ট্রফিহীন মোহনবাগানে হঠাৎ-ই ঢুকে পড়ল অবনমনের আতঙ্ক! আই লিগ থেকে নেমে যাওয়ার ভ্রুকুটি। দলের দু’জন সিনিয়র ফুটবলার জানাচ্ছেন, সোমবার সকালে গোয়ার হোটেলে করিম বেঞ্চারিফাও যে টিম মিটিং করেছেন তাতে তিনি নাকি সব ফুটবলারকে সতর্ক করেছেন। বলে দিয়েছেন, “কলকাতায় চার্চিল ম্যাচ (২১ ফেব্রুয়ারি) জিততে না পারলে আমরা বড় রকমের সমস্যার মধ্যে চলে যাব। অবনমনের জোনেও পড়ে যেতে পারি।”
সালগাওকরের কাছে হারের পর অঙ্কের হিসাবে ভাল জায়গায় নেই বাগান। লিগ টেবিলের যা অবস্থা তাতে করিমের টিম এখন রয়েছে সাত নম্বরে। কিন্তু সেটা একেবারেই স্বস্তি দায়ক জায়গা নয়। কারণ,ইচে-ডেনসনদের টিমের নীচে যে দলগুলো আছে তারা অনেক কম ম্যাচ খেলেছে। একমাত্র র্যান্টি মার্টিন্সের টিম রাংদাজিদ ছাড়া।
মোহনবাগান ১৬ ম্যাচে এখনও পর্যন্ত পেয়েছে ১৮ পয়েন্ট। সমসংখ্যক ম্যাচ খেলে রাংদাজিদের পয়েন্ট ১৩। শিলংয়ের এই দলটিই এখন লিগের লাস্ট বয়। বাগান এবং রাংদাজিদ এখন অঙ্কের বিচারে সবথেকে খারাপ অবস্থায় আছে। বাগান এবং রাংদাজিদের মধ্যে যে পাঁচটি টিম রয়েছে তারা তুলনায় অনেক কম ম্যাচ খেলেছে। এই টিমগুলি হল ইস্টবেঙ্গল (১১ ম্যাচে ১৮), ইউনাইটেড (১৫ ম্যাচে ১৮), মুম্বই এফ সি (১৪ ম্যাচে ১৬), চার্চিল ব্রাদার্স (১৪ ম্যাচে ১৩) এবং মহমেডান (১৩ ম্যাচে ১৩)।
সোমবার বেশি রাতে ফুটবলাররা কলকাতায় পৌছবেন বলে আজ মঙ্গলবার সকালে অনুশীলন রাখেননি করিম। তিনি চেয়েছিলেন বিকেলে নিজেদের মাঠে অনুশীলন করতে। কিন্তু অনূর্ধ্ব ১৯ মোহনবাগানের ম্যাচ থাকায় মাঠ পাননি বাগান কোচ। ফলে বুধবার থেকেই চার্চিল ম্যাচের প্রস্তুতি শুরু করতে চাইছেন তিনি। গোয়া থেকে ফোনে বিকেলে অবশ্য করিম বেশ হতাশ গলায় বললেন, “মাঠ না পেলে আমার কিছু করার নেই। চার্চিল ম্যাচটা আমাদের কাছে এই মুহূর্তে খুব গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ।”
ক্লাবের বর্তমান পরিস্থিতিতে পরের বার আর কোচিং করাবেন না বলে কাযর্ত জানিয়েই দিয়েছেন মোহনবাগানের মরোক্কান কোচ। কিন্তু এ বার কী হবে? করিম বললেন, “সালগাওকরের বিরুদ্ধে দেখেছেন কত গোল নষ্ট হয়েছে? গোল না করতে পারলে জিতব কী করে? ম্যাচ জিততে হবে। আমি অনুশীলন করাতে পারি, স্ট্র্যটেজি তৈরি করতে পারি। এর বাইরে আমার তো আর কিছু করার নেই।” প্রচণ্ড বিমর্ষ শোনায় বাগান কোচের গলা।
বুধবার থেকে চার্চিল ম্যাচের প্রস্তুতি শুরু করলেও ওডাফা ওকোলির মাঠে নামার সম্ভাবনা কম। করিম বললেন, “ওর চিকিৎসা চলছে। আমার মনে হয় না বুধবার অনুশীলনে নামতে পারবে। কলকাতায় গিয়ে ডাক্তার ও ফিজিওদের সঙ্গে কথা বলব। ওরা কী বলে দেখি।” ওডাফা কি পয়লা মার্চ ডার্বিতেও নামবেন না? বাগান কোচ বললেন, “এখনই বলা সম্ভব নয়, দেখতে হবে সম্পূর্ণ সুস্থ আছে কি না।”
টিমের বর্তমান অবস্থায় চিন্তিত বাগান-কর্তারা। তাদের মনেও অবনমনের ভয় ঢুকতে শুরু করেছে। তা সত্ত্বেও এখনই ফুটবলারদের ‘ধমক’ দিতে রাজি নন বাগান কর্তারা। সহসচিব সৃঞ্জয় বসু এ দিন দিল্লি যাওয়ার আগে বলে গেলেন, “আমরা বড় সভা না করে প্রতিটি ফুটবলারের সঙ্গে আলাদা আলাদা ভাবে কথা বলব। উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করব।” |