসের কাজে লাগাব ভাবছি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.