আর্মান্দোর পথের কাঁটা সেই সুভাষই
কদা ঘরের ছেলে আজ শত্রু যুবভারতীতে!
তাঁর কোচিংয়েই দশ বছর আগে শেষ বার জাতীয় লিগ জয় ইস্টবেঙ্গলের। নতুন সহস্রাব্দে তাঁর কোচিংয়েই বিদেশ থেকে ট্রফি এসেছে লাল-হলুদ তাঁবুতে (আসিয়ান)। সেই সুভাষ ভৌমিকই তাঁর ফুটবল মস্তিষ্ক নিয়ে আপাতত জিব্রাল্টারের পাহাড় ইস্টবেঙ্গল এবং তার আই লিগ জয়ের সরণির মাঝে। লাল-হলুদের এই একদা ঘরের ছেলে এ দিনও ইস্টবেঙ্গল তাঁবুর আধুনিক পরিকাঠামো, জিম দেখে দরাজ শংসাপত্র দিয়ে গেলেন ক্লাব পরিচালকদের। চার্চিল টিডি সুভাষ কর্তাদের সঙ্গে আড্ডাও মারলেন ঘণ্টাখানেক।
আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে থাকতে মঙ্গলবার যুবভারতীতে যে কোনও মূল্যে জয় চাই আর্মান্দো কোলাসোর। লাল-হলুদ অধিনায়ক মেহতাব হোসেন বলেই দিলেন, “আই লিগ পেতে গেলে চার্চিলের বিরুদ্ধে তিন পয়েন্ট চাই মঙ্গলবার। না হলে মুশকিল।” এই পরিস্থিতিতে নিউ আলিপুরের ষাটোর্ধ্ব কোচ মঙ্গলবার ঘরশত্রু বিভীষণ হয়ে লাল-হলুদ সমর্থকদের আই লিগ আনার রাস্তায় কাঁটা বিছিয়ে দেবেন, না আর্মান্দোর আই লিগ জয়ের স্বপ্নকে ডানা মেলতে সাহায্য করবেন?

ফের আই লিগ যুদ্ধে। তৈরি হচ্ছেন সুভাষ। ভাগ্যে কী আছে?
আগের সুভাষ হলে এ রকম প্রশ্নে সাংবাদিক সম্মেলনে পাল্টা সুনামি বইয়ে দিতেন। কিন্তু চার্চিল টিডি এখন অনেক কৌশলী। তাই বিকেলে লাল-হলুদ তাঁবুর সভাঘরে বসে বিনয়ের সঙ্গে বললেন, “এটাই তো জীবন। মাঠেই দেখবেন কী হয়। আর ইস্টবেঙ্গল দুর্দান্ত টিম। আর্মান্দোও শ্রদ্ধেয় কোচ। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।” কিন্তু আপনারা তো ফেড কাপ জিতেছেন? জবাবে ফের বিনয় সুভাষের গলায়, “ওটা পাঁচ ম্যাচের টুর্নামেন্ট। আর এটা লিগ।”
১১ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে এই মুহূর্তে লিগ টেবিলের অষ্টম স্থানে রয়েছে লাল-হলুদ। ১৫ পয়েন্ট নষ্ট করলেও আই লিগ জয়ের দৌড়ে যদিও পুরোদমেই রয়েছেন সুয়োকারা। আর্মান্দো বলছেন, “ফেডারেশন কাপের পর সম্পূর্ণ অন্য দল চার্চিল। ওদের হারালেই দলটা লিগ জয়ের ট্র্যাকে চলে আসবে।” মেহতাব আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে বলছেন, “চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ম্যাজিক ফিগার ৫৫। কাজেই বাকি তেরো ম্যাচ থেকে ৩৭ পয়েন্ট চাই যে কোনও মূল্যে।”
আর্মান্দোর দলের চেয়ে তিন ম্যাচ বেশি খেলে গোয়ার দলটির পয়েন্ট তেরো। তেরো দলের লিগে লেনি-শাবানারা রয়েছেন একাদশ স্থানে। কিন্তু তাতে কী? বছরের শুরুতে কোচিতে সেই ফেড কাপ চ্যাম্পিয়ন (প্রথম বার) হওয়ার পর থেকেই যাবতীয় পরিসংখ্যানকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখাচ্ছেন সুভাষ ভৌমিকের ছেলেরা। বিশেষ করে তাঁদের তিন বিদেশি। ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর মিডফিল্ডার অ্যান্থনি উলফ। আরব মুলুক দাপিয়ে ভারতে আসা মিশরীয় স্কোরার কাম স্কিমার আবদেল হামিদ শাবানা। তৃতীয় জন কোস্তারিকান ক্রিস্টিয়ান লাগোস। এই ক্যারিবিয়ান, আরব আর লাতিন মুলুকের ত্রিভুজই রক্তচক্ষু দেখাচ্ছে লাল-হলুদ রক্ষণকে। লেনি-বলবন্তদের সঙ্গে মাঝমাঠে একাধিক পাস খেলে যাঁরা চকিতে খুলে ফেলেন গোলের দরজা। দূরপাল্লার শটে যখন তখন এগিয়ে দেন দলকে। ফেড কাপের পর পাঁচ সপ্তাহ বিশ্রাম নিয়ে গোটা দলটাই রয়েছে ফুরফুরে মেজাজে। আগের ম্যাচে রাংদাজিদকে হারিয়ে মনোবলও তুঙ্গে।

চিন্তায় ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক মেহতাব। সোমবার প্র্যাকটিসের ফাঁকে।
এমনিতেই ঘরের মাঠে গোয়ার চার্চিল বড় গাঁট ইস্টবেঙ্গলের। লাল-হলুদের বিরুদ্ধে কলকাতায় শেষ জয় চার বছর আগে যখন ভাইচুং ভুটিয়া খেলতেন লাল-হলুদ জার্সি পরে। তার ওপর চোটের জন্য আর্মান্দোর রক্ষণে নেই ওপারা। চোটের কারণে অনিশ্চিত মোগাও। শ্বাসকষ্টের জন রক্ষণে নেই রাজুও। পারবেন জিততে? জবাবে চিডি বলছেন, “ওপারা থাকলে ভালই হত। কিন্তু অর্ণবরাও দুর্দান্ত। ওরা ডিফেন্স ঠিক সামলে নেবে। এ বার আমার কাজ গোল করে তিন পয়েন্ট এনে দেওয়া।” শেষ বেলায় চিডিদের জোশ বাড়াতে বেঙ্গালুরু এফসি ম্যাচে দাপুটে জয়ের কথাও মনে করিয়েছেন লাল-হলুদের গোয়ান কোচ। আর শাবানাদের প্রতি-আক্রমণ ভিত্তিক ফুটবল রুখতে তাঁর রণকৌশল জোনাল মার্কিংয়ের সঙ্গে মাঝমাঠে প্রেসিং ফুটবল। মাঝমাঠকে পোক্ত করতে ফিরছেন মেহতাব। সেই ছকেই এ দিন অনুশীলনে আর্মান্দোর ব্যাক ফোর অভিষেক, অর্ণব, গুরবিন্দর, রবার্ট। মাঝমাঠে তুলুঙ্গা, মেহতাব, সুয়োকা, ডিকা। আক্রমণে চিডির সঙ্গী লেন। গোলে কে বা মোগাকে নামাবেন কি না তা এ দিন স্পষ্ট করেননি ইস্টবেঙ্গল কোচ।
এরই মাঝে সোমবার বিকেলে বাবা হয়েছেন অ্যালভিটো। নবজাতককে দেখতে লাল-হলুদের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর মঙ্গলবার সকালেই উড়ে যাচ্ছেন গোয়ায়। তার আগে সতীর্থদের কাছে পুত্রসন্তানের জন্য গিফট হিসেবে চেয়েছেন চার্চিল বধের তিন পয়েন্ট। লিগ পকেটে পোরার তেরো সিঁড়ির প্রথম ধাপ পেরোনোর সঙ্গে জুনিয়র ডি’কুনহার জন্যও তাই জয় চাইছেন অর্ণবরা।

মঙ্গলবার আই লিগ

ইস্টবেঙ্গল:চার্চিল ব্রাদার্স (যুবভারতী, ৬-০০)

ছবি: উৎপল সরকার।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.