দালাল-দাপটে ভোগান্তি পরিবহণ দফতরে
দালালদের দৌরত্ম্যে কোচবিহার আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরে নানা কাজে আসা বাসিন্দাদের ভোগান্তি চরমে উঠেছে বলে অভিযোগ। কোচবিহার নাগরিক মঞ্চ সহ বিভিন্ন সংগঠন ওই অভিযোগে সরব হয়েছে। ট্রাক মালিক ও কর্মীদের একাধিক সংগঠনের তরফেও ওই দফতরের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সম্প্রতি তোলা না পেয়ে এক ট্রাক চালককে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল ওই দফতরের তিন কর্মীর বিরুদ্ধে। তা নিয়ে হইচইয়ের রেশ কাটতে না কাটতে দালাল দৌরাত্ম্যের অভিযোগ ওঠায় আঞ্চলিক পরিবহন দফতরের কর্তা থেকে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের অস্বস্তি বেড়ে গিয়েছে। জেলার এক তৃণমূল বিধায়ক ওই দফতরের কিছু কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলায় তাদের অস্বস্তি আরও বেড়েছে। কোচবিহারের তৃণমূল কংগ্রেস জেলা সভাপতি উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান, বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য জেলা দফতরের কাছে সন্তুষ্ট নন। ইতিমধ্যে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রীকে নানা অব্যবস্থার কথাও জানিয়েছেন তিনি। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “অসম, বিহারের বহু গাড়ি পারমিট ছাড়া জেলায় ঢুকছে। ওভারলোডিং করছে। আরও নানা অব্যবস্থা রয়েছে। সবই পরিবহণ মন্ত্রীকে জানিয়েছি।” কোচবিহারের জেলা পরিবহণ দফতরের আধিকারিক আফতার আহমেদ বলেন, “সরকারি ভাবে ওই সব ফর্ম সাপ্লাই নেই। ইন্টারনেটে কিংবা অফিসের কাছে জেরক্সের দোকানে তা পাওয়া যায়। অফিস চত্বরে দালালরা নেই।” কোচবিহারের জেলাশাসক মোহন গাঁধীর আশ্বাস, “কর্মীরা দালালদের কাছে যেতে বাধ্য করছেন এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব। অন্যান্য অভিযোগগুলিও খতিয়ে দেখা হবে।” ক্ষুব্ধ বাসিন্দা ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মোটর সাইকেল, গাড়ির চালকের লাইসেন্স তৈরি, গাড়ির মালিকানা বদল, লাইসেন্স নবীকরণের মতো সব কাজেই দালালদের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হতে হচ্ছে। ফলে নির্দিষ্ট টাকার অন্তত তিন গুণ বেশি খরচ হচ্ছে। কোচবিহারের দিনহাটার বাসিন্দা তথা ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় কমিটির সহকারী সম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “কয়েক দিন আগেই ওই অফিসে মোটর সাইকেলের মালিকানা বদলের কাজে গিয়েছিলাম। সরাসরি কাজের ইচ্ছেতে গিয়েও বাধ্য হয়ে তিন গুণ বেশি টাকা খরচ করে দালাল ধরে ওই কাজ করতে হয়।” কোচবিহারের হরিলাল দাস, তুফানগঞ্জের দয়াল রায়দের মতো অনেকেই নতুন লাইসেন্সের আবেদন জানাতে গিয়ে এমন হয়রানির অভিজ্ঞতায় তিতিবিরক্ত হয়ে ফিরতে বাধ্য হন। গোটা ঘটনায় ক্ষোভ বেড়েছে কোচবিহার নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চের কর্তাদের। মঞ্চের সভাপতি রাজু রায় বলেন, “সাধারণ বাসিন্দারা সরাসরি কোনও কাজ করতে চাইলে কর্মীদের বেশির ভাগই পাত্তাই দেন না। দালালদের অনেকে তো অফিসের পুরনো ফাইলপত্র পর্যন্ত ঘাটাঘাটি করেন বলে শুনেছি। সমস্ত ঘটনা নিয়ে আন্দোলনে নামার কথা ভাবছি।” শুধু দালাল দৌরাত্ম্য নয়, ওই দফতর ঘিরে আরও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। দিনহাটা মহকুমা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি বিশু ধর বলেন, “কিছুদিন আগে সমিতির উদ্যোগে কোচবিহার-দিনহাটা রুটে ৪০টি ট্রাক ওভারলোডিংয়ের অভভিযোগে আটকে দেওয়া হয়। তা থেকে সরকার প্রায় ৫ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় করে। তারপরেও ওভারলোডিং বন্ধে জেলায় চেকপোস্ট করে তল্লাশির ব্যাপারে কেউ তৎপর নন।” সিটুর কোচবিহার জেলা মোটর ট্রাক কর্মী সঙ্ঘের সম্পাদক সমীরণ চৌধুরী বলেন, “ওই অফিসে টাকা ছাড়া কাজ হয় কি না সন্দেহ।” কো-অর্ডিনেশন কমিটির জেলা সম্পাদক আশিষ গোস্বামী অবশ্য দাবি করেছেন, “ওই অফিস চত্বরে দালাল দৌরাত্ম্য নেই। সরাসরি কাজ করাতে চাইলে সমস্যা হয় না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.