রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনে বেশ কয়েক দিন বন্ধ থাকার পরে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে উৎপাদন শুরুর কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। উল্টে, কর্তৃপক্ষ ৩০ জানুয়ারি নতুন এক নোটিস ঝুলিয়ে জানিয়ে দেন, নির্দিষ্ট সময়ে উৎপাদন শুরু করা সম্ভব নয়, শ্রমিকেরা যেন সহযোগিতা করেন। কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের কথা জেনে আশঙ্কায় দুর্গাপুরের রাতুড়িয়া-অঙ্গদপুর শিল্পতালুকের একটি বেসরকারি ইস্পাত কারখানার শ’খানেক ঠিকা কর্মী। কারখানা কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানান, দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা হচ্ছে।
ওই কারখানায় রড তৈরির আগে আকরিক থেকে প্রয়োজনীয় প্লেট বানানোর কাজ হয়। কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় মাস তিনেক আগে রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনে কারখানাটির উৎপাদন বন্ধ করে দিতে হয়। রক্ষণাবেক্ষণ শেষে ফেব্রুয়ারির শুরুতে নতুন করে উৎপাদন শুরুর পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছিল। কারখানার এক আধিকারিক জানান, সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মীরা যথা সম্ভব চেষ্টা করলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উৎপাদন শুরুর পরিস্থিতি তৈরি হয়নি এখনও। তাই কোনও ভাবে উৎপাদন চালু করা সম্ভব নয়।
|
বন্ধ কারখানা। —নিজস্ব চিত্র। |
কারখানার ঠিকা শ্রমিকদের দাবি, রক্ষণাবেক্ষণের কারণে উৎপাদন বন্ধের পরে নির্দিষ্ট সময়ে ফের কারখানা চালু না হওয়ায় তাঁরা কাজ হারানোর ভয় পাচ্ছেন। সোমবার সকালেই বেশ কয়েক জন কারখানার গেটে হাজির হন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কিছু ঠিকাকর্মীর বক্তব্য, “কর্তৃপক্ষ কারখানাটি আদৌ আর চালাতে চান কি না, আমরা সে ব্যাপারেই ভয় পাচ্ছি।”
কর্তৃপক্ষ অবশ্য কারখানা বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। এক আধিকারিক জানান, এটা সত্যি যে বাজারের অবস্থা খুব খারাপ। তবে এই মুহুর্তে কারখানা বন্ধের কোনও পরিকল্পনার কথা তাঁর জানা নেই। তিনি বলেন, “আমরা কর্মীদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। সেক্ষেত্রে এখানকার কর্মীদের সাময়িক ভাবে আমাদেরই অন্য কোনও কারখানায় কাজে পাঠানো হতে পারে।” তিনি জানান, পুরো বিষয়টি কারখানার কর্মীদের সংগঠনকেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওই কারখানার কর্মীদের যাতে কাজ হারাতে না হয়, সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছি।” তিনি জানান, কারখানায় ঠিকা শ্রমিকের সংখ্যা শ’খানেক। তার মধ্যে ৪২ জনকে ইতিমধ্যে কাজে ফিরিয়ে নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। বাকিদেরও তেমন ব্যবস্থা হয়ে যাবে বলে আশা তাঁর। |