|
|
|
|
টেট নিয়ে সিবিআই চেয়ে মামলা হাইকোর্টে
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
আরও একটি মামলা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা টেট নিয়ে। টেট-দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে এ বার সরাসরি সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন এক পরীক্ষার্থী।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা ওই পরীক্ষার্থী, অশ্রুরেখা জাটুয়া শুক্রবার তাঁর আবেদনে দাবি করেছেন যে পদ্ধতিতে টেট পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে এবং নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ বেআইনি। কেন এমন হল, তা সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করানোর নির্দেশ দিক হাইকোর্ট। আবেদনকারীর আর্জি, সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে নানা তথ্য উঠে এসেছে। সিবিআই তদন্তে সেগুলিও অন্তর্ভুক্ত করা হোক। মামলাটি আগামী সোমবার বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারের এজলাসে ওঠার কথা।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা বা টেট-এ বেনিয়মের অভিযোগ নিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে দু’টি এবং হাইকোর্টে একটি মামলা হয়েছে। হাইকোর্টে টেট নিয়ে মামলা করেছে প্রদেশ কংগ্রেস। প্রথমে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) কাছে দলের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল টেট-এ আবেদনকারীর সংখ্যা কত ছিল, কত জন পরীক্ষায় ডাক পেয়েছিলেন, কত জন সফল হয়েছিলেন, আবেদনকারীদের জমা দেওয়া ফি কোন কোন অ্যাকাউন্টে রাখা হয়েছিল ইত্যাদি। সদুত্তর না মেলায় মামলা দায়ের করা হয়।
সেই মামলার শুনানি অবশ্য এখনও শুরু হয়নি।
পাশাপাশি টেট-এর ‘দুর্নীতি’র সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের একাংশের যোগসাজশের অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। প্রাথমিক শিক্ষকতার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুবক-যুবতীরাও আলাদা ভাবে মামলা করেছেন। দুটি মামলাই একসঙ্গে শোনা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
শীর্ষ আদালতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের এই মামলার সঙ্গে এ দিন হাইকোর্টে অশ্রুরেখা জাটুয়ার আবেদনের মিল রয়েছে। আবেদনকারিণী দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি সুরঞ্জনা চক্রবর্তী-সহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে বেআইনি নিয়োগের অভিযোগ এনেছেন। বলা হয়েছে, “মাত্র এক শতাংশ পরীক্ষার্থী কৃতকার্য হয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রেই যাঁরা যোগ্য তাঁরা কৃতকার্য হতে পারেননি। শুধু কৃতকার্য হওয়াই নয়, টেট-এর পুরো পরীক্ষা ব্যবস্থাটাই নিয়ম বহির্ভূত।”
অশ্রুরেখার আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ন্যাশনাল কাউন্সিল অব টিচার্স এডুকেশন-এর (এনসিটিই) আইনে বলা হয়েছে, প্রত্যেক প্রাথমিক শিক্ষককে দুই বছরের ডিপ্লোমা (ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টারি এডুকেশন) পাশ করতে হবে। না হলে তিনি শিক্ষকতা করতে পারবেন না। ২০০৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ওই ডিপ্লোমা বাধ্যতামূলক করে দেয়। কিন্তু রাজ্য সরকার টেট-এর নিয়োগে কেন্দ্রীয় আইন বা হাইকোর্টের নির্দেশ কিছুই মানেনি বলে অভিযোগ।
টেট নিয়ে এর আগে হাইকোর্ট কী বলেছিল? ২০১২ সালের ১৯ অক্টোবর প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ যখন টেট পরীক্ষার দিন ঘোষণা করে, তখনই কয়েক জন আবেদনকারী কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ দুই বছরের ডিপ্লোমার শর্ত মানছে না। বিচারপতি প্রণব চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ যখন জানিয়েছিল যেহেতু রাজ্যে এই ডিপ্লোমাধারীর সংখ্যা কম, তাই কৃতকার্যদের দু’টি তালিকা প্রকাশ করতে হবে। একটি তালিকা ডিপ্লোমাধারী প্রার্থীদের জন্য। অন্যটি, যাঁদের ডিপ্লোমা নেই তাঁদের জন্য। ডিপ্লোমাধারীদের আগে নেওয়ার পরে শূন্য পদ থাকলে তবেই ডিপ্লোমাহীনদের নেওয়া যাবে। হাইকোর্টের এই নির্দেশ রাজ্য মানেনি বলে শুক্রবার দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টেও আবেদনকারীরা এই একই প্রশ্নে কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য শিক্ষা দফতর এবং প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, ডিপ্লোমাহীন পরীক্ষার্থীদের যে ভাবে নির্বিচারে পাশ করানো হয়েছে, সেটা দেখেও এনসিটিই চুপ করে আছে কেন।
টেট নিয়ে ওঠা বিবিধ অভিযোগ নিয়ে এ দিন রাজ্য সরকারকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। বিধাননগরে একটি শিক্ষক সংগঠনের অনুষ্ঠানে বিমানবাবু দাবি করেন, টেট নিয়ে এমন দুর্নীতি বাম আমলে দেখা যায়নি।
|
পুরনো খবর: টেট নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে জোড়া মামলা
|
মিছিলে নেই বিভাস |
টেট-দুর্নীতির প্রতিবাদে ৭ ফেব্রুয়ারি বিশিষ্টজনদের একাংশের মিছিল করার কথা। ওই মিছিলে নাট্যব্যক্তিত্ব বিভাস চক্রবর্তীর থাকার কথা বলে বৃহস্পতিবার তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছিলেন। শুক্রবার বিভাসবাবু জানান, ওই মিছিলে তিনি থাকবেন না। শিক্ষা বাঁচাও কমিটির তরফে মিছিলের আয়োজন করা হচ্ছে। |
|
|
|
|
|