|
|
|
|
অনুমতি ছাড়াই স্কুলের মাঠে মেলা, অভিযোগ
সংগ্রাম সিংহ রায় • শিলিগুড়ি |
স্কুল কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই স্কুলের মাঠে মেলার আয়োজনের অভিযোগ উঠল। মেলার উদ্যোক্তাদের মধ্যে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরাই রয়েছেন প্রথম সারিতে। শিলিগুড়ি পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। সেখানে মাস্টার প্রীতনাথ হাইস্কুলের মাঠে ‘উত্তরায়ণ’ উৎসব নাম দিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অনুমতি নিয়ে মেলার আয়োজনের অভিযোগ করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। এ দিকে উৎসবের আমন্ত্রণ পত্রে ছাপা অতিথিদের অধিকাংশই তাঁদের অনুমতি নেওয়া হয়নি বা কী ধরণের উৎসব তা জানেন না বলে দাবি করেছেন। যেমন, শিলিগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য অথবা শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত থেকে ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর কৃষ্ণ পালও দাবি করেছেন, উদ্যোক্তারা সকলকেই অন্ধকারে রেখে উৎসবের আয়োজন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ওই ওয়ার্ডে পুরসভার ওয়ার্ড উৎসব ফি বছরই হয়। তৃণমূল কাউন্সিলর কৃষ্ণবাবুর উদ্যোগেই তা হয়ে থাকে। এবারও ২৬ জানুয়ারি থেকে ওই ওয়ার্ডে ‘নব আনন্দ’ শীর্ষক উৎসব হবে পুরসভার পক্ষ থেকে। তা চলবে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রায় একই সময়ে তৃণমূলের স্থানীয় কয়েকজন নেতার উদ্যোগে পাল্টা উৎসব করার আড়ালে গোষ্ঠী কোন্দল দেখছেন দলের অনেকেই। তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, কৃষ্ণবাবুর বিরোধী গোষ্ঠী আড়াল থেকে ওয়ার্ডে উৎসবের পাল্টা অনুষ্ঠান করছে। যদিও উত্তরায়ণ উৎসব কমিটির দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের বিষয়টি ভিত্তিহীন এবং তাঁরা অনুমতি নিয়েই মেলা করছেন। বিষয়টি নিয়ে কৃষ্ণবাবুর মন্তব্য, “ওয়ার্ড উৎসবের সময়ে আরেকটা উৎসব হতেই পারে। এতে আপত্তি নেই। গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের ব্যাপারও নেই।”
প্রীতনাথ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ গুহের অভিযোগ, “আমাকে উৎসব কমিটির পক্ষ থেকে একটি অনুষ্ঠানের জন্য চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছিল গত সপ্তাহে। তাতে ২৪ থেকে ২৭ জানুয়ারি স্কুল মাঠে উৎসব হবে বলে লেখা ছিল। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে ভেবে আমরা বিশেষ আপত্তি করিনি। তার পরে শিলিগুড়ির বাইরে চলে যাই। বৃহস্পতিবার ফিরে দেখি, স্কুল মাঠে নাগরদোলা সহ মেলার পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে।” এতে স্কুলের পঠনপাঠনে ব্যাঘাত ঘটার পাশাপাশি মেয়েদের সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন প্রধান শিক্ষক। স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক নিখিল গুহ বলেন, “আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। পরে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে আমি বিষয়টি জেনেছি। আমাদের স্কুলের বেশির ভাগই ছাত্রী। ফলে স্কুল খোলা রাখলে সমস্যা হতে পারে। এখন ছুটি না থাকায় মেলার জন্য বন্ধ রাখাও যুক্তিযুক্ত হবে না। কী করা হবে বুঝতে পারছি না।”
অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর তথা তৃণমূলের জেলা মহাসচিব কৃষ্ণ পাল। তিনি বলেন, “আমাকে নিমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। তাতে আমার নাম বিশেষ অতিথির তালিকায় দেখেছি। এ ছাড়া কিছু জানি না। আমার অনুমতি নেওয়া হয়নি।” মেলা কমিটির আহ্বায়ক কল্যাণ রাহা বলেন, “সকলের কাছেই অনুমতি নিয়েই মেলা ও অনুষ্ঠান করছি। কেন এমন অভিযোগ উঠছে বুঝতে পারছি না।”
বিশেষ অতিথির তালিকায় থাকা শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য স্কুল বন্ধ করে মেলা বা উৎসব করার বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, স্কুল বন্ধ করে ম্যারাথনের বিরুদ্ধে আমি। এরকম হলে আমি ওই অনুষ্ঠানে যাব কিনা তা বিবেচনা করে দেখব।” অতিথি তালিকার অন্যতম শিলিগুড়ির মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত তাঁর নাম থাকার বিষয়টিও কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমার সঙ্গে কারও এ বিষয়ে কোনও কথা হয়নি।” অতিথির তালিকায় নাম রয়েছে অনেক নেতা ও কাউন্সিলরের নামই। তাঁদের কেউই উৎসবের আড়ালে কী হচ্ছে জানেন না বলে জানান।
শিলিগুড়ি পুরসভায় এই সময় বিভিন্ন ওয়ার্ডে পুরসভার উদ্যোগে উৎসব চলে। উত্তরবঙ্গ জুড়ে চলছে উত্তরবঙ্গ উৎসবও। একই সময়ে এরকম আরও একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করার পিছনে গোষ্ঠী কোন্দলই রয়েছে বলে অবিযোগ উঠেছে দলের অন্দরেই। জেলা তৃণমূল নেতা প্রতুল চক্রবর্তী বলেন, “তৃণমূলের একটিই গোষ্ঠী। দ্বন্দ্বের কোনও প্রশ্ন নেই। |
|
|
|
|
|