|
|
|
|
রোজ গরু চুরি ঠেকাতে রাতপাহারা কুমারগ্রামে
রাজু সাহা • শামুকতলা |
বুধবার মাঠ থেকে এনে সন্ধ্যায় সাতটি গরুকে গোয়াল ঘরে ঢুকিয়ে গিয়েছিলেন কুমারগ্রামের পূর্ব চকচকার কৃষক কালাচাঁদ বর্মন। বৃহস্পতিবার সকালে গিয়ে দেখেন গোয়ালঘরের পিছনে বেড়া ভাঙা, একটি গরুও নেই। একই ভাবে সম্প্রতি টটপাড়া গ্রামের হরি সরকারের তিনটি, স্বপন দাসের চারটি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। গত এক মাসে ডুয়ার্সের পূর্ব চকচকা ও টটপাড়া গ্রাম থেকে চুরি হয়েছে ৩৫টি গরু। তাই অনেকেই রাত জেগে গোয়াল ঘর পাহারা দিচ্ছেন। পর পর চুরির ঘটনায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা সম্প্রতি শামুকতলা রোড ফাঁড়িতে গরু নিয়ে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। |
|
গরু নিয়ে অবরোধ। —ফাইল চিত্র। |
কয়েক মাস আগে চেপানি গ্রামে খেত থেকে বেগুন ও কপি চুরি হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত আরজি পার্টি গড়ে রাত পাহারা দিতে শুরু করার পর এক চোর ধরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। এর পর ওই ফসল চুরি বন্ধ হয়ে যায়। এ বার শুরু হয় গরু চুরি। গ্রামবাসীরা জানান, টটপাড়া, পশ্চিম চেপানি এবং পূর্ব চকচকা গ্রামের বুক চিরে চলে গেছে ৩১সি জাতীয় সড়ক। এই গ্রামগুলি থেকে অসম সীমানা ১৫ কিলোমিটার, বাংলাদেশ বা ভূটান সীমান্ত ৪০ কিমি। গাড়িতে উঠিয়ে জাতীয় সড়ক পথে অসম, ভূটান বা বাংলাদেশ সীমান্তে নিয়ে যেতে পারলেই কাজ হাসিল। গ্রামবাসীদের সন্দেহ, গরুগুলি গোয়াল ঘর থেকে বের করে জাতীয় সড়ক পর্যন্ত নিয়ে আসার ব্যাপারে বাইরের চোরেদের সঙ্গে স্থানীয় দুষ্কৃতীদেরও যোগসাজশ রয়েছে। স্থানীয়দের সাহায্য ছাড়া এ ভাবে গরু চুরি সম্ভব নয়। সম্প্রতি স্বপন দেবনাথ নামে এক বাসিন্দার গরু চুরি করতে গিয়ে ব্যর্থ হয় চার জনের একটি দুষ্কৃতী দল। তারা প্রত্যেকেই কালো পোশাক ও কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে আসে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। আলিপুরদুয়ারের এই প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া বলেন, মাঝে মধ্যে দু’একটি গরু চুরির অভিযোগ পাওয়া যায়। কিন্তু পাশাপাশি কয়েকটি গ্রাম থেকে কয়েক দিনের মধ্যে এতগুলি গরু চুরির ঘটনা প্রথম। তাই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।” পুলিশ জানায়, গরু চুরি রুখতে থানাগুলিতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। আর জি পার্টি গড়ে রাত পাহারার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পুলিশও তাদের সাহায্য করবে।
গোয়াল ঘর থেকে গরু বের করা হচ্ছে অথচ গ্রামবাসীরা তার টুঁ শব্দটি পাচ্ছেন না কেন?
গ্রামবাসীদের সন্দেহ, গোয়াল ঘর বের করার সময়ে গরুগুলির আওয়াজ করাটা স্বাভাবিক। সম্ভবত চুরি করার আগে গরুর মুখে বাঁশের তৈরি টোপা লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মুখে টোপা থাকায় চোরেরা চুপিসারেই গরু নিয়ে যেতে পারছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, থানায় জানালেও পুলিশ গরু চুরি রুখতে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। প্রতি রাতে গরু চুরির ঘটনা ঘটে চলেছে। স্থানীয় বাসিন্দা কালাচাঁদ বর্মন, স্বপন দাস, হরি সরকারদের কথায়, “এ ভাবে একের পর এক গরু চুরি হতে থাকায় আমরা অসহায়। দ্রুত পুলিশকে সক্রিয় হওয়ার আর্জি জানিয়েছি।” |
|
|
|
|
|