জলে গেল সামির লড়াই
মনোজদের দোষেই তিন পয়েন্ট খোয়াল বাংলা
য়েন্ট আকাশ থেকে পড়ে না, পয়েন্টকে ধরতে হয়। আর ধরতে না জানলে, পিছিয়ে পড়তে হয়!
পয়েন্ট মানে, তিন পয়েন্ট। আইসিইউ-তে ঢুকে পড়ার পরেও যা অবিশ্বাস্য ভাবে চলে এসেছিল মনোজ তিওয়ারিদের সামনে। কিন্তু টিমটা বাংলা যে! ও রকম লোপ্পা সুযোগও যে কী ভাবে ‘বাপি বাড়ি যা’ বলে মাঠের বাইরে পাঠাতে হয়, তা দেখিয়ে দিলেন মনোজরা।
ঘড়ির কাঁটা সাড়ে বারোটা ছুঁই-ছুঁই। পাটা পিচে তখন রীতিমতো আগুন ছোটাচ্ছেন বাংলার পেসার সামি আমেদ। লাঞ্চের পর-পরই একটা উইকেট তুলেছেন। খুঁজছেন আরও গোটা কয়েক। স্কোরবোর্ড দেখাচ্ছে, মধ্যপ্রদেশ ৪৬৩-৭। ক্রিজে অঙ্কিত শর্মা। তিন পয়েন্ট আসবে তিনটে উইকেট পেলে। খরচ করা যাবে ৩৪-টা রান।
হবে, না হবে না?
এবং হল না। ফিল্ডার যদি ব্যাটসম্যানের ‘বন্ধু’ হয়ে ওঠে, তা হলে হবে কী ভাবে? ওই সামি-র বলেই দু-দু’টো ক্যাচ পড়ল! অঙ্কিতের। পর-পর! ওই ৪৬৩-তেই। একবার ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে, একবার উইকেটের পিছনে। সল্টলেকের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে কর্তাদের মাথায় তখন হাত। হতাশায় মুখ ঢাকছেন সামি। কী করবেন, রঞ্জিতে এই প্রথম তাঁর পাঁচ উইকেট এল। কিন্তু কাজে তো লাগল না। ওই অঙ্কিতই ম্যাচটা নিয়ে চলে গেলেন। মধ্যপ্রদেশের ঘরে তিন পয়েন্ট। বাংলার সাকুল্যে এক।
ক্যাচ পড়েছে, ‘ওভারথ্রো’-য়ে তিনের জায়গায় সাত রান হয়েছে, কিন্তু বাংলার এই ব্যর্থতার পিছনে জঘন্য ফিল্ডিংই একমাত্র কারণ নয়। আরও আছে। এবং সেগুলো এ রকম:
এক, দিশাহীন বোলিং। রণদেব বসু বা অশোক দিন্দা নন, একমাত্র সামি আমেদ রান-আপে যাওয়ার সময় মনে হয়েছে, উইকেট আসতে পারে বলে। রণ যথারীতি ঝিমিয়ে। দিন্দা সব মিলিয়ে ১৪০ রান দিয়ে উইকেট তুললেন একটা!
দুই, মনোজের ভুলে ভরা অধিনায়কত্ব। চাপে পড়লে টিম কিছু অভিনবত্ব চায় অধিনায়কের কাছে। চায় এমন কোনও চাল, যা ঘাবড়ে দেবে বিপক্ষকে। কিন্তু মনোজের সে সব কোথায়? সেই একঘেয়ে ফর্মুলা অনুসরণ করে যাওয়া। ম্যাচের পরে সাংবাদিক সম্মেলনে কোন সাংবাদিক থাকবেন, না থাকবেন, তা নিয়ে তাঁর যতটা তৎপরতা, তার সিকিভাগও অধিনায়কত্বে দেখালে এ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট খোয়াতে হয় না। ম্যাচ দেখতে আসা বাংলার এক প্রাক্তন ক্রিকেটারই বলছিলেন, “নতুন কোনও মুভ দেখলেন? কোনও ৭+২, বা ৫+৪ ধরনের ফিল্ড প্লেসমেন্ট? সবই তো থোড়-বড়ি-খাড়া, খাড়া-বড়ি-থোড়!” ঘটনা। আরও একটা জিনিস বোঝা গেল না। উইকেটের দুই প্রান্ত থেকে মনোজ টানা বল করিয়ে গেলেন দিন্দা আর সামিকে। যাঁদের বোলিংয়ের ধরনে খুব তফাত নেই। সুইংয়ের চেয়ে গতির উপর যাঁরা জোর দেন। বাঁ-হাতি ইরেশ সাক্সেনা তো হাতেই ছিলেন। রান আটকানোর কাজটা তাঁকে দিয়ে করিয়ে উল্টো দিক থেকে আনা যেতে পারত আগুনে সামিকে।
আর তৃতীয় কারণটা বলে গেলেন বাংলা কোচ ডব্লিউ ভি রামন নিজে। ম্যাচের দিন নম্বর দুইয়ের কথা। “ওই একটা দিনের ভুলভ্রান্তিতে সব শেষ হয়ে গেল। আমাদের পরপর উইকেট গেল। ওরাও ঝটপট ১৩০ রান তুলে ফেলল ব্যাট করতে নেমে,’’ বিষণ্ণ শোনায় রামনের গলা। স্বাভাবিক। ৪৯৬-এর মধ্যে মনোজ, অরিন্দম আর সৌরভ মিলে করেছেন ৪৩৯। বাকি ৫৭ করেছেন সাত জন মিলে! সাধে রামন বলছিলেন, “ব্যাটিং, বোলিং দু’টোই জমাট করতে হবে।”
কিন্তু মুশকিল হচ্ছে বাকি প্রতিপক্ষদের কেউ মধ্যপ্রদেশ নয়। দিল্লি-তামিলনাড়ু-বরোদার মতো টিম এ বার অপেক্ষা করবে। অপেক্ষা করবেন ইউসুফ পাঠান, মুরলী বিজয়রা। ঠোঁট চাটবেন বাংলা-বধের আশায়। বেশি দূর যাওয়ার দরকার নেই। পরের প্রতিদ্বন্দ্বীকেই ধরা যাক। হরিয়ানা। মনোজদের জন্য যেখানে থাকছে সবুজ পিচ।
এই তিন পয়েন্টের জন্যই না পরে ভুগতে হয়!

বাংলা ৪৯৬ ও ১১৪-১ (পার্থসারথি ৫১ ন:আ:, সৌরভ ৪২)
মধ্যপ্রদেশ ৫৩৩ (মণীশ ১৩২, আব্বাস ৪৭, অঙ্কিত ৩১, সামি ৫-১১৬, লক্ষ্মী ১-৪৬, রণ ০-৮৩)।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.