২০০ মিটার দূরেই ছিল হাসপাতাল। কিন্তু সেখান থেকে আসেনি কোনও নিশ্চিতযানও। এমনকী, খুব বেশি দূরে ছিল না থানাও। কিন্তু অভিযোগ, গলির মধ্যে পড়ে থাকা মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবতীর সদ্যোজাত শিশুকন্যার সাহায্য এগিয়ে আসেননি তাঁদের কেউ-ই। শেষমেশ এলাকার মানুষের ডাকে সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দিলেন দমকলকর্মীরা। সোমবার সকালে তাঁরাই রামপুরহাটের ভাঁড়শালা পাড়া এলাকার ওই ঘটনায় প্রসূতি-সহ সদ্যোজাত শিশুকন্যাটিকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক ঋষিকেশ ভট্টাচার্য বলেন, “প্রসূতি এতটাই মানসিক ভারসাম্যহীন যে, সন্তান প্রসব করেও কিছুই বুঝতে পারছেন না।” তিনি জানিয়েছেন, সদ্যোজাত শিশুটি সুস্থ আছে। |
স্থানীয় সূত্রে খবর, ছেঁড়া কাপড় পরে বছর তিরিশের ওই মেয়েটিকে বেশ কিছু দিন ধরে এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখা যাচ্ছিল। এ দিন সকালে স্থানীয় গরুর হাটের গলিতে তাঁকে একটি বাড়ির সামনে চিৎকার করে জল চায়তে দেখা যায়। জল খেয়ে তিনি ওই বাড়ির সামনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাড়ির মহিলারা জল দিলেও প্রথম দিকে তিনি কী কারণে অসুস্থ, তা বুঝে উঠতে পারেননি। এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই তিনি প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাতে শুরু করেন। ওই বাড়ির বধূ রিতা মণ্ডল বলেন, “আমাদের কিছু করার আগে ওই মহিলা গলির মধ্যেই একটি শিশুকন্যার জন্ম দেন। তারপরেই এলাকার ছেলেদের খবর দেওয়া হয়।” তাঁর স্বামী কানাই মণ্ডল জানান, স্থানীয় বাসিন্দারা প্রসূতি ও সদ্যোজাতকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে যোগাযোগ করেন। কিন্তু অভিযোগ সেখান থেকে কোনও সাড়া মেলেনি। এরপরেই স্থানীয় যুবক সৈয়দ আক্রম আলিরা বিষয়টি এলাকার একটি ওষুধের দোকানিকে জানান। ওষুধের দোকানের মালিক মণীশ রায় বলেন, “হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানোর জন্য ফোন করি। কিন্তু সেখান থেকে কোনও সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।” যদিও নিজেরা না এসে পুলিশ বিষয়টিকে দমকলের ঘাড়ে ঠেলে দেয়। থানা থেকে দমকলে জানানো হয়। শেষ পর্যন্ত দমকলকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রসূতি ও তাঁর শিশুকে গলিপথ থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মানসিক ভারসাম্যহীন প্রসূতির শরীরের নিম্নাঙ্গে পোড়া দাগ মিলেছে। কর্তব্যরত নার্সরা জানালেন, মহিলার শরীরের ওই অংশে গরম জল ঢেলে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। যার ক্ষতের দাগ এখনও পর্যন্ত বর্তমান। রামপুরহাট দমকল শাখার ইনচার্জ স্বপন দত্ত বলেন, “খবর পেয়েই আমাদের কর্মীরা এলাকায় পৌঁছে প্রসূতি-সহ সদ্যোজাত শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন। অথচ এই কাজটি অন্যেরা অনেক আগেই করতে পারতেন।” এ দিকে, গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করে এসডিপিও (রামপুরহাট) কোটেশ্বর রাও বলেন, “আমরা ঘটনাটি ধর্ষণ হিসেবেই দেখছি। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করবে। ওই মহিলার পরিচয় জানারও চেষ্টা চলছে।” অন্য দিকে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার কাজলকান্তি দাস বলেন, “আমি ঘটনাটি জানতাম না। খবরে পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতাম। তবে, ওই প্রসূতি আর তাঁর শিশুকন্যার চিকিৎসায় কোনও ত্রুটি হবে না।”
যদিও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে সেখানে প্রসূতিতের জন্য ‘নিশ্চিতযান’ প্রকল্পে ১০টি গাড়ি রয়েছে। এ দিন যার একটিকে কাজে লাগানো যেতেই পারত। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এ দিন সময় মতো দু’জনকে হাসপাতালে না নিয়ে গেলে বড় বিপদ হতেই পারত। রামপুরহাট জেলা হাসপাতালের সিএমওএইচ রমানাথ মাড্ডি অবশ্য বলেন, “এমনটা হওয়া উচিত ছিল না। আমাদের দশটি নিশ্চিতযান রয়েছে। তাতেই প্রসূতি আর তাঁর সদ্যোজাতকে নিয়ে আসা উচিত ছিল। ওই প্রকল্পটি তো ওই কারণেই। যাই হোক, আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
|
ক্যানসার নিয়ে
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
শিশুদের মধ্যে বাড়ছে ক্যানসার। কিন্তু এ নিয়ে যথেষ্ট সচেতনতা নেই। তাই এক কর্মসূচির আয়োজন করেছে এক বেসরকারি সংস্থা। আজ, মঙ্গলবার বিশ্ব ক্যানসার দিবসে তার সূচনা হচ্ছে। সংগঠনের পক্ষে পার্থ সরকার জানান, শহরের নানা স্কুলে অভিভাবকদের মধ্যে প্রশ্নপত্র বিলি করা হচ্ছে। তা তৈরি করেছেন ক্যানসার চিকিৎসক সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়। ওই সব প্রশ্নের উত্তরের ভিত্তিতেই চলবে পরবর্তী স্তরের সচেতনতা বাড়ানোর কাজ। |