স্কুলের দরজায় তালা বন্ধ থাকায় মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা দেওয়া হল না ছাত্রীদের। বন্ধ রইল স্কুলের বাৎসরিক পরীক্ষাও। উত্তর ২৪ পরগনার ইটিন্ডা গার্লস হাইস্কুলে বুধবার এমন ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ প্রধান শিক্ষিকা স্কুলে না আসায় তালা খোলা সম্ভব হয়নি। অভিভাবক-ছাত্রীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পরে বিডিও অফিসের প্রতিনিধি ও পুলিশের উপস্থিতিতে তালা ভাঙা হলেও অনেক দেরি হয়ে যায়। তার জেরে সমস্ত পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে জানান হয়েছে আজ, শুক্রবার স্কুলের বাৎসরিক পরীক্ষা নির্দিষ্ট সময়ে শুরু হবে। পরবর্তী সময়ে স্কুলের টেস্ট পরীক্ষার দিন জানান হবে।
পুলিশ ও স্কুল সুত্রে জানা গিয়েছে, ইটিন্ডার স্কুলটিতে ছাত্রী সংখ্যা ৩০০-র কাছাকাছি। এ দিন স্কুলে নবম, অষ্টম ও সপ্তম শ্রেণির বাৎসরিক অঙ্ক পরীক্ষা। মাধ্যমিকের ছাত্রীদের জীবন বিজ্ঞানের টেস্ট পরীক্ষাও ছিল। বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ ছাত্রী ও শিক্ষিকার এসে দেখেন স্কুলে তালা ঝুলছে। স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির দুই কর্মী অসুস্থতার কারণে ছুটিতে আছেন। সে কারণে মঙ্গলবার প্রধান শিক্ষিকা করবী ঘোষ সরকার পরিচিত এক জনকে স্কুল খোলা ও বন্ধ করার দায়িত্ব দেন। সেই ব্যক্তির কাছেই চাবি রয়েছে। পরীক্ষার সময় হয়ে গেলেও প্রধান শিক্ষিকা না এলে চিন্তায় পড়েন ছাত্রী ও শিক্ষিকারা। অভিভাবকেরাও এসেছেন। যে বাড়িতে চাবি রয়েছে শিক্ষিকারা সেখানে যান। কিন্তু প্রধান শিক্ষিকা করবীদেবী না আসায় তাঁরা চাবি দিতে চাননি। শিক্ষিকারা জানিয়েছেন, দরজা খোলার কোনও উপায় না দেখে প্রধান শিক্ষিকাকে ফোন করলে তিনি তালা ভাঙার পরামর্শ দেন। স্কুলের পরিচালন সম্পাদক একই পরামর্শ দেন। তবে শিক্ষিকারা সেই পরামর্শ শোনেননি। তাঁরা বসিরহাট মহকুমার অতিরিক্ত স্কুল পরিদর্শকের দফতরে যান। সেখান থেকে যান বসিরহাট থানায়। স্কুলে তালা বন্ধ থাকার কারণে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ দায়ের করা হয়। |
পুলিশ জানিয়েছে, স্কুলে পরীক্ষার দিনে তালা বন্ধ থাকায় ওই এলাকায় পরিস্থিতি উতপ্ত হয়ে ওঠে। অভিভাবক ও ছাত্রীরা বিক্ষোভ শুরু করে। খবর পেয়ে তালা ভাঙার সরঞ্জাম নিয়ে পুলিশ স্কুলে যায়। বিডিও অফিস থেকেও প্রতিনিধি পাঠানো হয়। সকলের উপস্থিতিতে দুপুর ১টা নাগাদ পাঁচটি দরজার তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন সকলে। পরীক্ষা শুরু হতে অনেক দেরি হওয়ায় মহকুমা শিক্ষা দফতর থেকে মাধ্যমিক টেস্ট পরীক্ষাটি স্থগিত রাখতে বলা হয়। স্কুলের শিক্ষিকা অর্চনা ভট্টাচার্য, চন্দ্রানী মণ্ডলের বক্তব্য, “প্রধান শিক্ষিকাকে ফোন করলে তিনি অসুস্থ জানিয়ে তালা ভাঙার পরামর্শ দেন। স্কুলের পরিচালন সম্পাদক একই কথা বলেন। বিষয়টি আমরা বসিরহাট মহকুমার অতিরিক্ত স্কুল পরিদর্শককে জানাই। সেখান থেকে যান বসিরহাট থানাতে জানাতে বলা হয়।” শিক্ষিকাদের একাংশ জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষিকা বসিরহাটে ছিলেন। কেন এলেন না তা বোঝা যাচ্ছে না। অনেক বার চেষ্টা করেও প্রধান শিক্ষিকা করবী ঘোষ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। |