হারিয়ে যাওয়ার আগে...
কোথাও কারও হেলদোল নেই
বেশ কিছু দিন আগে কোনও এক সংবাদপত্র পড়ে জেনেছিলাম খবরটি। এক জার্মান সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ‘এই শতাব্দীর শেষে পৃথিবীর পাঁচটি ভাষার অবলুপ্তি ঘটবে। পশ্চিমবঙ্গের বাংলা তার মধ্যে অন্যতম প্রধান ভাষা’।
ভাবতে অবাক লাগে, আজ পর্যন্ত এই বিষয়ে কোথাও কারও কোনও রকম হেলদোল চোখে পড়েনি। ব্যক্তিগত আলাপ-আলোচনায়ও দেখেছি সবারই শীতল প্রতিক্রিয়া। প্রায় একই রকম বক্তব্য ‘হবেই তো, কী আর করা যাবে’ গোছের। কিন্তু এমন এক পরিস্থিতিতে দেশের অন্যত্র বিপরীত দৃশ্য দেখা যায়। রাজনীতিকে লাই দিয়ে দিয়ে এই রাজ্য আজ যেন সব দিকেই অপসৃয়মান। যদিও যে কোনও বিষয়ে ভবিষ্যৎবাণীর যথার্থতা সময়ই বলে।
এ বিষয়ে প্রয়াত সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় যথেষ্ট সরব ছিলেন। বিশেষ করে রাজ্যের মধ্যেই বাংলা ভাষার দুর্দশা তাঁকে খুবই বিচলিত করত। তাই তাঁকে রাস্তায় নেমেও প্রতিবাদ করতে সর্বাগ্রে দেখা যেত। তিনি কখনওই ইংরেজি বা হিন্দির বিরোধী ছিলেন না। তিনি চেয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গে ইংরেজি ও হিন্দির সঙ্গে বাংলাও চলুক সমমর্যাদা নিয়ে। এখন মনে হয়, আর তেমন কেউ নেই এমন বিষয়ে এগিয়ে আসবেন। পশ্চিমবঙ্গে ইংরেজি ও হিন্দির একটা চলতি ‘ট্রেন্ড’ চলছে। পথে-ঘাটে সর্বত্র এই ‘ট্রেন্ড’ যেন বল্গা-হরিণ। তাই আশঙ্কা হয় শতাব্দীর শেষে নয়, তার বেশ আগেই পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষার স্থান হবে জাদুঘরে। প্রশ্ন জাগে বাংলা ভাষা কী কেবল বেঁচে থাকবে বাংলাদেশে? উদ্বেগজনক পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে।
তবে আশার কথা, পশ্চিমবঙ্গেই বাঙালিরা যখন বাংলায় কথা বলতে, কিছু লিখতে এবং পড়াশোনা করতে বেকার মনে করে, তখন এটি একটি ব্যতিক্রমী খবর বটেই। সংবাদে প্রকাশ, দিল্লিতে বাংলাভাষীরা বাংলাকে সরকারি দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে আন্দোলনের পথে। হিন্দির পর বাংলা সেখানে স্থায়ী ভাবে বাসকারী সংখ্যাধিক্য মানুষের মুখের ভাষা। তাই পরিস্থিতি সেখানে যথেষ্ট অনুকূল। কর্নাটকের পর বাংলা ভাষা এ বার দিল্লির স্বীকৃতি লাভের পথে, অপার বিস্ময় বই কী!
চন্দন নাগ, শিলিগুড়ি

গান বাঁচাতে ‘অ্যাকাডেমি’
বাবা ও ঠাকুরদা ছিলেন গায়ক। কুষাণ গানে তাঁরা ছিলেন গিদাল অর্থাৎ মূল গায়ক। কামেশ্বর রায়ের সঙ্গীতশিক্ষার হাতে খড়ি তাঁর বাবার হাতে। যখন বয়স ছয় কিংবা সাত তখন ঝুমুরযাত্রার দলে গান গেয়ে সঙ্গীত সরণিতে প্রবেশ। সেই সরণি সমৃদ্ধ হয়েছে ভাওয়াইয়া, যাত্রা, কুষাণ, পালটিয়া, চোর চুন্নীলোক সঙ্গীতের এমনই সব আঙ্গিকে। গান গাওয়ার পাশাপাশি সুর দিয়েছেন, গানও লিখেছেন। এখনকার প্রতিষ্ঠিত বহু গায়ক-গায়িকা তাঁর থেকে তালিম নিয়েছেন। গ্রামোফোন থেকে কমপ্যাক্ট ডিস্ক বন্দি করেছেন নিজের কণ্ঠস্বর। জলপাইগুড়ির লক্ষ্মীরহাটের সীমানা পেরিয়ে গিয়ে গান শুনিয়ে এসেছেন সিকিম, কলকাতা-দিল্লি-পটনা-অসমে। লোকসঙ্গীতের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় তিন ডেসিমেল জমি দান করেছেন তিনি। সেই জমিতে তৈরি হয়েছে মুক্তচিন্তা লোকসঙ্গীত অ্যাকাডেমি। কামেশ্বরবাবু বলেছেন, “সাধনাটাই হারিয়ে গেছে। স্বাভাবিক ভাবে লোকগান প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে। লোকসঙ্গীতের মূল চিন্তাধারা থেকে সরে যাচ্ছি। এ ভাবে চলতে থাকলে কালের বিবর্তনে মাটির গন্ধভরা সেই সঙ্গীত হয়তো এক দিন হারিয়ে যাবে। অ্যাকাডেমির উদ্দেশ্য, উত্তরবঙ্গের এ সম্পদ সংরক্ষণ করা। অর্থের অভাবে এ কাজ করা হচ্ছে না।” কামেশ্বরবাবুর আশা, সাধারণ মানুষ উদ্যোগী হলে এ সম্পদ সংরক্ষিত হবে।
সুদীপ দত্ত, জলপাইগুড়ি
 
শীতের পরশ...
  • সম্প্রতি জলদাপাড়া জঙ্গল লাগোয়া মাদারিহাটে ছ’দিনের
    সেন্ট্রাল ডুয়ার্স ইকো ফেস্ট-এ আদিবাসী নৃত্য।

  • তাজিয়া নিয়ে মহরমের মিছিল আরামবাগ বাসস্ট্যান্ড চত্বরে।

  • উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর-কল্যাণগড় শিশু
    উৎসব কমিটির উদ্যোগে শিশুদের রাখিবন্ধন।

  • লালবাগের কুঠি ইমামবাড়া সেজে উঠেছে আলোয়।

  • রাস পূর্ণিমায় শহরে পার্শ্বনাথের শোভাযাত্রা।

  • গুরু নানকের জন্মদিবসে উদযাপনে সামিল এই খুদেও।

  • বিষ্ণুপুরে ঐতিহ্যবাহী পাঁচ দিনের রাসমেলা উপলক্ষে মেলা বসে
    কৃষ্ণগঞ্জ-লালজিউ ও মাধবগঞ্জ মদনগোপালজিউ মন্দির প্রাঙ্গণে।

  • প্রায় আড়াইশো বছরের পুরনো বেলডাঙার কার্তিক পুজোয় যোগ দিতে আসেন
    বহু মানুষ। পুজোর পরের দিন থাকে কার্তিক লড়াই। ১৫ থেকে ১৬ ফুট
    উচ্চতার প্রতিমা কাঁধে করে শহর পরিক্রমা করে তার পরে হয় বিসর্জন।

  • মহরমের তাজিয়া বেরিয়েছে পাঁচলার লায়েকপাড়ায়।

  • বালুরঘাটে বোল্লাকালীর পুজো।

  • হেমন্তের কুয়াশায় ঢাকছে জলপাইগুড়িতে।

  • বহরমপুরে ভৈরবের শোভাযাত্রা।

  • উলের পসরা রামপুরহাটে।

  • অগ্রহায়ণ মাসে হাবরার ফুলতলার মণ্ডল পাড়ায় প্রতি বছর রান্নাপুজোর
    আয়োজন করেন বাসিন্দারা। গ্রামের সমস্ত মহিলা রাস্তার দু’পাশে
    বসে রান্না করেন। দেড়শো বছর ধরে এই রীতিতে যোগ দেন
    আশপাশের আটটি গ্রামের প্রায় হাজার খানেক মহিলারা।

  • শীত পড়তেই হাজির বালাপোশের বিক্রেতারা।

—নিজস্ব চিত্র।

পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে ইতিমধ্যেই পস্তাচ্ছি আমরা। বিশ্ব উষ্ণায়নের ফল হাতেনাতে পেয়েও টনক নড়ে ক’জনের?
ব্যাতিক্রম অবশ্য আছে। আর সেই ব্যাতিক্রমী মানুষদের প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ করি আমরা। তাঁদের দলবদ্ধ অথবা ব্যক্তিগত
উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে পাঠক সমক্ষে নিয়ে আসার পরিকল্পনার শরিক হতে চাইলে আমাদের জানান নীচের ঠিকানায়

সংবাদের হাওয়াবদল
হাওয়াবদল
আনন্দবাজার পত্রিকা, ইন্টারনেট সংস্করণ
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট
কলকাতা ৭০০০০১

ই-মেল করুন haoabadal@abp.in অথবা haoabadal@gmail.com
 
রোজের আনন্দবাজারএ বারের সংখ্যাসংবাদের হাওয়াবদলআপনার রান্নাঘরস্বাদবদল চিঠিপুরনো সংস্করণ
..