সর্বশিক্ষার টাকায় অসংগতি, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকা’ (১১-১০) সংবাদটির প্রতি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
প্রতিবেদক সুশান্ত বণিক কোনও রকম খোঁজখবর না-নিয়েই এবং সরকারি নিয়মকানুন সম্বন্ধে যথেষ্ট অবহিত না-হয়েই বিষয়টি আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশ করেছেন। গত ১০ অক্টোবর দুপুর পৌনে দুটো নাগাদ আপনাদের প্রতিবেদক হঠাৎ আমার মোবাইল ফোনে ফোন করেন। ১ মিনিট ৭ সেকেন্ড (আমার মোবাইলের কল লিস্টের সময় অনুযায়ী) কথা বলে ঠিক পরের দিনই আনন্দবাজার পত্রিকার ‘আসানসোল-দুর্গাপুর’ পৃষ্ঠায় তা প্রকাশ করেন। চিত্তরঞ্জন চক্রের স্কুল পরিদর্শক মাননীয় উত্তম মণ্ডলের কিছু বিবৃতি তিনি প্রদর্শন করেন। যদিও উত্তম মণ্ডল মহাশয়কে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং বলেন, তিনি কোনও প্রতিবেদককে এ রূপ কোনও বিবৃতি দেননি।
আমার নামটি উনি ঠিক লেখেননি। উনি লিখেছেন, সুমিতা দেব। দ্বিতীয়ত, সর্বশিক্ষা অভিযানের প্রাপ্ত ৪৫০০০ টাকার সম্পূর্ণ অডিট হয়েছিল ২০-৬-২০১১ এবং অডিট হয়েছিল মাননীয় অডিটর জেনারেল (পশ্চিমবঙ্গ) প্রেরিত সদস্যদের দ্বারা এবং তাঁরা সন্তোষজনক রিপোর্ট পেশ করেছেন যা সরকারি নথি অর্থাৎ ক্যাশ বুক-এ নথিভুক্ত করা আছে।
সুমিতা বেজ। প্রধান শিক্ষিকা, পূর্ব সুন্দর পাহাড়ী নিম্ন বুনিয়াদী বিদ্যালয়, চিত্তরঞ্জন
প্রতিবেদকের উত্তর: সুমিতা বেজের নামের পদবি আমি ভুল লিখেছি এই অভিযোগ সত্যি। এটি অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি। এর জন্য দুঃখিত।
শ্রীমতী বেজ ঠিক কোন সরকারি নিয়মকানুন সম্বন্ধে অবহিত হওয়ার কথা বলেছেন তা স্পষ্ট বলেননি। তবুও বলছি, সর্বশিক্ষার টাকা পাওয়া এবং খরচের যে পদ্ধতি সরকার স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকাদের নির্দিষ্ট করে দিয়েছে, তা পুরোটাই চিত্তরঞ্জন শিক্ষাচক্রের সহকারী স্কুুল পরিদর্শক উত্তম মণ্ডল যেমনটি বলেছেন তেমনই লেখা হয়েছে। তাঁর আরও অভিযোগ, সহকারী স্কুল পরিদর্শক উত্তম মণ্ডলের যে বিবৃতি ছাপা হয়েছে, তা তিনি এই প্রতিবেদককে দেননি। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অসত্য। এ বিষয়ে উত্তমবাবুর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “আমি সুমিতাদেবীকে এ রকম কিছুই বলিনি”।
আমার প্রশ্নের উত্তরে উত্তমবাবু বলেন, “আমি জানি, অডিটর জেনারেল ২০০৯-’১০ অর্থবর্ষের অডিট করেছেন। সুমিতা বেজের বিরুদ্ধে যে খরচের অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছে তার সঙ্গে ওই অর্থবর্ষের খরচের কোনও সম্পর্ক নেই। এটি আলাদা।”
উত্তমবাবু আরও দাবি করেছেন যে, এমন কথা কোথাও বলা নেই অডিটর জেনারেল অডিট করে সন্তোষজনক লিখে দিলে বিভাগীয় তদন্ত বা অডিট করা যাবে না। উত্তমবাবু বলেন, “অসঙ্গতি পেয়েছি। ওঁকে কারণ দর্শানোর চিঠিও দিয়েছি। উনি তার উত্তর দিয়েছেন। আমরা সন্তুষ্ট হইনি। পুরো বিষয়টি রিপোর্ট আকারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”
|
আনন্দবাজারে প্রকাশিত পরিণত মমতার জোট না-ভাঙার (১০-১১) খবরে একটুও বিস্মিত হইনি। কেননা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও দিন অপরিণত ছিলেন না। পেট্রোপণ্যের দাম কেন্দ্র প্রতি সপ্তাহে বাড়ালেও সস্তা জনপ্রিয়তার লোভে উনি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জাঁতাকলে পড়তে চাইবেন না।
মমতা কেন্দ্র সরকার থেকে সমর্থন তুলে নিলে তিনটে ঘটনা ঘটবে।
এক) কংগ্রেস বামদের সমর্থন চাইবে, বামেরা দেবেও। সামনে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন, মুলায়ম-মায়াবতীর সমর্থন কংগ্রেস নেবে না। মায়াবতীর চার জন মন্ত্রী দুর্নীতিতে অভিযুক্ত, অমর সিংহহীন মুলায়ম দিশেহারা, ফলে ওই রাজ্যে দু’দলেরই ভবিষ্যৎ খারাপ।
দুই) বামেদের সমর্থনে চললে কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গকে অর্থ সাহায্য করবে না। বাধবে সংঘাত। তৃণমূল বনাম সি পি এম-কংগ্রেস ব্যাপক সংঘর্ষ হবে। ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্র আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণ দেখিয়ে মমতার সরকার ভেঙেও দিতে পারে।
তিন) কংগ্রেসের সঙ্গে বিচ্ছেদ হলে জোটহীন মমতার ভোটের শতাংশ কমে যাবে।
মমতা এ সব জানেন।
কমল চৌধুরী। কলকাতা-১৪০
|
মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র সংকটে |
রাজ্যে তিন কিমির বেশি দূরত্বের যে সব অঞ্চলে মাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই সেখানে তৈরি করা হয়েছিল মাধ্যমিক বিদ্যালয় নয়, মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র বা এম এস কে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সমান্তরাল পঞ্চায়েতের অধীনে আর একটি পর্ষদ গঠনের জন্য সচেষ্ট ছিল বামফ্রন্ট সরকার। বর্তমানে সারা রাজ্যে প্রায় ১৯০০ এম এস কে আছে। ছাত্র-ছাত্রী প্রায় পঞ্চাশ হাজার। শিক্ষক নয়, সম্প্রসারকের সংখ্যা প্রায় বারো হাজার। এঁদের বেতন নেই, আছে সাম্মানিক। তা-ও সম্পূর্ণ অনিয়মিত। পুজো বা ঈদের আগে এঁদের ভাগ্যে বকেয়া দু’মাসের সাম্মানিক পর্যন্ত জোটেনি। এঁদের যোগ্যতা চল্লিশোর্ধ্ব, কমপক্ষে স্নাতক।
পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পঞ্চাশ হাজার ছাত্র-ছাত্রী। এদের পঠন-পাঠনের মান নিম্নমানের। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সিলেবাস অনুযায়ী পড়ানো হয়। যেহেতু সম্প্রসারক নিয়োগের মাপকাঠি হল চল্লিশোর্ধ্ব স্নাতক তাই যোগ্যতা অপেক্ষা চল্লিশোর্ধ্ব বেকার স্নাতকদের কর্মসংস্থানই ছিল লক্ষ্য। অভিযোগ, নিয়োগ হয়েছে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বিচারে। এদের প্রশিক্ষণের কোনও ব্যবস্থা নেই। প্রতিটি কেন্দ্রে বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক যথেষ্ট না-থাকায় পঠন-পাঠনের হাল খুবই খারাপ। এখান থেকে অষ্টম-উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীদের অন্য মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলি নিতে চায় না।
প্রধানত গ্রামের গরিব ও পিছিয়ে পড়া অংশের পরিবারগুলিই এই কেন্দ্রে ছেলেমেয়েদের আনেন। ফলে, পিছিয়ে পড়ারা আরও পিছিয়ে পড়ছে। কোনও পরিকাঠামোই ভাল নয়। যদি এই সব দূরবর্তী গ্রামে মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হত, তা হলে ছাত্র-ছাত্রীরা উপকৃত হত। সম্প্রসারকরাও শিক্ষক হতে পারছে না, আর ছেলেমেয়েরাও ছাত্র-ছাত্রী হিসাবে ভবিষ্যৎ গড়তে পারছে না। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সন্দীপ সিংহ। জামাইবাটি উচ্চ বিদ্যালয়, হরিপাল, হুগলি |