‘টাকায় টান’, পরিষেবা পঙ্গু মেডিক্যালে
 
 
ক্ষরিক অর্থেই এ হল নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর গল্প!
ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে গজ, তুলো, ব্যান্ডেজ, সিরিঞ্জ, জীবনদায়ী ওষুধ না থাকায় রোগীদের রোষের শিকার হতে হয়েছিল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারদের। নিরাপত্তার অভাব বোধ করেছিলেন বলে কর্মবিরতির পথে হেঁটেছিলেন তাঁরা। সেই ঝুঁকি নিতে চাননি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাঁরা ইমার্জেন্সিতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম রাখার চেষ্টা করছেন। পরিবর্তে শূন্য হচ্ছে ইন্ডোর, কোনও কোনও ক্ষেত্রে আউটডোরও! সেখানে অধিকাংশ ওষুধ অমিল। রোগীরা ইনসুলিন পাচ্ছেন না। ক্যানসার রোগীদের ওষুধে টান। রক্তচাপ মাপার যন্ত্র পর্যন্ত বহু সময়ে পাওয়া যাচ্ছে না। ইসিজি যন্ত্রের ক্ষেত্রেও অবস্থা তথৈবচ। অপারেশন থিয়েটারে গ্লাভ্স পাওয়া যায় না। রি-এজেন্ট কেনার টাকা বহু সময়েই অমিল হওয়ায় বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা আটকে থাকছে।
কার্ডিয়াক মনিটরের সংখ্যা বাড়ানো দরকার। কিন্তু, টাকার অভাবে তা কেনা যাচ্ছে না। তাই কার্ডিওথোরাসিক বিভাগে অস্ত্রোপচার কমে গিয়েছে। যে বিভাগের অস্ত্রোপচারের জন্য সব সময়েই অপেক্ষায় থাকা রোগীদের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে, সেখানেই পরিকাঠামোর অভাবে অস্ত্রোপচার কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। কার্ডিওথোরাসিক বিভাগের এক চিকিৎসক বলেন, “অস্ত্রোপচারের পরে কার্ডিয়াক মনিটর না থাকলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে। বেশ কিছু মনিটর খারাপ। কর্তৃপক্ষকে বারবার বলেছি। কিন্তু তাঁরা বলছেন, মনিটর কেনার টাকা নেই।”
এক-একটি কার্ডিয়াক মনিটরের দাম প্রায় চার লক্ষ টাকা। রাজ্যের অন্যতম প্রধান মেডিক্যাল কলেজে সেই টাকারও বন্দোবস্ত করা যাচ্ছে না? সুপার সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর কথায়, “যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলব।” হাসপাতালের এক প্রবীণ চিকিৎসক বলেন, “কর্তৃপক্ষেরও কিছু করার নেই। অভাবের সংসারে এক দিক ঢাকতে গিয়ে অন্য দিকটি নগ্ন হয়ে পড়ছে।”
সমস্যার উৎস কোথায়, তার খানিকটা ইঙ্গিত অবশ্য হাসপাতালের কর্তারা দিয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, আর্থিক বরাদ্দ অনিয়মিত ভাবে আসছে। এক কর্তার কথায়, “ওষুধ ও সরঞ্জাম কেনার জন্য এই হাসপাতালে চার মাস অন্তর টাকা আসে। নতুন সরকারের আমলে প্রথম চার মাসে ওষুধ ও সরঞ্জামের জন্য ৪২ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছিল। এসেছে মাত্র ৩৭ লক্ষ টাকা। তার পরের চার মাসের জন্য এসেছে ২৬ লক্ষ। চাহিদা আর প্রাপ্যের মধ্যে এতটা ফারাক থাকলে পরিষেবা বেহাল হবেই। ওষুধ ও সরঞ্জাম সরবরাহকারী সংস্থাগুলির পাওনা বাকি থাকছে, তাই তারাও মাঝেমধ্যেই জিনিসপত্র দিচ্ছে না।”
স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেছেন, “আর্থিক বরাদ্দ এমন কিছু কম নয় যে, পরিস্থিতি এমন দাঁড়াবে। কেন হচ্ছে, গলদটা কোথায়, তা খুঁজে বার করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এই ধরনের সমস্যার উৎস খুঁজতে অবিলম্বে তাঁরা একটি বৈঠক ডাকবেন বলেও সুশান্তবাবু জানান।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.