মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে এক যুবকের নামে থানায় অভিযোগ করেছিলেন বাবা। তাঁকে ‘উদ্ধার’ করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় যুবককে। প্রাপ্তবয়স্ক ওই তরুণী অবশ্য পুলিশ ও আদালতকে জানিয়েছেন, অপহরণ তো দূরের কথা তিনি স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়েছেন। বিয়েও করেছেন ওই যুবককে। আদালত থেকে বাবার সঙ্গে বাড়ি ফেরেননি তরুণী। ‘স্বামীর’ পরিবারের লোকজনের সঙ্গে গাড়ি করে চলে যান তিনি।
ওই তরুণীর বাড়ি আরামবাগ পুর এলাকায়। তিনি এমএ পড়েন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। যাতায়াতের পথে আলাপ হয় বর্ধমানের হীরাপুর থানা এলাকার বাসিন্দা ওই যুবকের সঙ্গে। বছর খানেক ধরে তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ১২ নভেম্বর বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ওই তরুণী। আর ফেরেননি। তাঁর বাবা শহরের বড় ব্যবসায়ী। ১৩ নভেম্বর থানায় লিখিত অভিযোগে তিনি জানান, মেয়েকে অপহরণ করা নিয়ে গিয়েছে এক যুবক। মেয়েটির মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ তাঁর হদিস পায়। বর্ধমানে ছেলেটির বাড়ি থেকেই ধরে আনা হয় দু’জনকে।
রবিবার আরামবাগ মহকুমা আদালতের তোলা হলে বিচারক দু’জনের ডাক্তারি পরীক্ষার নির্দেশ দেন। যদিও ছেলে-মেয়ে দু’জনেই তাতে অসম্মতি জানান। ওই যুবককে সাত দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। মঙ্গলবার মেয়েটির গোপন জবানবন্দি নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সেশন কোর্টের বিচারক। সেই সঙ্গে তিনি আরও জানান, তরুণী প্রাপ্তবয়স্কা। যেখানে খুশি যেতে পারেন তিনি। বাপের বাড়ির লোকজনের সঙ্গে এই নিয়ে মেয়েটির খানিক ক্ষণ কথা কাটাকাটি হয়। তারপর ছেলের বাবার সঙ্গে গাড়িতে উঠে চলে যান ওই তরুণী। তাঁর কথায়, “আমরা একে অন্যকে ভালবাসি। বিয়েও করেছি।”
কিন্তু তা সত্ত্বেও পুলিশ কেন গ্রেফতার করল যুবককে?
আরামবাগের এসডিপিও আকাশ মাগারিয়া বলেন, “থানায় এফআইআর করা হয়েছিল। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই পদক্ষেপ করেছি আমরা। এ ক্ষেত্রে দু’জনকে আদালতে হাজির করানো আমাদের দায়িত্ব ছিল। আইন মোতাবেক তা-ই করা হয়েছে।” কিন্তু সে ক্ষেত্রে আদালতে বা জামিন পেলেন না কেন ওই যুবক। পুলিশ সূত্রের খবর, দুই তরুণ-তরুণী বিয়ে করেছেন বলে দাবি করলেও কেউই বিয়ের কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।
যুবকের বাবা বলেন, “দু’জনেই প্রাপ্তবয়স্ক। যা ভাল বুঝেছে তার দায়িত্ব ওদেরই নিতে হবে।” অন্য দিকে, মেয়ের বাবার বক্তব্য, “আমার মেয়েকে ভুল বুঝিয়ে নিয়ে গিয়েছিল ছেলেটি। এখনও তাকে ভুল বোঝানো হচ্ছে।” |