ইন্ডোর স্টেডিয়াম সংস্কার নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ |
সিধু-কানু ইন্ডোর স্টেডিয়াম ঢেলে সেজেছে পুরসভা। পুরসভার দাবি, আগের থেকে অনেক আধুনিক করে গড়ে তোলা হয়েছে স্টেডিয়ামটিকে। কিন্তু সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। দুর্গাপুর ব্লক ২ যুব তৃণমূল সভাপতি দেবব্রত চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, বরাদ্দ অর্থ ও কাজে কোনও মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অবিলম্বে পুরসভার কাছে বিষয়টি নিয়ে তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। পুরসভা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মেয়র রথীন রায় জানিয়েছেন, সংস্কার কাজের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করে সেই অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। কাজও হয়েছে সেই মতোই।
দুর্গাপুরের এই ইন্ডোর স্টেডিয়ামটি গড়ে ওঠে ১৯৮৩ সালে। দীর্ঘদিন ধরে উপযুক্ত সংস্কারের অভাবে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছিল স্টেডিয়ামটি। নষ্ট হয়ে গিয়েছিল দর্শকাসন, মেঝে। পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থাও ছিল না। সমস্যা ছিল সাউন্ড সিস্টেম এবং ভিতরের বাতাস বাইরে বের করার পদ্ধতি নিয়েও। ফলে এই স্টেডিয়ামে কোনও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত বছর খানেক আগে স্টেডিয়ামটি সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা। ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয় স্টেডিয়ামের ভিতরের অংশ সংস্কারের জন্য। সেই টাকায় চার হাজার আসনের ঝকঝকে গ্যালারি, অত্যাধুনিক সাউন্ড সিস্টেম, ভিতরের গরম বাতাস বের করার উপযুক্ত যন্ত্র এবং অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য একটি স্থানান্তর যোগ্য বড় মঞ্চ গড়ে তোলা হয়। এ ছাড়া তিনশো খেলোয়াড় ও কর্মকর্তা থাকার ব্যবস্থাও গড়ে তোলা হয়। স্টেডিয়ামের বাইরের অংশের সংস্কার, সৌন্দর্যায়ন এবং পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা-সহ নানা কাজের জন্য আরও প্রায় এক কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। |
নব সাজে সজ্জিত স্টেডিয়ামের উদ্বোধনে জুন মাসের শেষ দিকে জাতীয় ও রাজ্য স্তরের ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়দের নিয়ে একটি প্রদর্শনী ম্যাচের আয়োজন করে পুরসভা। নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল স্থানীয় দুই তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায় ও নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। এমনকী, মেয়রের আমন্ত্রণে নিখিলবাবু তাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ ব্যাডমিন্টনও খেলেন। এর পরে এখন এই বিতর্ক। স্টেডিয়াম সংস্কারে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে সেই অনুযায়ী কাজ হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছে যুব তৃণমূল। দুর্গাপুর ব্লক ২ যুব তৃণমূল সভাপতি দেবব্রতবাবু বলেন, “আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, স্টেডিয়ামের কাজ উন্নত মানের হয়নি। বেশ কিছু সমস্যা রয়ে গিয়েছে। উপযুক্ত সংস্থাকে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। আর্থিক নয়ছয় হয়েছে। পুরসভার কাছে এ নিয়ে আমরা স্মারকলিপি জমা দিয়েছি।”
স্টেডিয়াম সংস্কারে কোনও আর্থিক অনিয়ম হয়েছে বলে অবশ্য মানতে চায়নি পুরসভা। পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, স্টেডিয়ামটিকে আধুনিক করে গড়ে তুলতে কী কী করা দরকার ছিল, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নেওয়া হয়েছিল উপযুক্ত আধিকারিকদের কাছ থেকে। এর পরে সেই মতোই অর্থ বরাদ্দ করা হয়। এর পরে টেন্ডার ডেকে উপযুক্ত সংস্থাকে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মেয়র রথীন রায় জানান, ইন্ডোর স্টেডিয়ামটি প্রায় নষ্ট হতে বসেছিল। সে জন্যই প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হয়। ইতিমধ্যেই স্টেডিয়ামটি ব্যবহার করা হয়েছে। তেমন কোনও ত্রুটি নজরে আসেনি। |