এ বার থেকে বাড়ি তৈরি ও ব্যবসার জন্য রাস্তায় যত্রতত্র বালি, সিমেন্ট, খোয়া ফেললেই অভিযুক্তের শাস্তি হিসেবে জেল ও জরিমানা দু’টিই হতে পারে। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এমনই কড়া পদক্ষেপ নিতে শুরু করল হাওড়া সিটি পুলিশ। পুলিশকর্তাদের দাবি, যানবাহন ও পথচারীদের অসুবিধা করে ইমারতি দ্রব্য রাখলেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন সাধারণ মানুষ। সে ক্ষেত্রে কড়া ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, সম্প্রতি লিলুয়া বড় গেট এলাকায় জি টি রোডের উপর ফুটপাথ দখল করে স্টোনচিপস্, বালি রাখার অভিযোগে বালি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন বালি ট্রাফিক গার্ডের এক অফিসার। তিনি অভিযোগে জানান, ইমারতি দ্রব্য পড়ে থাকার কারণে রাস্তা খারাপ হচ্ছে, গাড়ির গতি কমে যানজট হচ্ছে এবং দুর্ঘটনা ঘটছে। তদন্তে নেমে বালি থানার পুলিশ লিলুয়া এলাকা থেকে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। এর পরে বালি থানা এলাকায় জি টি রোডে বালি, ইট ফেলে রাখার অভিযোগে আরও তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (ট্রাফিক) অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, “অভিযোগ পেলেই তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হচ্ছে।”
হাওড়ায় পুলিশ কমিশনারেট চালু হওয়ার পর প্রথমে শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজতে ও যানজট কমাতে জোর দিয়েছিলেন পুলিশকর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, যানজট ও দুর্ঘটনার কারণগুলির একটি হল রাস্তার ধারে ফেলে রাখা বালি, খোয়ার স্তূপ। এতে রাস্তার অনেকটা অংশই দখল হয়ে সহজে যানজট হচ্ছে। চাকার ধাক্কায় বালি, খোয়া গোটা রাস্তায় ছড়িয়ে গাড়ির চাকা পিছলে দুর্ঘটনাও ঘটছে। পথচারীরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় মাঝখান দিয়ে হাঁটার কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বহুগুণ বেড়ে যাচ্ছে।
পুলিশের এই সিদ্ধান্তে খুশি হাওড়া ও বালি পুর কর্তৃপক্ষ। হাওড়ার মেয়র মমতা জয়সোয়াল বলেন, “অনেক চেষ্টা করেও রাস্তার ধারে ইমারতি দ্রব্য ফেলে রাখা বন্ধ করতে পারিনি। পুলিশ যে ব্যবস্থা নিচ্ছে সেটা খুবই ভাল।” একই রকম মন্তব্য করেন বালি পুরসভার চেয়ারম্যান অরুণাভ লাহিড়ী।
অখিলেশবাবু জানান, বালিতে কয়েক জনকে গ্রেফতারের পরেই দেখা গিয়েছে, জি টি রোডের ধারে আর কোনও ইমারতি দ্রব্য ফেলা হচ্ছে না। অল্প কিছু পড়ে থাকলেও তা চটজলদি তুলে নেওয়া হয়েছে। শুধু জি টি রোডই নয়, হাওড়া শহরের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ যানবাহন চলাচলের রাস্তায় ঠিকাদার ও ব্যবসায়ীরা ইচ্ছে মতো ইমারতি দ্রব্য স্তূপ করে রাখেন। সব রাস্তার ক্ষেত্রেই এই ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “শুধু পুলিশ নয়। সাধারণ মানুষও স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন। অভিযুক্তের নাম জানাতে না পারলেও ক্ষতি নেই। পুলিশ তদন্ত করে সেটা বার করবে।” |