একমাস ধরে বন্ধ থাকার পরে আজ বুধবার থেকে ফের ডিভিসি-র ওয়াটার করিডরের কাজ শুরু হতে চলেছে। অন্তত মঙ্গলবার আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি, প্রশাসনের অধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকের পরে এমনটাই জানিয়েছে ডিভিসি।
ডিভিসির মুখ্য বাস্তুকার দেবাশিস মিত্র বলেন, “বৈঠকে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। উপস্থিত সকলেই কাজ শুরুর ব্যাপারে আশ্বাস দেওয়ার বুধবার থেকেই আমরা ওয়াটার করিডরের বন্ধ থাকা কাজ ফের শুরু করতে চাইছি।”
রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসকের দফতরে জেলা সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তথা জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, মহকুমাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মিনা, নিতুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের শান্তিভূষণ প্রসাদ যাদব, কাজে বাধা দেওয়া জমি মালিকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন দেবাশিসবাবুরা।
ডিভিসি-র একটি ইউনিটে পরীক্ষামূলক ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে কয়েক সপ্তাহ আগে। তার আগেই পাঞ্চেত জলাধার থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রে জল নিয়ে আসার জন্য পাইপলাইন পাতার কাজে (ওয়াটার করিডর) বাধা দেন কিছু এলাকার জমিদাতারা। তাঁরা দাবি করেন, কলকাতায় শিল্পমন্ত্রীর বৈঠকে কয়েক মাস আগে ডিভিসি-র কাছে তাঁরা এলাকায় সেচ ব্যবস্থা উন্নতির যে দাবি জানিয়েছিলেন, তা পূরণ না হলে ওয়াটার করিডরের কাজ শুরু করতে দেওয়া যাবে না। |
বস্তুত দলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশ আন্দোলনে থাকায় বিড়ম্বনায় পড়েছিলেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। প্রশাসন সূত্রে খবর, ঠিক হয়েছে, সেচ দফতর ওই প্রকল্পের জন্য এলাকায় সমীক্ষা করবে। তারা বিস্তৃত রিপোর্ট (ডিটেলড প্রোজেক্ট রিপোর্ট) তৈরি করে ডিভিসি-র স্থানীয় আধিকারিকদের কাছে জমা দেওয়া হবে। সেই রিপোর্ট ডিভিসি-র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।
ওই প্রকল্প তৈরি করতে দামোদর নদ থেকে জল নেওয়ার ক্ষেত্রে উচ্চ পর্যায়ের ‘দামোদর ওয়াটার রিজার্ভার রেগুলেশন কমিটি’-র অনুমোদনও দরকার।
সুজয়বাবু বলেন, “ডিভিসি-র পাঞ্চেত জলাধার তৈরি করতে জমি দিয়েও এই এলাকার মানুষ সেচের জল পান না। তাই ওই এলাকার বাসিন্দারা ডিভিসি-র কাছে সেচের ব্যবস্থা করার জন্য দাবি তুলেছিলেন।” তিনি জানান, ডিভিসি-র সঙ্গে যৌথ ভাবে ওই কাজ করবে জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতি। বুধবার শালচুড়া গ্রামে ওই প্রকল্পের শিলান্যাস করা হবে। ওয়াটার করিডরের বন্ধ থাকা কাজও শুরু করা হবে। সভাধিপতি বলেন, “কিছু ছোটখাটো দাবি নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল। বুধবার থেকে কাজ শুরু হবে।” বাধা দেওয়া জমিমালিকদের মধ্যে অন্যতম তথা তৃণমূলের স্থানীয় নেতা গোবিন্দ টুডু বলেন, “ডিভিসি, জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি আমাদের দাবি মেনেছে। তাই আর ওই কাজে বাধা দেওয়া হবে না বলে ঠিক হয়েছে।”
ওই বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রকল্পের এলাকায় মধ্যে ভালডুবি গ্রামের কাছে যে রাস্তা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ডিভিসি, সেই রাস্তা আপাতাত খুলে রাখা হবে। প্রকল্প এলাকার পাশেই ডিভিসি-র অন্য একটি রাস্তা তৈরি করবে জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতি। ওই রাস্তা তৈরির প্রাথমিক কাজ শুরু হলে তখন প্রকল্প এলাকার মধ্যে দিয়ে ভালডুবি গ্রামের দিকের রাস্তাটি বন্ধ করবে ডিভিসি।
|