হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য নির্মীয়মাণ ভবন তৈরির কাজ গত তিন বছরেও শেষ না হওয়ায় রায়গঞ্জের বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে মানসিক ওর্য়াড তৈরির কাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে থাকায় দুষ্কৃতীরা ওই নির্মীয়মাণ ভবনের দরজা, জানালার কাঠ চুরি করেছে। পরিত্যক্ত ভবনের আড়ালে মদ ও জুয়ার আড্ডা বসছে। শুধু তাই নয়, ওয়ার্ডটি তৈরি না হওয়ায় মানসিক রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দিতে পারছেন না। ফলে মানসিক রোগীদের কোনও রকম চিকিৎসা ছাড়াই বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে বিষয়টি জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরীকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, “মানসিক ওয়ার্ড তৈরির কাজ শেষ করার জন্য ৩৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হবে। খুব শীঘ্রই শূন্যপদে একজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ করা হবে।” |
রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের সুপার অরবিন্দ তান্ত্রি বলেন, “মানসিক ওয়ার্ড তৈরির কাজ শেষ না হওয়ায় রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিদিনই বহু মানসিক রোগীদের বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে রেফার করে দিতে হচ্ছে। পুরো বিষয়টি জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রীকে জানিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে আর্থিক বরাদ্দের আর্জি জানিয়েছি। হাসপাতাল চত্বরে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্যে ঠেকাতে জেলা পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।” হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৭ সালে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল চত্বরে মানসিক ওয়ার্ড তৈরির কাজ শুরু করা হয়। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে পূর্ত দফতর ওয়ার্ড তৈরির কাজ শুরু করে। প্রাথমিক ভাবে, ওই ওয়ার্ড তৈরির জন্য ৫০ লক্ষ টাকা বাজেট ধরা হয়। এক বছরে ১৫ লক্ষ টাকার কাজ করা হয়। তার পর থেকে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৮ সাল থেকে ওই অবস্থায় রয়েছে ওয়ার্ডটি। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দুষ্কৃতীরা নির্মীয়মাণ ভবনের দরজা জানালার কাঠ চুরি করে নিয়ে গিয়েছে। হাসপাতাল সুপার জানান, হাসপাতালে এক জন মানসিক রোগের চিকিৎসক রয়েছেন। ফলে বর্হিবিভাগেও রোগীগের পরিষেবা দিতে পারছেন না। উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক ওয়ার্ড তৈরির কাজ শেষ করার দাবিতে আন্দোলন করছি। অবশেষে ওয়ার্ড তৈরির কাজ শেষ করার বিষয়ে রাজ্য সরকার উদ্যোগী হওয়ায় আমরা খুশি।” জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা তিলক চৌধুরী বলেন, “বাম আমলের ব্যর্থতার একটি উদাহারণ রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের নির্মীয়মাণ মানসিক ওয়ার্ড। বিষয়টি জেনে জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী উদ্যোগ নিয়েছেন।” |