বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র জুড়ে ৪টি পর্যটন ক্ষেত্র (ট্যুরিস্ট সার্কিট) তৈরির মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন বিকাশে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর মধ্যে একটি সার্কিট উত্তরবঙ্গের। পূর্ব এবং উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিকে নিয়ে গত ১৮ নভেম্বর মেঘালয়ের শিলং-এ দ্বিতীয় ইন্টারস্টেট রিজিওনাল কনফারেন্সে বিষয়টি উঠে এসেছে। দ্বাদশ যোজনা কমিশনের আওতাভুক্ত করে ওই পরিকল্পনাগুলি ‘পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ’ বা পিপিপি মডলে বাস্তবায়িত করা হবে। সম্মেলনে কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী সুবোধকান্ত সহায় ছাড়াও বিভিন্ন রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। এই ধরণের সম্মেলন উত্তর পূর্বাঞ্চলে দ্বিতীয়বার হল। আগেরবার সম্মেলনটি সিকিমে হয়েছিল। সরকারি সূত্রের খবর, কলকাতা, শান্তিনিকেতন, কামারপুকুর এবং দার্জিলিংকে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গের জন্য চারটি সার্কিট তৈরি করা হয়েছে। প্রথম সার্কিটে কলকাতাকে দিঘা, শঙ্করপুর এবং মন্দারমণির সঙ্গে যোগ করা হয়েছে। দ্বিতীয়টিতে, শান্তিনিকেতন সঙ্গে বক্রেশ্বর, মাসানজোর বাঁধ, তারাপীঠ এবং মুর্শিদাবাদকে রাখা হয়েছে। তৃতীয়টিতে, কামারপুকুরের সঙ্গে জয়রামবাটি, বিষ্ণপুর এবং মুকুটমণিপুরকে যোগ করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের সার্কিটটি গড়া হয়েছে পাহাড় এবং সমতলকে মিলিয়ে। দার্জিলিঙের সঙ্গে ডুয়ার্সের লাটাগুড়ি, গরুমারা, সামসিং, জলদাপাড়া এবং কোচবিহার যুক্ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে রাজ্য পর্যটন দফতরের তরফে কেন্দ্রের কাছে সুনির্দিষ্ট প্রকল্পও পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পিপিপি মডেল অনুসারে বিনিয়োগকারীদের আহ্বান করে সুনির্দিষ্ট প্রকল্পও জমা নেওয়ার কাজও শেষ হয়েছে। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে প্রকল্প ধরে ধরে বরাদ্দ দেবে ঠিক হয়েছে। শিলং-এর বৈঠকে সরকারি আমলা, মন্ত্রীদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদিত বিভিন্ন পর্যটন সংস্থার কর্তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। তাঁদের একজন সম্রাট সান্যাল বলেন, “গোটা রাজ্যের পর্যটন বিকাশে কেন্দ্র এবং রাজ্য উদ্যোগী হয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্প তৈরি করে বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানানো হয়েছে। কী ধরণের প্রকল্প হতে পারে তা বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। প্রকল্পগুলি রাজ্যে বাস্তবায়িত হলে রাজ্যের পর্যটনের মানচিত্র অনেকটাই বদলে যাবে।” পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, সমুদ্র, জঙ্গল, পাহাড়কে ঘিরে নানা প্রকল্পের পাশাপাশি ধার্মিক গুরুত্বপূর্ণ স্থান, ঐতিহাসিক এলাকা এবং পুরানো দুর্গ, কেল্লাকে নিয়ে স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার কেন্দ্রও গড়ার পরিকল্পনা চলছে। এ ছাড়া তাঁবু ভিত্তিক পর্যটন, গলফ কোর্স, রোপওয়ে এবং হেলিকপ্টার সার্ভিসের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। গ্রামীণ পর্যটনকে এগিয়ে নেওয়া এবং পর্যটনে যুক্ত স্থানীয় ছেলেমেয়েদের প্রশিক্ষণের উপরও রাজ্যগুলিকে জোর দেওয়ার জন্য সম্মেলনে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। |