|
|
|
|
প্রাক্তনীদের নিয়ে জমাটি আড্ডা আদর্শ বিদ্যাভবনে
সব্যসাচী ঘোষ • মালবাজার |
শিকড়ের টানে ওঁরা আবার এক জায়গায়, একই গণ্ডিতে দিনভর।
১৯৫১ সালের পর ফের স্কুলে পা রাখলেন রবীন্দ্রনাথ বসু। স্কুলে ঢুকেই খুঁজে পেলেন কয়েক ক্লাস নীচে থাকা মণীন্দ্রনাথ সরকারকে। ওঁদের দেখে এগিয়ে এলেন চিত্তরঞ্জন কর। এ ভাবে ২৩ জানুয়ারি সারা দিনটা ছেলেবেলার স্কুলে কাটিয়ে গেলেন সকলে। ১৯৪৮ সালের ২৩ জানুয়ারি মালবাজারের আদর্শ বিদ্যাভবনের পথা চলা শুরু। স্কুলের প্রতিষ্ঠাদিবসে এ বার পুনর্মিলন উৎসবের আয়োজন করেছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। এতে যোগ দেন ২৭৫ জনের মতো স্কুলের নানা ব্যাচের প্রাক্তনীরা।
রবিবাবু অশীতিপর। মালবাজারেই থাকেন। তিনি বলেন, “স্কুলের টান আর পুরানো বন্ধুদের দেখা পেয়ে যাব ভেবেই চলে এসেছি।” শিলিগুড়ি পুরসভার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী দেবাশিস মুখোপাধ্যায় সাতসকালেই এসেছিলেন আদর্শ বিদ্যাভবনে। ৭০-এর দশকে স্কুল থেকে পাশ করে শিলিগুড়িতে চলে যান তিনি। তার পর আর স্কুলে আসেননি। এ বারে স্কুলে পা রেখেই তখনকার সঙ্গী দিলীপ দত্তকে খুঁজে পেলেন। জমিয়ে দিনভর আড্ডা দিলেন দু’জন। ওঁদের থেকে ছোট হলেও ১৯৮৯ সালে স্কুল থেকে পাশ করে জলপাইগুড়ি চলে যান কুন্তল বসু। এত দিন বাদে স্কুলে পা রেখে খুঁজে পান সহপাঠী দীপঙ্কর সরকার ও মৃগাঙ্ক চক্রবর্তীকে। ধৃতিমান রাহা আরও এক বার নিজের ক্লাসরুমে খুঁজতে গিয়ে সহপাঠী দেবায়ন মুখোপাধ্যায়, শুভঙ্কর বিশ্বাসের দেখা পেয়ে গেলেন। দুপুরে সকলে একসঙ্গে ডাল, আলু ভাজা, ডিমের ঝোল দিয়ে ভাত খাওয়া। দিনভরই চলে হাসিঠাট্টা, মজা করা।
মহকুমাশাসক জ্যোতির্ময় তাঁতিও স্কুলের আমন্ত্রণে স্কুলে এসেছিলেন। সর্বশিক্ষা মিশনের সাহায্যে ৪টি নতুন ভবন এ দিন উদ্বোধন হয়। প্রাক্তনীদের মধ্যে থেকে ১৩০ বছরেরও বেশি পুরানো স্কুলের মূল দোতলা ভবনকে হেরিটেজের তকমা দেওয়ার দাবিও ওঠে। তাঁরা জানান, ব্রিটিশ আমলে পুলিশদের কুঠি হিসাবে এই ভবন ব্যবহার করা হত। স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের তরফে প্রাক্তনীদের আশ্বস্ত করে বিষয়টি দ্রুত হেরিটেজ কমিশনে জানানোর কথাও বলা হয়।
তবে বিদায়ের বেলায় অনেকেই চোখে জল। কয়েকজন প্রবীণ বলেন, “আগামী বছর অবধি বেঁচে থাকলে আবার দেখা হবে।” আবেগের ছাপ ছিল কমবয়সীদের চোখে-মুখেও। পর পর এমন ঘটনা দেখে আনন্দে চোখের জল সামলাতে পারেননি প্রধানশিক্ষক সুশান্তকুমার দত্ত। স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক তপন দাসও তাই এ দিন ঘোষণা করে দিলেন, এ বার থেকে স্কুলের প্রতিষ্ঠাদিবসে প্রতি বছর পুনর্মিলন অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে। |
|
|
|
|
|