২ ফাল্গুন ১৪১৮ বুধবার ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২


শীত এখনও আমাদের ছেড়ে যায়নি। ভোরের দিকের আদুরে ঘুম আরও নরম হয়ে ওঠে তার আলতো ছোঁয়ায়! কিন্তু আর বেশি দিন যে তাকে ধরে রাখা যাবে না, তারও আভাস দুপুরের উত্তাপে পাওয়া যাচ্ছে। তাই চলে যাওয়ার আগে শীতের সব্জি দিয়েই সেজে উঠুক আপনার রান্নাঘর। হোক না ‘বিকেলে ভোরের ফুল’ তবুও বেলা শেষ হওয়ার আগেই তো তার ‘সুবাস’ নেওয়া যাবে!


  কানাডা থেকে শ্রীমতি সঞ্চিতা মহান্তি (সামন্ত)
বাঁধাকপির কোপ্তা বাঁধাকপি-আলু ভাজা

উপকরণ

• বাঁধাকপি: আধখানা (ঝিরি ঝিরি করে কাটা) • আলু: ২টো (সেদ্ধ করা)
• জিরে: ১ চা চামচ • লঙ্কা কুঁচি: ৩টি • ধনে পাতা কুঁচি • নুন: স্বাদ মতো
• বিস্কুটের গুঁড়ো • বেসন • তেল: প্রয়োজন মতো



প্রণালী
• ঝিরি ঝিরি করে কাটা বাঁধাকপি ভাল করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে রাখুন।
• আলু সেদ্ধর সঙ্গে গোটা জিরে, লঙ্কা কুঁচি, ধনে পাতা কুঁচি,
নুন ও বেসন ভাল করে মেখে নিতে হবে।
• এ বার এই আলু মাখার সঙ্গে ভাল করে বাঁধাকপির টুকরো মিশিয়ে নিন।
• পুরো মিশ্রণটি ছোট ছোট ভাগ করে বিস্কুটের গুঁড়ো মাখিয়ে রাখুন।
• গরম তেলে মুচমুচে করে ভেজে নিলেই তৈরি বাঁধাকপির কোপ্তা।
• অন্য রকম: কোপ্তার গ্রেভি করে এই কোপ্তা একদম শেষে দিয়ে
একটু ফুটিয়ে নিয়ে নামিয়ে নিতে পারেন। খুব ভাল লাগে খেতে।


উপকরণ

• বড় বড় করে কাটা বাঁধাকপি
• আলু • নুন • হলুদ • তেল • পাঁচ ফোড়ন
• পেঁয়াজ কুচি • কাঁচা লঙ্কা চেরা



প্রণালী
• বাঁধাকপি নুন-হলুদ দিয়ে সেদ্ধ করে জল ঝরিয়ে রাখুন।
• আলু লম্বা লম্বা করে কেটে নিন। একটু মোটা করে কাটবেন যাতে গলে না যায়।
• এ বার তেলে ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ, রসুন, লঙ্কা কুঁচি দিতে হবে।
• মিশ্রণটি ভাল করে নাড়াচাড়া করে ভেজে নিন।
• এ বার আলুর টুকরেরগুলো দিয়ে অল্প নুন আর হলুদ দিতে হবে।
• হাল্কা ভাজা হলে বাঁধাকপি মিশিয়ে দিন।
• সব একসঙ্গে নেড়েচেড়ে ভাজা করলেই তৈরি আপনার ডিশ।
• সাদা ভাত বা রুটির সঙ্গে এই ভাজা ভীষণ ভাল খেতে হয়।

জন্ম পূর্ব মেদিনীপুরে। ছাত্রজীবনের শেষ দিক কেটেছে কলকাতায়। সেই সঙ্গে কর্মজীবনের কিছুটাও। আপাতত স্বামীর ‘পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চ’ সূত্রে টরেন্টো নিবাসী হয়ে পুরো গৃহিণী। রান্না করা এখন শখের থেকেও বেশি নেশার পর্যায়ে। অবসর সময় কাটে ছবি এঁকে, বই পড়ে আর গান শুনে। ঘুম থেকে উঠেই আনন্দবাজার পড়া, নেট সার্ফিং করা আর সুযোগ পেলেই প্রতিটা মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি— এই ভাবেই সুন্দর করে কেটে যাচ্ছে দিন।

খড়দহ থেকে শ্রীমতি ইরা মজুমদার
সর্ষে পোস্ত ফুলকপি ফুলকপির দম

উপকরণ

• ফুলকপি: একটা মাঝারি সাইজের • সর্ষে: ২৫ গ্রাম • পোস্ত: ২৫ গ্রাম
• কাঁচা লঙ্কা বাটা: ৭/৮টা • পাঁচ ফোরন: ৩-৪টে সাজানোর জন্য
• হলুদ, নুন, চিনি: স্বাদমতো • ধনে পাতা: সাজানোর জন্য
• সর্ষের তেল • ৫০ গ্রাম


প্রণালী
ফুলকপি ছোট টুকরো করে ইষদোষ্ণ গরম জলে
নুন-হলুদ দিয়ে ৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন।
• এর পর কপির টুকরোগুলো তুলে ভাল করে জল ঝরিয়ে নিন।
• সর্ষে, পোস্ত আর কাঁচালঙ্কা অল্প নুন দিয়ে একসঙ্গে
বেটে রাখতে হবে।
এই বাটাটাকে হলুদের সঙ্গে অল্প জলে গুলে নিন।
• কড়াইতে তেল গরম করে পাঁচ ফোড়ন দিন।
• ভাল গন্ধ বেরোলে ফুলকপির টুকরোগুলো দিয়ে ভেজে নিন।
• এ বার জলে গুলে রাখা সর্ষে-পোস্ত বাটা দিন।
• ভাল করে নাড়াচাড়া করে, নুন-মিষ্টি দিয়ে কড়াই ঢাকা দিয়ে রাখুন।
• কপি সেদ্ধ হয়ে এলে উপরে সর্ষের তেল ছড়িয়ে নামিয়ে নিতে হবে।
• কাঁচালঙ্কা আর ধনেপাতা দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

উপকরণ
• ফুলকপি: একটা মাঝারি সাইজের • জিড়ে গুড়ো: ৪ চামচ • শুকনো লঙ্কা: ২টো
• শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো: ১ চা চামচ • কাঁচা লঙ্কা-৩/৪টে (মাঝখান দিয়ে চেরা)
• আদা বাটা: ১ চা চামচ • টমাটো: ১টা (মাঝারি সাইজের)
• হলুদ, নুন, চিনি: স্বাদমতো • গরম মশলা গুঁড়ো-১/২ চা চামচ
• ঘি-১/২ চামচ • সাদা তেল-৮ চা চামচ


প্রণালী
• ফুলকপি ছোট ছোট টুকরো করে গরম জলে ভিজিয়ে রাখুন।
• কপির টুকরোগুলো তুলে ভাল করে জল ঝরিয়ে নিন।
• সমস্ত মশলা একসঙ্গে নিশিয়ে নিন।
মিশ্রণে টমেটো ও কাঁচালঙ্কাও দিন।
• এ বার পুরো মিশ্রণটি ফুলকপির টুকরোর সঙ্গে
মাখিয়ে আধ ঘন্টা মতো ম্যারিনেট করতে হবে।
• এর পর পুরো মিশ্রণটাকে অল্প জল দিয়ে স্টিমে ভাপান।
• চাইলে অল্প মিষ্টি দিতে পারেন।
• ফুলকপি সেদ্ধ হয়ে এলে তৈরি আপনার ফুলকপির দম।
• নামানোর আগে গরম মশলা ছড়িয়ে মিশিয়ে নিন।
দু’টো রান্নাই ভাত বা রুটির সঙ্গে অতি উপাদেয়।

প্রবল ভাবে মেয়েদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, তবুও বিয়ের পরে চাকরি করা হয়ে ওঠেনি। স্বামীর চাকরির সুবাদে পৃথিবীর নানা দেশে ঘুরে, ভাঁড়ারে নানা দেশের রেসিপি। গল্প করতে আর বেড়াতে পারলে তো কথাই নেই। উল বোনার পাশাপাশি রান্না নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করাটাও একটা হবি। বাঙালি রান্না সামান্য অদল বদল করে পরিবেশন করলে বিদেশিদেরও খুব ভাল লাগে— এই বিশ্বাস নিয়েই যত পরীক্ষা নিরীক্ষা।

সান দিয়েগো থেকে শ্রীমতি সুচিস্মিতা সেন
কড়াইশুঁটির কচুরি ও নবাবি আলুর দম
নবাবি আলুর দম

উপকরণ

• ছোট আলু: ১ কেজি • পেঁয়াজ কুচি: আধ কাপ
• টোম্যাটো: ১টা (বীজ বার করে বাটতে হবে)
• আদা বাটা: ১ চা চামচ • কাঁচা লঙ্কা বাটা: ঝাল স্বাদ অনুযায়ী
• জিরে ও ধনে গুঁড়ো: ১ চা চামচ • কাজু-চারমগজ বাটা: ১চা চামচ
• কিসমিস বাটা: ১ চা চামচ • দই: ১০০ গ্রাম
• নুন, চিনি: স্বাদ অনুযায়ী • গরমমশলা: সামান্য
প্রণালী
• আলু সেদ্ধ করে, খোসা ছাড়িয়ে, হাল্কা করে ভেজে নিন।
• তেলের মধ্যে দারচিনি, এলাচ ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজকুচি দিতে হবে।
• পেঁয়াজ ভাজা হলে অল্প টোম্যাটো বাটা দিয়ে কষিয়ে নিন।
• তার পর একে একে আদাবাটা, কাঁচা লঙ্কা বাটা, জিড়ে-ধনে গুঁড়ো,
কাজু-চারমগজ বাটা, কিসমিস বাটা দিতে হবে।
• এই মিশ্রণ কষাতে কষাতে ভেজে রাখা আলু দিয়ে দিন।
• পরিমাণ মতো নুন, মিষ্টি দিন।
• ভাল মতো কষা হয়ে গেলে দইয়ের ঘোল বানিয়ে ঢেলে দিতে হবে।
• তার পর বেশ খানিক ক্ষণ ফুটতে দিতে হবে।
• গ্রেভি ঘন হয়ে আসলে গ্যাস বন্ধ করে দিন।
কড়াইশুঁটির কচুরি

উপকরণ
পুরের জন্য
• কড়াইশুঁটি: পরিমাণ মতো • আদা: সামান্য • কাঁচা লঙ্কা: ২টি • জল: ১ চামচ
• হিঙ: ১ চিমটে • গোটা জিরে: ১ চা চামচ • সাদা তেল: ১ চা চামচ
ময়ানের জন্য
• ময়দা: ১ কাপ • আটা: ১ কাপ • সাদা তেল: দেড় চামচ
• গরম জল: ১ কাপ (অল্প অল্প করে দিতে হবে)

প্রণালী
• কাঁচালঙ্কা আর আদা দিয়ে কড়াইশুঁটি বেটে নিন।
• তেলের মধ্যে হিঙ আর জিরে ফোড়ন দিয়ে কড়াইশুঁটি বাটা দিয়ে দিন।
• পরিমাণ মতো নুন-মিষ্টি মিশয়ে ভাল করে নাড়াচাড়া করুন।
• সুন্দর গন্ধ বেরোলে গ্যাস বন্ধ করে দিন।
• এ বার ময়ান দিয়ে মেখে রাখা ময়দার লেচি কেটে নিন।
• লেচির মধ্যে পুর ভরে গোল করে বেলে,
তেলে ভাজলেই তৈরি কড়াইশুঁটির কচুরি।

আদতে কলকাতার মেয়ে। বর্তমানে স্বামীর কর্মসূত্রে সান দিয়েগোর বাসিন্দা। ভাল লাগার তালিকায় প্রথমই হল নতুন নতুন রান্না করা। আর ভাল লাগে ছবি তুলতে।



বসন্ত জাগ্রত দ্বারে... । এ বার ‘রঙের উত্সবে’ কোন ডিশটা মাথায় ঘুরছে বলুন তো? জানান আমাদের,
অবশ্যই ছবি-সহ, আর ভাগ করে নিন ইন্টারনেটের সকল বন্ধুদের সঙ্গে। রেসিপি পাঠানোর ঠিকানা
হাওয়াবদল, আপনার রান্নাঘর
আনন্দবাজার পত্রিকা, ইন্টারনেট সংস্করণ
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট
কলকাতা ৭০০০০১

ই-মেল করুন haoabadal@abp.in অথবা haoabadal@gmail.com

সংক্ষিপ্ত পরিচিতির সঙ্গে আপনার ছবি পাঠানো বাধ্যতামূলক।

রোজের আনন্দবাজারএ বারের সংখ্যা • সংবাদের হাওয়াবদল স্বাদবদল • আপনার রান্নাঘর • পুরনো সংস্করণ