মহমেডান-১ (পেন)
ইউনাইটেড স্পোর্টস-০ |
জনসমুদ্রের ভিড়ে পেটানো চেহারাটা কখনও কখনও দেখা যাচ্ছে। সাদা-কালো সমর্থকেরা তখন শূন্যে ছুড়ে নাচাচ্ছেন রহিম নবিকে! একশো কুড়ি মিনিটের ম্যাচে মহমেডানের সবচেয়ে ইউটিলিটি ফুটবলারকে এত ক্লান্ত দেখায়নি, যতটা ম্যাচ শেষে যুবভারতীর করিডর থেকে ড্রেসিংরুমে পৌঁছতে লাগল। কালো কালো মাথার ফাঁকফোকর দিয়ে শুধু বলে গেলেন, “একটা বিদেশি দল আমাদের দু’টো টিমকে হারাল, এটা মানা যাচ্ছে না। ফাইনাল কিন্তু এত সহজ হবে না।”
নবির জন্য যে উচ্ছ্বাস দেখা গেল স্টেডিয়ামে, তার দ্বিগুণ উন্মাদনা চোখে পড়ল এক বিদেশি ফুটবলারকে নিয়ে। সাদা-কালো পতাকায় মুড়ে পেন ওরজিকে ড্রেসিংরুম পর্যন্ত পৌঁছে দিলেন সমর্থকেরা। চব্বিশ বছর পরে ফের মহমেডানকে শিল্ড-ফাইনাল খেলার সুযোগ করে দিলেন যে! তাই ‘অত্যাচার’-এর মাত্রা একটু হলেও বেশি হওয়াটাই তো স্বাভাবিক। পেন অবশ্য সাদা-কালো সমর্থকদের দুশ্চিন্তা দূর করলেন তিরানব্বই মিনিটে। নবির পাস থেকে নিখুঁত ‘প্লেসমেন্ট’ যাকে বলে। ম্যাচের একমাত্র গোলদাতা বলছিলেন, “আমার একটা নীল, একটা হলুদ বুট আছে। ফেডারেশন কাপে নীল বুট পরে খেলেছিলাম বলে এখানেও নেমেছিলাম। কিন্তু এক্সট্রা টাইমে হলুদ বুট পায়ে গলাতেই গোল।” |
শিল্ড সেমিফাইনালে যে ফুটবল খেললেন পেনরা, তাতে একটা নয়, একাধিক গোলে জেতা উচিত ছিল মহমেডানের। কিন্তু যে দলে জোসিমারের মতো স্ট্রাইকার থাকে, সে দল গোলের ব্যবধান বাড়াবে কী করে? একশো কুড়ি মিনিটের ম্যাচে গোটা সাতেক গোল নষ্ট করলেন। যার মধ্যে পাঁচটা সিটার। হয়তো সে জন্যই ম্যাচের পরে র্যান্টি মার্টিন্সও বলে গেলেন, “আমাদের দলে পেনের মতো দু’একজন গেমমেকার থাকলে, ফাইনালে আমরাই খেলতাম।” র্যান্টির যুক্তি অবশ্য একেবারে ছুড়ে ফেলে দেওয়া যাচ্ছে না। মহমেডান মাঝমাঠ থেকে যে ভাবে বল সাপ্লাই করা হল, তার দশ শতাংশও ইউনাউটেড করতে পারল না। লালকমলের অভাব ঢাকা তো দূরের কথা, সামান্য বোঝাপড়া তৈরি করতেই হিমশিম রফিক-শৌভিক-আসিফরা। এমনকী ইউনাইটেড কোচ অঞ্জন নাথ মাঝমাঠে লোক বাড়িয়ে ৪-৫-১ ছকে খেললেও, কোনও লাভ হয়নি। ম্যাচ শেষে অঞ্জন নিজেও স্বীকার করলেন, “মহমেডান আমাদের চেয়ে অনেক ভাল ফুটবল খেলেছে। যোগ্য দলই জিতেছে।” এ দিকে, পেনদের পারফরম্যান্সে খুশি মহমেডান ফুটবল-সচিব ইকবাল আমেদ এ দিন দু’লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করলেন। এবং তাঁর আরও প্রতিশ্রুতি, “চ্যাম্পিয়ন হলে আরও পাঁচ লক্ষ টাকা দেব।”
এক দিন আগেই এক ইউনাইটেড কর্তা ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘ভগবান সাহসীদের সহায় হয় কি না দেখি।’ মঙ্গলবার ফুটবল-ঈশ্বর কথা রাখলেন। ইউনাইটেড ফুটবলাররা সাহস দেখাতে পারলেন না!
|