৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮ বুধবার ১৫ জুন ২০১১

সংবাদের পরিভাষায় যাকে ‘হার্ড নিউজ’ বলে তার বাইরেও বিস্তৃত খবর-রাশি প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
আর সেই পাহাড়-প্রমাণ খবরের খনি থেকে কিছু বিষয় ভিত্তিক সংবাদকে বেছে নিয়ে আমরা সাজিয়েছি ‘সংবাদের হাওয়াবদল’।
সরাসরি বেড়ানোর কথা না-বললেও এইসমস্ত খবর আসলে হাওয়াবদলকে কেন্দ্র করেই। সংবাদের মোড়কে পর্যটন,
চমকে দেওয়া না-জানা তথ্য, জীবজগতের পাশাপাশি পার্বণ, প্রত্নতত্ত্ব সবমিলিয়ে এক অন্য খবরের জগৎ।
ঐতিহ্য
• চ্যাপলিনের ছবি নিলামে
চার্লি চ্যাপলিনের বিরলতম ছবির নিলাম হতে চলেছে আগামী ২৯ জুন। ২০০৯-এ সংগ্রাহক মরিস পার্ক ইবে থেকে অনলাইনে ‘চ্যাপলিন ইন জেপ্ড’ নামক ছবির রিলটি মাত্র ৩.২০ পাউন্ডে কেনেন। আশা করা হচ্ছে নিলামে এর মূল্য দাঁড়াবে লক্ষাধিক পাউন্ডের বেশি। ছবিটিতে মাত্র সাত মিনিটের দৃশ্যাবলীর মধ্যে চ্যাপলিনের জার্মান জ্যাপেলিন বিমান ধ্বংসের দৃশ্য রয়েছে। এ ছাড়া জ্যাপেলিন বিমানের লন্ডন হানারও ছবি রয়েছে। মরিস পার্ক ছবিটি বহু বিদগ্ধজনকে দেখিয়েছেন। অনেকের মতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সেনার মনোবল বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ছবিটি তৈরি করা হয়েছিল। আবার অনেকে বলেছেন এটি চ্যাপলিনের অজান্তে তৈরি করা হয়েছিল। কয়েকজনের মতে জ্যাপেলিন বিমান সত্যিই ছিল, কিন্তু কারও মতে এটি কেবল অ্যানিমেশনের কারিকুরি ছাড়া কিছুই নয়। মরিসের মতে ছবিটি এমন অনেক প্রশ্ন তুলেছে যার উত্তর এখনও অজানা। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় যে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের ওপর বিমান হানায় ব্যবহার করা হত জার্মান জ্যাপেলিন বিমান। আকাশপথে হানায় জুড়ি মেলা ভার এই বিমানের নামকরণ হয়েছিল ‘আকাশের বিভীষিকা’ হিসেবে। ১৯১৭-তে ব্রিটিশ বোর্ড অফ ফিল্ম ক্ল্যাসিফিকেশন ছবিটির বিভাগগত মান নির্ধারণ করে। ছবিটির পাদটীকা থেকে লক্ষণীয় যে এটিকে রফতানিরও লাইসেন্স দেওয়া হয়। এ ছাড়া সেন্সরশিপ ফ্রেম থেকে বোঝা যায় যে, এটি মিশরে পাঠানো হয়েছিল। লন্ডনের বনহ্যাম নিলামঘরের বিনোদন সংক্রান্ত স্মারকের প্রধান, স্টেফানি কনেলের মতে চলচ্চিত্রের আদিকালের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ছাপ রাখবে এই ছবিটি।
প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার
• হদিস প্রাচীন স্থাপত্যের
বাণগড় দুর্গনগরীর ঢিবি খুঁড়ে তাম্র-প্রস্তর যুগের নিদর্শনের পাশাপাশি বিশাল এক পঞ্চরথ আবিষ্কৃত হয়েছে। যা ওড়িশার লিঙ্গরাজ মন্দিরের চেয়ে বড় বলে প্রত্নতাত্ত্বিকেরা মনে করছেন। দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের বাণগড়ে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের কলকাতা শাখার নেতৃত্বে তৃতীয় দফায় খননকার্যের পরে তাম্র-প্রস্তর যুগের ওই নিদর্শন ও স্থাপত্য উত্তরবঙ্গের মধ্যে প্রথম বলে মনে করছেন পুরাতত্ত্ব বিভাগের ডেপুটি সুপারিন্টেডেন্ট শান্তনু মাইতি। সামনেই বর্ষা। তাই তৃতীয় পর্বের খনন কাজ আপাতত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে গত ৭ মাসে আবিষ্কৃত প্রত্নসামগ্রী বাণগড়কে পর্যটন ক্ষেত্র হিসাবে গড়ে তোলার দাবি আরও জোরালো করবে বলে মনে করা হচ্ছে। গত অক্টোবরে বাণগড়ে খনন শুরু হয়। তার আগে দ্বিতীয় দফায় নজর মিনার-সহ মৌর্য যুগের স্থাপত্য ও একাধিক পুরাতত্ত্বের নমুনা আবিষ্কৃত হয়েছে। চার দিকে পরিখা দিয়ে ঘেরা বাণগড় দুর্গনগরীর ধ্বংসাবশেষ ও ছোট ইটের তৈরি প্রাসাদ আগেই উঠে এসেছিল। এ বার দুর্গ প্রাকার ও স্থাপত্যকীর্তি খুঁজতে গিয়ে মাটির ৬ মিটার নীচে মেলে ওই বিশাল পঞ্চায়তন বা পঞ্চরথ মন্দিরের একাংশ। যা অন্তত ৯০ কোটি ইট ও পাথর দিয়ে তৈরি। শান্তনুবাবুর কথায়, “কারিগরি দিক থেকে এ এক উন্নত নিদর্শন।” ওই মন্দির প্রদক্ষিণের জন্য চার দিকে সরু রাস্তা রয়েছে। রয়েছে বড় হোমকুণ্ড। ৩০ মিটার উঁচু পাঁচিল। ৮-১০ মিটার অন্তর একটি করে নজর মিনারের হদিস মিলেছে। প্রত্নতাত্ত্বিকেরা জানাচ্ছেন, মন্দিরের সাড়ে ১১ মিটার নীচে খনন করে মিলেছে শালকাঠের স্থাপত্য। সম্ভবত পাল যুগের ওই স্থাপত্যের পাশাপাশি একটি চমকপ্রদ নির্মাণ মিলেছে যার সঙ্গে বৌদ্ধ স্থাপত্যের মিল পাওয়া যায়। মিলেছে তাম্র ও প্রস্তর যুগের মূল্যবান পাথর খণ্ড, সোনার মুদ্রা, পোড়ামাটির সিলমোহর, ধাতুখণ্ড, তামার সরঞ্জাম সমেত অন্তত পাঁচশো নিদর্শন। ওই সময় খননে মিলেছে চাল, বড় মাছের কাঁটা, সরষে, তামা ও ব্রোঞ্জের বাসনপত্র। যা দেখে প্রত্নবিদদের অনুমান, মৌর্য যুগেও মাছ-ভাত খাওয়ার প্রচলন ছিল। খাবারে ব্যবহার করা হত সরষে। মন্দিরের দক্ষিণের ঢালে ইটের সুড়কি ও টুকরো দিয়ে তৈরি বিরাট একটি চাতালের সন্ধান মিলেছে যা প্রার্থনাস্থল বলে অনুমান করা হচ্ছে। ঢিবি থেকে ৯ মিটার নীচে খননের সময়ে এটির একাংশের সন্ধান মেলে। পুরাতত্ত্ব বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, সামনের বছর ফের খনন শুরু হবে। সকলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বাণগড় দুর্গনগরীও।

• মোনালিসার দেহাবশেষ আবিষ্কার, দাবি
তার ‘রহস্যময়’ হাসি বছরের পর বছর চিন্তার খোরাক জুগিয়েছে গবেষকদের। ‘সে’ লিওনার্দো দা-ভিঞ্চির ‘মোনালিসা’। আর শুধু কি হাসি? রহস্যে ঘেরা তার পরিচয়ও। কে সেই ‘আসল’ মোনালিসা যাকে সামনে রেখে অমন একটা ‘মাস্টারপিস’ সৃষ্টি করেছিলেন ষোড়শ শতকের অন্যতম বিখ্যাত চিত্রকর, তা নিয়েও অনুসন্ধানের শেষ নেই। ইতালির বোলোগনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমনই এক অনুসন্ধানকারী দলের দাবি তাঁরা ফ্লোরেন্সের এক গির্জা থেকে ছবির আড়ালের সেই ‘আসল’ মহিলার দেহাবশেষ আবিষ্কার করেছেন। মুখ্য গবেষক জর্জিও গ্রুপ্পিওনির বক্তব্য, “ফ্লোরেন্সের এক কাপড়ের ব্যবসায়ীর স্ত্রী লিসা ঘেরাদিনিই সম্ভবত মোনালিসার মডেল। কয়েক বছর আগে তাঁর ডেথ সার্টিফিকেট পাওয়া যায়। সেই সূত্র ধরে তাঁর দেহাবশেষ খুঁজতে খুঁজতেই আমরা এই গির্জায় এসে পৌঁছেছি। হাড়ের গঠন দেখে প্রাথমিক ভাবে ওগুলি কোনও মহিলার বলেই মনে হচ্ছে।” হাড়গুলির সাহায্যে তাঁরা কম্পিউটারের মাধ্যমে মহিলার মুখের ছবি তৈরি করার চেষ্টা করবেন। সেই ছবি মোনালিসার ছবির সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে। তাতেই মোনালিসার পরিচয় রহস্যের পর্দা সরবে বলে আশা গবেষকদের। তবে এই পদ্ধতির উপযোগিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বেশ কিছু প্রত্নতত্ত্ববিদ। তার পরিচয় খুঁজে বের করার এই প্রচেষ্টা দেখে হয়তো ফের রহস্যময় হাসি হাসছে মোনালিসা!

• গুয়াহাটিতে মাটির তলায় প্রাচীন মন্দির
গুয়াহাটিতে দশম-একাদশ শতকের প্রাচীন মন্দিরের অস্তিত্ব মিলল। এই রাজ্যে আমবাড়ি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানের পাশাপাশি, কামরূপ সভ্যতার ধারাবাহিকতার নিদর্শন হিসেবে এই আবিষ্কারটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অসম প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধিকর্তা হেমেন্দ্রনাথ দত্ত জানান, গুয়াহাটির ফাটাশিল এলাকায় বহুতল নির্মাণের কাজ চলাকলীন ভিত খোঁড়ার পরে মাটির সঙ্গে বহু পাথরের টুকরো উঠে আসে। ওই নির্মাণস্থলে আগে কেলভিন সিনেমা হল ছিল। পুরনো প্রেক্ষাগৃহের নীচ থেকে পাওয়া ওই পাথরের টুকরোগুলির মধ্যে ন’টি প্রস্তর ফলকে মন্দিরের গায়ে থাকা নানা অলঙ্করণ খোদাই করা ছিল। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগকে না জানিয়েই এই সব মাটি-পাথর ফেলে দেওয়া হয়। আবার স্থানীয় মানুষেরা কিছু পাথরের টুকরো বাড়িও নিয়ে যায়। মিন্টু আলি নামক স্থানীয় এক যুবক নকশা কাটা ও মূর্তি খোদাই করা পাথরের টুকরোর কথা প্রত্নতত্ত্ব বিভাগকে জানান। তিনি বেশ কিছু পাথরের টুকরো নিজ সংগ্রহে রেখে দেন। এই রকম ন’টি পাথরের টুকরো রক্ষণাবেক্ষণ ও পরীক্ষার জন্য প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ নিজেদের হেফাজতে রাখে। এর মধ্যে চতুর্ভূজ বিষ্ণু মূর্তি, ফুলের নকশা কাটা অলঙ্করণ, ঢোলবাদকের মূর্তি, মন্দিরের ভিতরের অংশ রয়েছে।

• অবহেলিত প্রাচীন মূর্তি
মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে সরকারি সংগ্রহশালায় অবহেলিত অবস্থায় রয়েছে বহু প্রাচীন মূর্তি। নবম থেকে দ্বাদশ শতকের বিষ্ণু, উমা, শিব-মাহেশ্বরী ও গণেশের মূর্তিগুলি কাঠের আলমারি তৈরি করে রাখার কথা হয়েছিল। কিন্তু আলমারিতে রাখার পরেও বাড়তি মূর্তিগুলি ঘরের কোণে অযত্নে রয়েছে। এই বিষয়ে রাজ্য পুরাতত্ত্ব দফতরের উপ-অধিকর্তা অমল রায় বলেন, “পাল ও সেন যুগের বিভিন্ন ধাতুর তৈরি মূর্তিগুলি জায়গার অভাবে মুর্শিদাবাদ সংগ্রহশালায় ঘরের মেঝেতে রাখা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন যে, সংগ্রহশালার তিনটি ঘরে বিভিন্ন আমলের মূর্তি দর্শকদের জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এছাড়া এখানে দোতলা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে খরচ হবে ২০ লক্ষ টাকা। সরকারি সাহায্য পাওয়ার পরে অর্থ দফতরের অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হবে। সেই সময় মূর্তিগুলি সাজিয়ে রাখা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অমলবাবু।
বন্যপ্রাণ
• রমনাবাগানের মিঠে জলে মৃত্যুর অপেক্ষায় প্রহর গুনছে রাজা
১৯৯৬ সালের ৭ জুলাই একজোড়া স্ত্রী-পুরুষ কুমির ছাড়া হয়েছিল বর্ধমানের রমনাবাগান মিনি জু-র জলাশয়ে। পুরষটির নাম রাজা, স্ত্রীটি রানি। কিন্তু মাস কয়েক আগে স্ত্রী কুমির রানির মৃত্যু হয়। বনবিভাগের এই ক্রোকোডাইল এনক্লোজারের গায়ে দু’টি বোর্ড লাগানো। বড় ও নতুন বোর্ডটিতে লেখা আছে, কুমিরগুলি মোহনার কুমির। অপেক্ষাকৃত পুরনো ও আকারে ছোট আরও একটি বোর্ড রয়েছে এনক্লোজারের অন্য পাশে। সেখানে লেখা, এই কুমিরগুলি নোনা জলের। নতুন বোর্ডটিতে আরও বলা হয়েছে, পুরুষ কুমিরটির গায়ের রং তুলনামূলক ভাবে বেশি কালো। তার জন্ম ১৯৮০ সালে। দৈর্ঘ্য ২.৮৮ মিটার। ওজন ১১২ কেজি। স্ত্রী কুমিরটির জন্ম ১৯৮৩ সালে। তার গায়ের রঙ অপেক্ষাকৃত সাদা, দৈর্ঘ্য ২.৬৫ মিটার, ওজন ১০২ কেজি। রমনাবাগান ক্রোকোডাইল এনক্লোজারের কাছে দুপুরে ঘোরাফেরা করে দেখা গিয়েছে, জীবিত ও একমাত্র পুরুষ কুমির রাজা পাড়ের কাছেই ঘোরাফেরা করছে। অতিরিক্ত শ্যাওলা জমায় জলাশয়ের জল সবুজে পরিণত। জলও বেশ কমে গিয়েছে। মোহনায় জোয়ার-ভাটার মধ্যে বসবাসকারী কুমির কী করে বর্ধমানের মিঠে জলে বাঁচে? বনবিভাগ সূত্রে বলা হয়েছে, সুন্দরবনের ভগবৎপুর কুমির প্রকল্প থেকে কুমির দু’টি নিয়ে আসা হয় রমনাবাগানে। ক্রোকোডাইল এনক্লোজারের কাছে গিয়ে দেখা গেল, রাজার মাথা ও লেজের একাংশ সাদা হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের সরীসৃপ বিশেষজ্ঞ দীপক মিত্র অবশ্য বলেন, “নোনা জলের কুমিরদের মিঠে জলে ছাড়লে তাদের আয়ু কমে যায়। কারণ নোনা জল বা মোহনার কুমির ক্যালসিয়াম সংগ্রহ করে কাঁকড়া খেয়ে। ফসফরাস পায় সামুদ্রিক মাছ থেকে। মিঠে জলে গরুর মাংস, মিষ্টি জলের মাছ ছাড়া অন্য কিছু তারা খেতে পায় না। যথেষ্ট ক্যালসিয়াম, ফসফরাস না পেয়েই অপুষ্টির অভাবে তারা মারা যায় অকালে। কালো কুমিরের শরীর সাদা হয়ে যাচ্ছে, কারণ তার শরীরে রক্তাল্পতা ঘটছে।” রানি মারা যাওয়ার পরে বনবিভাগ জানিয়েছিল, এই মৃত্যু বার্ধক্যজনিত কারণে। রাজা কত দিন আর বাঁচবে তারও ঠিক নেই।

• একক উদ্যোগের ‘মিনি কাজিরাঙা’
অসমে ব্রহ্মপুত্রের বালুচরের যাদব পায়েং। স্বঘোষিত সবুজ সেনানী। কারও মুখাপেক্ষী না হয়ে শুধু নিজের উদ্যোগে রুক্ষ বালুচরকে রূপান্তরিত করেছেন সবুজ দ্বীপে। বিশ্ব পরিবেশ দিবস, সরকারি-বেসরকারি অরণ্যায়ন প্রকল্পের আড়ম্বর থেকে বহু দূরে এক প্রৌঢ় প্রায় তিন দশকের একক সাধনায় গড়ে ফেলেছেন একটা অভয়ারণ্য। তাঁর নামেই এখন সেই সবুজ দ্বীপের নাম ‘মলোই কাঠোনিবাড়ি’। তাঁর ডাক নাম মলোই আর অরণ্যের ডাকনাম, ‘মিনি কাজিরাঙা’। এই অরণ্যে এখন প্রায় পুরোপুরি জাতীয় উদ্যানের পরিবেশ। একে একে বাসা বেঁধেছে প্রথম তফসিলভুক্ত প্রাণীর দল। হাতি, বাঘ, নানা ধরনের হরিণের পরে সম্প্রতি এসে হাজির বুনো মোষেরাও। বাকি শুধু গন্ডার। তবে, সবুজ দ্বীপের স্রষ্টার আশঙ্কা, গন্ডার এলেই হানা দেবে চোরাশিকারির দল। ছোট্টবেলা থেকে যোরহাটের উত্তর-পশ্চিমে ব্রহ্মপুত্রের ধু ধু বালুচরে গরু চরাতে যেতেন মলোই। তাঁর কথায়, “দেখতাম, খাদ্যের সন্ধানে গবাদি পশুরা কী ভাবে চর থেকে চরে ঘুরে বেড়ায়। ওদের দেখে কষ্ট হত। এক দিন ভাবলাম, পুরো বালিয়াড়ি যদি ঢেকে দিতে পারি গাছের ছায়ায় কেমন হয়?” তারপরই যখন যেখানে যা চারা বা বীজ পেয়েছেন, বালিয়াড়িতে পুঁতে দিয়েছেন। তিন দশক কেটে গিয়েছে। মলোইয়ের সাধের অরণ্য এখন ৩০০ হেক্টর জুড়ে ছড়িয়ে। ১৯৮১ সাল থেকে মলোই সপরিবারে আছেন দ্বীপ আঁকড়ে। হরিণ, বাঘ, হাতি, মোষ পোষায় আশপাশের গ্রামবাসীরা তাঁকে ‘ত্যাজ্য’ করেছেন। সম্মান বলতে জুটেছে শুধু যোরহাট অসম জাতীয় যুব ছাত্র পরিষদের সংবর্ধনা। তবে এ সব নিয়ে মাথা ঘামান না এই সবুজ সেনানী। এমন কী, যে অরণ্য গড়তে প্রাণপাত করলেন জীবনভর, তার অধিকারও চান না। মলোই বলেন, “অরণ্য, বণ্যপ্রাণ সরকারের সম্পত্তি। আমি কেবল ভালবেসে দেখাশোনা করছি। সরকারি কর্তাদের কাছে তাঁর একটাই আবেদন, স্থায়ী নজরদারি চৌকি বসাতে। একা চোরাশিকারিদের সঙ্গে তো তিনি লড়তে পারবেন না।

• দূষণের জেরে বদলাচ্ছে ইছামতীর জলের রং
জলদূষণের হাত থেকে ইছামতীকে বাঁচাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে উদ্যোগী হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ইছামতী নদী সংস্কার সহায়তা কমিটি। এই উপলক্ষে ৩ জুন শুক্রবার সকালে নৌকোয় করে প্রচারাভিযানে বের হন কমিটির সদস্যেরা। বনগাঁর ঘাটবাওড় থেকে আপনজনের মাঠ পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার জলপথে পরিক্রমা করেন তাঁরা। শিল্পীরা নৌকোয় নদী-ভিত্তিক গানের মাধ্যমে নদী পাড়ের বাসিন্দাদের সচেতন করার চেষ্টা চালান। মাইকে প্রচারের মাধ্যমেও মানুষের কাছে আবেদন জানানো হয়, যাতে তাঁরা নিজেদের স্বার্থে নদীকে ব্যবহার না করেন। নোংরা আবর্জনা নদীতে না ফেলেন। নাব্যতা হারিয়ে ইছামতী এখন মৃতপ্রায়। পাশাপাশি জলদূষণের ফলে ওই জল এখন মানুষ রান্নার কাজে ব্যবহার করতে পারেন না। দীর্ঘ দিন ধরেই মানুষ বাড়ির আবর্জনা নদীতে ফেলেন। বর্তমানে নদীর জল গাঢ় সবুজ হয়ে গিয়েছে। বাসিন্দারা জানালেন, নদীর জলের এমন রং তাঁরা বহু দিন দেখেননি। নদীতে স্নান করলে চর্মরোগ হচ্ছে। বর্তমানে গাইঘাটার বর্ণবেড়িয়া থেকে কালাঞ্চি সেতু পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক সহায়তায় ড্রেজিং মেশিনের মাধ্যমে পলি তুলে যৌথ নদী-সীমান্তে সংস্কারের কাজ চলছে। পাশাপাশি সংস্কার হয়ে যাওয়া এলাকা-সহ বিস্তীর্ণ নদীপথে কোমর, ভেচাল দেওয়া হয়েছে। ফলে নদীর স্রোত বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।
পার্বণ
• বাংলা সাংস্কৃতিক মেলা নিয়ে এখন মাতোয়ারা রাঁচি
সিলেট-বরাকের বৌ নাচ, পুরুলিয়ার ছৌ, বোলপুরের বাউল, কিংবা কলকাতার সমকালীন ব্যান্ডের সুর মিলেমিশে একাকার। সঙ্গে বাড়তি প্রাপ্তি রাঁচির কাছে মানভূম-ঘেঁষা বুন্ডুর মাটির গয়না-মুখোশ, সুন্দরবনের টুকিটাকি লোকশিল্প বা রকমারি শিল্প-ঘরানার আহরণে নাগরিক বুটিকের সম্ভার। দেশ-কালের সীমানা উড়িয়ে দেওয়া এই বাঙালিয়ানার উৎসবে মাঝ-জুনে মাতোয়ারা হল ঝাড়খণ্ডের রাজধানী। রাঁচির বার্ষিক পার্বণ ‘বাংলা সংস্কৃতি মেলা’ রাজ্য-রাজনীতির কুশীলবদের কাছেও একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান। বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এই মেলা এ বছর এক যুগ পার করেছে। মেলার আহ্বায়ক সুপ্রিয় ভট্টাচার্যের কথায়, “সাবেক বিহারের জমানায় বাঙালির আত্মপরিচয়ের প্রতিষ্ঠায় এই মেলা জরুরি ছিল। এখন বাঙালির সংস্কৃতি সবার মন জিতে নিয়েছে।” নজরুল গীতি, রাগাশ্রয়ী গানের প্রতিযোগিতায় বাঙালি-সমাজের নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি বরাবরই মেলায় অন্য ভাষাভাষী নবীন প্রতিভাদেরও দাপট দেখা যায়। এ বারও সেই ধারা বজায় থাকল। কলকাতার ‘আর্টিস্ট’ শুভমিতা-শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দোহারের গানের জন্য রসিকজনের অপেক্ষা তো ছিলই। মেলা মাতাল বোলপুরের মহাপ্রভু সম্প্রদায়ের কৃষ্ণদাস বৈরাগ্য ও সহ-শিল্পীদের বাউল-গান। জলঙ্গির পদ্মাপারের বাসিন্দা গোলাম ফকির ও নদিয়ার গোরভাঙা গ্রামের শিল্পীরা ফকিরি ধারার প্রেরণায় বাংলা কাওয়ালিতে জমিয়ে দিলেন। শিলচরের সঙ্গীত বিদ্যালয়ের সৌমিত্রশঙ্কর চৌধুরীরাও এখন রাঁচিতে। বছরভর বাঙালির বিভিন্ন পার্বণের লোকনৃত্য ধামাইল-বৌ নাচ, চড়কের নাচ, মনসা-পুজোর ওঝা নাচ, দোল-দুর্গোৎসবের নাচ-গানের একটি আলেখ্য তাঁরা মেলার শেষ দিনে উপহার দেন। মেলায় মিষ্টি দই, বিরিয়ানি, কষা মাংসে বাঙালির ভুরিভোজেরও ঢালাও আয়োজন। নানা নাগরিক আমোদের মধ্যে বাংলার সংস্কৃতি মাটির স্বাদ নিয়ে এল। রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীদের হাতে উদ্যোক্তাদের উপহারও এ বার চিরায়ত বাংলার স্মারক! মাটির একতারা।
ট্যুরিস্ট স্পট
• পর্যটন মানচিত্রে মহিষাদল
প্রাচীন বর্ধিষ্ণু এক জনপদ মহিষাদল। ইতিহাস, ঐতিহ্য আর পর্যটন সম্ভাবনায় সমৃদ্ধ। গেঁওখালির তিনটি নদীর সঙ্গমস্থল,
রাজবাড়ি, নাটশাল, হরিখালি ঘিরে পর্যটন-প্রসার সেখানকার মানুষের অন্যতম দাবি। এখানকার বিধায়ক এখন পরিবেশ
মন্ত্রী, সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার। নির্বাচনী প্রচার চালানোর সময়েই গেঁওখালির ত্রিবেণী-সঙ্গমের অতিথিশালায় উঠেছিলেন।
অপরূপ নিসর্গে মুগ্ধ হয়েছেন দিনের পর দিন। তাঁর কথায়, “বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র হতে পারে গেঁওখালি।
ভারতের মানচিত্রে থাকার মতো মনোরম জায়গা।” নতুন পরিবেশ মন্ত্রীকে ঘিরে তাই আশায় মহিষাদল।

• হেরিটেজ জোন হচ্ছে ‘গেটওয়ে অফ ডুয়ার্স’
অবশেষে ‘গেটওয়ে অব ডুয়ার্স’ ময়নাগুড়িকে ‘হেরিটেজ জোন’ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিল ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল হেরিটেজ কমিশন’। আগামীকাল ১৬ জুন জল্পেশ মন্দির চত্বরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে কমিশনের উত্তরবঙ্গ নোডাল সেন্টারের চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অরুণাভ বসু মজুমদার ওই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন। অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আগে এ দিন কমিশনের কর্তারা ময়নাগুড়ির বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা নবম থেকে দশম শতাব্দীর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি ঘুরে দেখবেন। কমিশনের উত্তরবঙ্গ নোডাল সেন্টারের কো-অর্ডিনেটর আনন্দগোপাল ঘোষ বলেন, “উত্তরবঙ্গের কোনও এলাকাকেএই প্রথম হেরিটেজ জোন ঘোষণা করা হচ্ছে।” কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়নাগুড়িকে হেরিটেজ জোন হিসেবে চিহ্নিত করার পাশাপাশি কোচবিহারের মহারাজা প্রাণনারায়ণ এবং মোদনারায়ণের তৈরি জল্পেশ মন্দিরকে পৃথক ভাবে হেরিটেজ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে হেরিটেজ জোন ঘোষণার ফলে এলাকার সমস্ত প্রাচীন অট্টালিকা, মন্দির, সেতু বা জলাশয় সংরক্ষণের আওতায় চলে আসবে। সেগুলিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। শুধু তাই নয় প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানগুলি সংরক্ষণের জন্য অর্থ সাহায্য মিলবে।


• সুন্দরবনে বাঘের ‘বৃদ্ধাশ্রম’ লগ্নি টানছে পর্যটনে
গভীর জঙ্গলের এক পাশে অসুস্থ ও বুড়ো বাঘের ডেরা। অন্য পাশে বিলুপ্ত হতে চলা ভোঁদড় ও কুমিরের প্রজননকেন্দ্র। এই দু’টি প্রকল্পকে ঘিরে সুন্দরবনের হেড়োডাঙা নদীর পাশের ঝড়খালি এলাকা আগামী দিনে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠতে চলেছে। কলকাতা থেকে ঝড়খালির দূরত্ব সড়কপথে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার। কলকাতা থেকে বাসে বাসন্তী হাইওয়ে ধরে আড়াই ঘণ্টায় সরাসরি পৌঁছে যাওয়া যায় ঝড়খালিতে। আপাতত ঝড়খালিতে থাকার ব্যবস্থা বলতে সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের একটি ছোট বাংলো। কিন্তু বাঘের ‘বৃদ্ধাশ্রম’ তৈরির কাজ শুরু হওয়ার পরই ওই এলাকায় পর্যটনশিল্পে বিনিয়োগ আসতে শুরু করেছে বলে স্থানীয় পঞ্চায়েত ও বন দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন। এলাকায় বেসরকারি উদ্যোগে তৈরি হচ্ছে ছোট ছোট কটেজ। গত বছর ডিসেম্বর মাসে বাঘের ‘রেসকিউ সেন্টার’ তৈরির কাজ শুরু হয়। আপাতত এখানে সাতটি বুড়ো বা অসুস্থ বাঘ রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর মধ্যে দু’টি আনা হচ্ছে আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে। বন দফতরের বক্তব্য, বর্তমানে সুন্দরবনে ২৫০-র মতো রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার রয়েছে। এর মধ্যে অনেক বাঘ বৃদ্ধ বা অসুস্থ হয়ে পড়ে শিকার ধরতে পারে না। তখন সহজে খাবার জোগাড় করার জন্য তারা হামলা চালায় লোকালয়ে। এ রকম অনেক বাঘ বন দফতরের হাতে ধরাও পড়েছে। ধরা পড়ার পরে তাদের চিকিৎসা করে ফের জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে সমস্যার সমাধান হয় না। খাবার না পেয়ে তারা ফের হানা দেয় গ্রামগুলিতে। এই কারণেই বন দফতর এ রকম একটি ‘বৃদ্ধাবাস’ তৈরি করে, সেখানে তাদের রাখার ব্যবস্থা করছে। এই কেন্দ্রে চিকিৎসার পাশাপাশি তাদের খাবার জোগানোর দায়িত্বও নেবে বন দফতর। বনকর্তাদের বক্তব্য, ঝড়খালির ওই রেসকিউ সেন্টারে বাঘেদের আধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেখানে বাঘিনীর প্রসবের জায়গাও থাকবে। মা ও বাচ্চা সেখানে চিকিৎসার আওতায় থাকবে। বাচ্চা একটু বড় হয়ে যাওয়ার পরে তাদের জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে। শুধু বাঘেরই রেসকিউ সেন্টার-ই নয়, ঝড়খালিতে তৈরি করা হচ্ছে বিলুপ্ত হতে চলা ভোঁদড় ও কুমির প্রজনন কেন্দ্রও। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত কয়েক জোড়া পুরুষ ও স্ত্রী কুমির ও ভোঁদড় ওই প্রজনন কেন্দ্রে রাখা হবে। তাদের বাচ্চা হলে সেগুলিকে পর্যায়ক্রমে সুন্দরবনে ছেড়ে দেওয়া হবে। ভোঁদড় ও কুমিরের পাশাপাশি ওই প্রজনন কেন্দ্রে হরিণও প্রতিপালন করা হবে বলে বন দফতর জানিয়েছে।

• লক্ষ্য পর্যটন, সেজে উঠবে চন্দননগর
এক সময়ের ফরাসি উপনিবেশ চন্দননগরকে ঢেলে সাজতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। এ শহরকে গড়ে তোলা হবে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে। প্রস্তাবিত সেই প্রকল্পে ট্যুরিস্ট লজ তৈরির জন্য ইতিমধ্যেই জমি চিহ্নিত করার কাজ শেষ করেছে প্রশাসন। রাজ্যের নগরোন্নয়ন দফতর, পর্যটন দফতর এবং চন্দননগর পুরসভা মিলিত ভাবে প্রকল্পটি রূপায়ণ করবে। প্রাথমিক ভাবে পর্যটন কেন্দ্রের রূপরেখা তৈরির কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ কোটি টাকা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রকল্পে চন্দননগরের গঙ্গার তীরকে মনোরম করে সাজিয়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই লক্ষ্যে রানিঘাট, জোড়াঘাট, বোড়াই চণ্ডীতলা, শুঁড়িপাড়া ঘাট-সহ সংলগ্ন মানকুণ্ডু ও ভদ্রেশ্বরের মোট ৯টি গঙ্গার ঘাটকে আমূল সংস্কার করা হবে। লাগানো হবে গাছ। বসানো হবে নতুন আলো। পুজোর আগেই এই কাজ শেষ হওয়ার কথা।
শুধু গঙ্গার ঘাটগুলি নয়, এ শহরে বেশ কিছু ঐতিহাসিক স্মারক ও সৌধ রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় সে সবও সংস্কার করা হবে। মহকুমাশাসক অভিজিৎ মিত্র বলেন, “এ শহরে ফরাসি আমলের বহু স্মারক রয়েছে। সেই সব স্মারকগুলিতে আরও আকর্ষণীয় করার কাজে ফরাসি কনসাল জেনারেলের থেকেও নতুন এই প্রকল্পের জন্য পরিকল্পনা চাওয়া হয়েছে। তাঁরাও প্রকল্পটি নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী।” রানিঘাটের কাছেই তৈরি করা হচ্ছে ভাসমান জেটি।

• রুদ্রসাগর ঘিরেই ত্রিপুরা পর্যটনের স্বপ্ন রচনা
রুদ্রসাগরের সঙ্কট নিয়ে ভাবিত সকলেই। সঙ্কটের কারণ নিয়ে বিভিন্ন মহলের মধ্যে মতভেদ হলেও কিন্তু একটা বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই এক মত যে রুদ্রসাগরের হাল ফিরলে সেটা ত্রিপুরা-পর্যটনের সব থেকে বড় বিজ্ঞাপন হয়ে উঠবে। বিশাল হ্রদের মাঝখানে নীর মহলের অবস্থান সত্যই মনোমুগ্ধকর। জলের ভিতরে প্রাসাদ দেখার এমন সুযোগ পূর্ব ভারতে আর কোথাও মিলবে না। আর এই দৃশ্য দেখার টানেই ত্রিপুরায় ছুটে আসেন দেশ বিদেশ থেকে হাজার হাজার পর্যটক। নীর মহলে শনি ও রবিবার আলো ও ধ্বনির সাহায্যে পর্যটকদের সামনে তুলে ধরা হয় এ রাজ্যের সংস্কৃতি ও ইতিহাস। ব্যাপারটা চিত্তাকর্ষক। পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা রাজ্য পর্যটন দফতরের আবাস সাগর মহল ট্যুরিস্ট লজে। সেটি অবশ্য ডাঙায়। রুদ্র সাগরের আর এক আকর্ষণ হাজার হাজার পরিযায়ী পাখি। শীতকালে পাখি দেখার টানেও হাজির হন বহু পর্যটক। সমিতির ধারণা, রুদ্রসাগরের হাল ফিরলে আড়াই লক্ষ পর্যটক বছরে আসতে পারবেন বেড়াতে। শত সমস্যার মধ্যেও রুদ্রসাগরের টানে আরও পর্যটক আসবে বলে আশা রাজ্য পর্যটন দফতরের কর্তাদের। পর্যটন কমিশনার কুমার অলোক জানান, ২০১২-১৩ বছরের মধ্যে আরও একটি পর্যটক আবাস গড়ে তোলা হবে। সম্প্রতি কেন্দ্রের কাছ থেকে মিলেছে ৫ কোটি টাকা। তা দিয়ে মূলত নীর মহলের সংস্কার করা হবে। কিন্তু যাকে ঘিরে পর্যটন দফতর হাল ফেরানোর আশায় বসে সেই রুদ্রসাগর যে মজতে বসেছে। প্রথমে দরকার সেই সোনার হাঁসকে বাঁচানোর। সমস্যা আছে। তবু রুদ্রসাগরকে ঘিরে স্বপ্ন দেখা ছাড়তে নারাজ ত্রিপুরা।
পরিষেবা
• হিলটন হোটেল পা রাখছে কলকাতায়
হিলটনের হোটেল-মানচিত্রে এ বার ঢুকে পড়ছে কলকাতাও। ভিডিওকন গোষ্ঠীর হাত ধরে কলকাতায় পা রাখছে এই মার্কিন হোটেল বহুজাতিক। তবে বিলাসবহুল ব্র্যান্ড হিসেবে নয়। বাজেট হোটেলের মাধ্যমে। সল্টলেক সেক্টর ফাইভে ১৫০ ঘরের এই হোটেল তৈরি করবে ভিডিওকন-এর নির্মাণ সংক্রান্ত শাখা সংস্থা ভিডিওকন রিয়্যালটি। ভিডিওকনের পূর্বাঞ্চলীয় কর্তা গৌতম সেনগুপ্তের দাবি, এই হোটেল চালু হয়ে যাবে ২০১৩-এর মধ্যেই। প্রকল্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, হোটেলের ঘরের দরজা খোলা থেকে শুরু করে রেস্তোরাঁয় খাওয়া বা শপিং মলে কেনাকাটা সব কিছুই করা যাবে একটি মাত্র ওয়াই-ফাই কার্ডের মাধ্যমে। তথ্যপ্রযুক্তি পার্কে গড়ে উঠবে ভিডিওকনের কেন্দ্রীয় পরিষেবা কেন্দ্র। অর্থাৎ, দেশের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে থাকা পরিষেবা কেন্দ্রের মূল ভবনটি হবে এখানে। প্রায় ১০০ কোটি টাকা লগ্নিতে তৈরি এই ‘হাব’-এর দৌলতেই আবার বিভিন্ন জেলায় গড়ে উঠবে ছোট ছোট পরিষেবা কেন্দ্র।





রোজের আনন্দবাজারএ বারের সংখ্যা • সংবাদের হাওয়াবদল আপনার রান্নাঘর • খানা তল্লাশি • পুরনো সংস্করণ