দু’বছর তদন্ত চালানোর পরে মোটর বাইক চুরির একটি চক্রকে ধরল আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই চক্রের পাঁচ জন সদস্যকে রবিবার রাতে দুর্গাপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার এ বিষয়ে পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল আসানসোলে সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, “পাঁচ জন মোটর বাইক চোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চুরি যাওয়া ছয়টি মোটর বাইক উদ্ধার করা হয়েছে।” পুলিশের অনুমান, এই চক্রের সঙ্গে আরও অনেকে জড়িয়ে রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত পাঁচ জনের মধ্যে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, রোহন রায় ও সোমনাথ দাসের বাড়ি দুর্গাপুরের বেনাচিতিতে। তাদের সবার বয়স কুড়ি বছরের মধ্যে। এই তিনজন যুবক ‘মাস্টার কি’-এর সাহায্যে মোটর বাইক চুরি করত। তারপরে সেটি বিভিন্ন এলাকায় গ্যারেজে বিক্রি করে দেওয়া হত। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, বেনাচিতির ওই তিন যুবকের অপরাধের হাতেখড়ি এত গ্যারেজ মিস্ত্রির কাছে। ধৃত বাকি দু’জন হল দুর্গাপুর স্টেশন লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা সুরজিৎ সাহা ওরফে উজ্জ্বল ও রাজা তুড়ি। রাজার মুচিপাড়ায় একটি গ্যারেজ রয়েছে। ধৃতদের থেকে পুলিশ জেনেছে, সুরজিৎ চুরি করা মোটর বাইকগুলি রাজার কাছে বিক্রি করত। ধৃতদের মধ্যে সুরজিৎ ও রাজাকে আজ আদালতে তোলা হলে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সাল থেকে দুর্গাপুরের বেশ কিছু জায়গায় মোটর বাইক চুরি হচ্ছিল। পুলিশের কাছে এ বিষয়ে বেশ কিছু অভিযোগ জমা পড়ে। মোটর বাইক চুরির চক্রটিকে ধরার জন্য একটি বিশেষ তদন্তকারী দল তৈরি করে পুলিশ। ওই দলটি মোটর বাইক চোরেদের ধরতে দুর্গাপুর, আসানসোল-সহ আশেপাশের এলাকায় অভিযান চালায়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের মনে হয়, শিল্পাঞ্চল থেকে চুরি যাওয়া মোটর বাইকগুলি সীমান্ত পেরিয়ে ভিন রাজ্যে পাচার করে দেওয়া হচ্ছে। এর পরে নানা সূত্রকে ব্যবহার করে তদন্ত চালানোর পরে রবিবার রাতে পুলিশ অবশেষে সাফল্য পেল। সোমবার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল জানান, জেলার শিল্পাঞ্চলের কোথাও যাতে একটিও মোটর বাইক চুরি না হয় সেটা দেখতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কমিশনারেটের এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ধৃতেরা দুর্গাপুরের বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে প্রায় ১২টি মোটর বাইক চুরি করেছে। সেগুলি সবই উদ্ধার করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, শিল্পাঞ্চলের যে সব গ্যারেজ মোটর বাইক চুরির সঙ্গে যুক্ত সেগুলির তালিকা তৈরি করা হবে। গ্যারেজে নিয়মিত পুলিশি অভিযান চালানো হবে।
|