গেলাংয়ের ক্লান্তি মোগাদের অক্সিজেন
ইএফএ শিল্ডকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না আর্মান্দো কোলাসো!
অথচ ক্লোজ ডোর অনুশীলন করাচ্ছেন ইস্টবেঙ্গলের গোয়ান কোচ!
মুখের কথার সঙ্গে আর্মান্দোর কাজের এত বৈপরীত্যের কারণ কী? এটা কি দলের উপর থেকে চাপ কমানোর কৌশল? না কি নিজের ফোকাসটাই ঠিক করে উঠতে পারছেন না লাল-হলুদ কোচ? তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে চিডি-মোগাদের অনুশীলনে গিয়ে দেখা গেল ইস্টবেঙ্গল তাঁবুর সব গেট বন্ধ। ভিতরে চলছে প্র্যাকটিস।
অনুশীলনের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আর্মান্দো বললেন, “আমি চাই না আমার স্ট্র্যাটেজি বা প্ল্যানিং বিপক্ষ দল জেনে যাক। তাই ‘ক্লোজ ডোর’ অনুশীলন করিয়েছি।”
কেন দরজা বন্ধ? তার ব্যাখ্যা দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই আবার পাঁচ বার ডেম্পোকে আই লিগ জেতানো কোচের মুখ থেকে বেরিয়েছে অন্য কথা। সবাইকে অবাক করে তিনি বলে দিয়েছেন “গেলাং-র বিরুদ্ধে টিম জিতুক বা হারুক, তা নিয়ে টেনশন করছি না। কারণ আমার মূল লক্ষ্য আই লিগ। সব ম্যাচ জিততে হবে এই ধারণাটার বদল চাই।”
ইস্টবেঙ্গলের গ্রুপের যা পরিস্থিতি তাতে শেষ চারে যেতে হলে আজ শনিবার সিঙ্গাপুরের গেলাং ইন্টারন্যাশনালের বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতাটা খুবই জরুরি। সেই ম্যাচের আগে শিল্ড নিয়ে আর্মান্দোর এই মনোভাব দলের উপর প্রভাব ফেলবে কি না তা সময় বলবে। তবে ন’বছর আগে— ২০০৪ এর এএফসি কাপে এই দলটির কাছে কিন্তু হারতে হয়েছিল লাল-হলুদ ব্রিগেডকে। সে সময় অবশ্য ক্লাবটির পুরো নাম ছিল গেলাং ইউনাইটেড এফসি। পরে কুসংস্কারের জন্য নাম পরিবর্তন করে গেলাং ইন্টারন্যাশনাল করা হয়।

সিঙ্গাপুরের গেলাং এফসি-র অনুশীলনে হঠাৎ আবির্ভাব
‘অন্য প্রতিপক্ষ’র। শুক্রবার ইস্টবেঙ্গল মাঠে।
ইস্টবেঙ্গল কোচ নিজেই জানাচ্ছেন, বিপক্ষ সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই। যাঁর থাকার কথা ছিল সেই সুয়োকাও অন্ধকারে। সাত বছর আগে ইস্টবেঙ্গলের জাপানি মিডিও গেলাংয়ে খেলে এসেছেন। কিন্তু কলকাতায় এ দিনই সকালে পা দেওয়া টিমের বর্তমান হেড কোচ বেদামুত্থু কানন ছাড়া কাউকেই চিনতে পারছেন না সুয়োকা। নিজের প্রাক্তন টিম সম্পর্কে কোনও ধারণাই নেই তাঁর। বললেন, “গেলাং সিঙ্গাপুরের অন্যতম শক্তিশালী টিম। আর কানন বেশ ভাল কোচ।”
সুয়োকা গেলাং টিম সম্পর্কে নিজের দলকে কোনও তথ্য না দিতে পারলেও, আজ শনিবার যুবভারতীতে সিঙ্গাপুরের ক্লাবটির মুখোমুখি হওয়ার আগে বেশ কিছু সুবিধা পেয়ে যাচ্ছেন আর্মান্দো।
নতুন মরসুমের অনুশীলন ২ জানুয়ারি থেকে শুরু করেছে গেলাং। তাই এখনও তেমন বোঝাপড়া গড়ে ওঠেনি। অনুশীলন দেখে সেটাই মনে হয়েছে।
ভিসা ও টিকিট সমস্যায় জেরবার হয়ে বৃহস্পতিবার সকালেই শহরে এসেছে গেলাং। আসার সময়ে পনেরো-ষোলো ঘণ্টা সিঙ্গাপুর এবং ব্যাঙ্কক বিমান বন্দরে কাটাতে হয়েছে তাদের। ফলে পুরো দলটাই ক্লান্ত।
ঘরের মাঠের সুবিধা পাবে ইস্টবেঙ্গল।
যুবভারতীর কৃত্রিম ঘাসের মাঠ সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই গেলাংয়ের। আর এই সুবিধাগুলোকে কাজে লাগিয়েই তিন পয়েন্ট পেতে মরিয়া জেমস মোগারা। অনুশীলনের পর মোগা বললেন, “গেলাংকে হারিয়ে তিন পয়েন্ট পেতেই হবে। নয়তো শিল্ডেও সমস্যায় পড়তে হবে।” মোগার সুর মেহতাব হোসেনের গলাতেও। লাল-হলুদ অধিনায়ক বললেন, “গেলাং সম্পর্কে আমাদের কোনও ধারণা নেই। তবে সবাই নিজের সেরাটা দিয়ে জেতার জন্য মুখিয়ে আছি।”
বৃহস্পতিবার সকালে ক্লোজ ডোর অনুশীলনে আর্মান্দো জোর দিয়েছেন সিচুয়েশন প্র্যাকটিসের উপর। একই সঙ্গে বক্স টু বক্স আক্রমণের স্ট্র্যাটেজিও বুঝিয়ে দিয়েছেন। তবে লাল-হলুদ শিবিরের চেনা সেই ফুরফুরে ভাবটা যেন উধাও হয়ে গিয়েছে। কলকাতা লিগের ডার্বিতে হার, ফেড কাপে ব্যর্থতা, শিল্ডের শুরুতেই ধাক্কা-- ফুটবলাররা কেমন যেন চাপে।

বিপক্ষ অধিনায়কের সঙ্গে আজ মাঠে দেখা হবে। ছবিতে আগাম
শুভেচ্ছা জানিয়ে গেলেন গেলাংয়ের স্ট্রাইকার লিওনেল ফেলিস।
আর্মান্দো বিপক্ষ সম্পর্কে না জানলেও, গেলাংয়ের ভারতীয় বংশোদ্ভূত কোচ কাননের অবশ্য ইস্টবেঙ্গল সম্পর্কে ধারণা রয়েছে। এ বছরের এএফসি কাপে ট্যাম্পাইন রোভাসের্র বিরুদ্ধে মেহতাবদের ম্যাচ দেখেছেন তিনি। সেই ম্যাচের কথা ভেবেই নিজের স্ট্র্যাটেজি সাজাচ্ছেন। গেলাং টিমে তিন জন আর্জেন্তিনীয় এবং দু’ জন জাপানি ফুটবলার রয়েছেন। আর্জেন্তিনার স্ট্রাইকার লিওনেল ফেলিসই মূল অস্ত্র গেলাংয়ের। আর্জেন্তিনার আর এক ফুটবলার ফ্র্যাঙ্কো সিভিলোর উপর ভার থাকছে ইস্টবেঙ্গলের মাঝমাঠের সঙ্গে আক্রমণ বা রক্ষণের যোগসূত্র ছিন্ন করার। গেলাংয়ের বাকি তিন বিদেশিই ডিফেন্ডার। এ দিন বিকেলে ইস্টবেঙ্গল মাঠে হাল্কা অনুশীলনের পর কানন বললেন, “আমার টিম সবে প্র্যাকটিস শুরু করেছে। এস লিগ শুরুর আগে আমি টিমটাকে দেখে নিতে চাই কী অবস্থায় আছে। একই সঙ্গে আমার লক্ষ্য শিল্ড জিতে মরসুম শুরু করা।”
এখন দেখার ক্লান্ত, আগোছাল গেলাংকে হারিয়ে ইস্টবেঙ্গল শিল্ডের শেষ চারের দিকে পা বাড়াতে পারে কি না?

শনিবারে আইএফএ শিল্ড

ইস্টবেঙ্গল: গেলাং, সিঙ্গাপুর (যুবভারতী, ৩-১৫),
ইউনাইটেড: সানমুন, দক্ষিণ কোরিয়া (যুবভারতী, ৬-৩০)।

ছবি: উৎপল সরকার।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.