|
|
|
|
সিপিএম নেতাদের উপরে হামলায় অভিযুক্ত তৃণমূল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
দুই জায়গায় সিপিএমের লোকজনকে মারধর ও পঞ্চায়েত অফিসে আটকে রাখার অভিযোগ উঠল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। বুধবার সন্ধ্যায় বর্ধমান থানায় স্মারকলিপি দিয়ে অবিলম্বে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার দাবি জানিয়েছে সিপিএম। তবে তৃণমূলের দাবি, জনরোষের কারণেই ওই দুই ঘটনা। তাদের কেউ জড়িত নয়।
প্রথম ঘটনাটি ঘটে বর্ধমান শহরের উপকন্ঠে দেওয়ানদিঘি সংলগ্ন এলাকায়। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য প্রদীপ তা জানান, এলাকায় বন্ধ থাকা ১০০ দিনের প্রকল্প-সহ বিভিন্ন উন্নয়নের কাজ নতুন করে চালু করার জন্য স্থানীয় খেতিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ মসিরুদ্দিন সদস্যদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরে ওই বৈঠক
|
আহত মদন কর্মকার।
নিজস্ব চিত্র। |
চলার সময়েই এক দল লোক আচমকা সেখানে ঢুকে পড়ে। প্রদীপবাবুর অভিযোগ, “তৃণমূলের দুই নেতা অশোক দত্ত ও তরুণ ঘোষ নামে দাবি করেন, ওই এলাকার সমস্ত কাজ তাঁদের দলের নিযুক্ত কমিটিই করবে। কোনও কাজ করার অধিকারই পঞ্চায়েতের নেই। কোনও সরকারি বৈঠকও ডাকা যাবে না। গোলমাল দেখে কয়েক জন পঞ্চায়েত সদস্য চলে গেলেও নতুনগ্রামের গোলাম হোসেন মল্লিক ও খাঁড়জুলির আবু সামাদ নামে দুই সদস্যকে পঞ্চায়েত ভবনে আটকে রাখে ওই হামলাকারীরা। পরে বিডিও-র কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে।” সিপিএমের অভিযোগ, হামলাকারীদের মধ্যে নতুনগ্রামে তাদের কর্মী খুনে জড়িত এবং পুলিশের খাতায় ‘ফেরার’ বলে চিহ্নিত কিছু দুষ্কৃতীও ছিল। পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। স্থানীয় তৃণমূল নেতা দেবনারায়ণ গুহ অবশ্য দাবি করেন, “প্রচুর দুর্নীতিতে জড়িত ওই গ্রাম পঞ্চায়েত। এলাকার মানুষ পঞ্চায়েতের কাজে বীতশ্রদ্ধ। তাঁরাই ওখানে ঢুকে ওঁদের বৈঠক করতে বারণ করেছিলেন। সিপিএম অহেতুক আমাদের জড়াচ্ছে।” বর্ধমান থানার আইসি স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় আবার বলেন, “চাষিরা ধানের দাম না পাওয়া নিয়ে পঞ্চায়েত অফিসে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়েছিলেন। তাতেই প্রধান-সহ সদস্যেরা ভয় পেয়ে যান। পুলিশ তাঁদের বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে। এ নিয়ে পরে আর কোনও অভিযোগও দায়ের হয়নি।”দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে ওই সন্ধ্যাতেই বর্ধমান শহরের রথতলা এলাকায়। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকার পরে গত কয়েক দিন রথতলায় সিপিএমের শাখা কার্যালয় খোলা হচ্ছিল। বর্ধমান পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর মদন কর্মকার সন্ধ্যায় কার্যালয় খুলে বসেন। সিপিএমের অভিযোগ, এর কিছু ক্ষণ পরেই কিছু লোক তাঁকে টেনে বের করে মারতে মারতে কাছে একটি মাঠে নিয়ে যায়। সেখানে লাঠি-রড দিয়ে তাঁকে পেটানো হয়। ছিনিয়ে নেওয়া হয় টাকাও। মারের চোটে মূহ্যমান হয়ে মাটিতে পড়ে থাকাতে তাঁকে মৃত ভেবে হামলাকারীরা চলে যায়। সিপিএমের বর্ধমান শহর ৩ নম্বর লোকাল কমিটির সম্পাদক তরুণ রায় ঘটনায় জড়িতদের নাম দিয়ে বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তৃণমূলের স্থানীয় নেতা খোকন দাস অবশ্য বলেন, “যত দূর জানি, সিপিএম থানায় যে অভিযোগ করেছে, তাতে বলা হয়নি যে তৃণমূলের লোকেরাই এই কাজ করেছে। আমাদের অহেতুক জড়ানো হচ্ছে।”
খোকনবাবুর আরও দাবি, “ওই এলাকায় সিপিএম এক সময়ে এতটাই অত্যাচার করেছে যে, মানুষ ওদের কার্যালয় খুলতে দিতে চায় না।” তবে সিপিএমের বর্ধমান শহর জোনাল কমিটির সম্পাদক তাপস সরকার বলেন, “হামলাকারীরা তৃণমূলেরই লোক। ওদের তাণ্ডবেই আমাদের ওই শাখা অফিসটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।” পুলিশ জানায়, তদন্ত চলছে।
মেয়েদের স্কুল খুলতে বাড়ি দিলেন গৃহবধূ নিজস্ব সংবাদদাতা, বর্ধমান: মেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার জন্য নিজের বাড়ি দান করলেন এক বধূ। কারিগরি শিক্ষা মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের কাছে পুকুর-সহ নিজের দোতলা বাড়িটি দান করেন। ওই বধূর নাম শম্পা রায়চৌধুরী। বর্ধমান শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের পিরপুকুরে এই উপলক্ষে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে তিনি জানান, পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত এই বাড়িটি গলসি থানার মোহরা গ্রামে। দীর্ঘ দিন ধরেই তাঁর পক্ষে সেখানে যাতায়াত করা সম্ভব হয় না। তিনি বলেন, “এর আগেও ১৯৯৬ সালে গলসি-২ ব্লকের তৎকালীন বিডিওকে ওই বাড়িটিকে সরকারি কোনও প্রকল্পের কাজে লাগাতে অনুরোধ করেছিলাম। সেখানে রেশম চাষ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খোলা হলেও তা বেশি দিন চলেনি। বাড়িটি খালিই পড়েছিল।” এ দিনের অনুষ্ঠানে রবিরঞ্জনবাবু বলেন, “ওই বাড়িতে যাতে দ্রুত মেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা যায় তার জন্য উদ্যোগ হবে।” স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী বিপাসা বিশ্বাস বলেন, “শম্পাদেবীর মত এমন অনেকের কাছেই অপ্রয়োজনীয় অনেক কিছুই পড়ে রয়েছে। তাঁরাও যদি সেগুলি সরকারি প্রকল্পের জন্য দান করেন তাতে সকলের ভালই হয়।” |
|
|
|
|
|