|
|
|
|
ধর্ষিতার ঘরের দরজাটাই খুলে নিলেন দময়ন্তী
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
নিতান্তই সাদামাঠা একটি কাঠের দরজা। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে মধ্যমগ্রামে গণধর্ষণ এবং লাঞ্ছিতা কিশোরীর মৃত্যুরহস্যের তদন্ত নেমে ডিআইজি (সিআইডি) দময়ন্তী সেন বৃহস্পতিবার সেই দরজার আস্ত দু’টো পাল্লাই খুলে নিয়ে এসেছেন।
দু’বার গণধর্ষণের পরে আগুনে পুড়ে ওই কিশোরীর মৃত্যুরহস্য উদ্ঘাটনে কাঠের দরজাটি এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল কেন?
আর জি কর হাসপাতালে মৃত্যুর পাঁচ দিন আগে কিশোরীটি পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেছিল, তার গায়ে আগুন ধরিয়ে রতন ও মিন্টা নামে দুই যুবক বাইরে থেকে দরজার ছিটকিনি আটকে দেয়। কিন্তু এই জবানবন্দি এবং মেয়েটির মায়ের বক্তব্যের মধ্যে অসঙ্গতি ধরা পড়ে। নির্যাতিতা কিশোরীর মা প্রথমে বলেছিলেন, তাঁর মেয়ে যখন জ্বলছিল, তখন ঘরের দরজা ছিল ভিতর থেকে বন্ধ। তিনি এবং অন্য কয়েক জন মিলে বাইরে থেকে ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলে মেয়েকে উদ্ধার করেন। পরে অবশ্য মেয়েটির মা এই বক্তব্য থেকে সরে এসে জানান, তিনি সেই সময়ে বিষয়টি ঠিক বুঝে উঠতে পারেননি। দরজা বাইরে থেকেও বন্ধ থাকতে পারে বলে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন তিনি। |
|
—নিজস্ব চিত্র। |
খোদ নিগৃহীতার জবানবন্দি এবং তাঁর মেয়ের দু’রকম বক্তব্যে ধন্দে পড়েছেন তদন্তকারীরা। সেই ধন্দ নিরসনের দন্যই দরজা-রহস্য ভেদ করাটা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে তদন্তকারীদের কাছে। কারণ, সত্যিই যদি দরজার ছিটকিনি বাইরে থেকে বন্ধ করা থাকে, তাতে মেয়েটির জবানবন্দির সত্যতাই প্রমাণিত হয়। আবার ছিটকিনি ভিতর থেকে বন্ধ থাকলেও তা বাইরে থেকে টেনে কোনও ভাবে বন্ধ করা যায় কি না, সেটা খতিয়ে দেখাও বিশেষ প্রয়োজন। সেই জন্যই এ দিন সকাল ১০টায় বিমানবন্দর এলাকায় মতিলাল কলোনিতে কিশোরীদের সেই ভাড়ার বাড়িতে গিয়ে দরজার দু’টি পাল্লাই কব্জা থেকে খুলে নেওয়া হয় বলে সিআইডি সূত্রের খবর।
কিশোরীর মৃত্যুর পরে তার বাবা-মা ওই ভাড়ার বাড়ি ছেড়ে বিহারের গ্রামে চলে গিয়েছেন। আপাতত ওই বাড়ির দরজার পাল্লা দু’টির প্রতিটি অংশের খুঁটিনাটি পরীক্ষা চলছে। দরজাটির ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হবে বলে জানায় সিআইডি। এক তদন্তকারী জানান, এ দিন ওই কিশোরীর ঘর থেকে কিছু নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই বাড়ির দুই বাসিন্দা-সহ মোট ১৬ জনকে প্রাথমিক ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। তদন্তকারীরা জানান, মেয়েটির বাবা-মায়ের অভিযোগ, গণধর্ষণের ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পরে পড়শিরা নানা ভাবে মেয়েকে হেনস্থা করেছিলেন। ঘটনার দিন (গত ২৩ ডিসেম্বর) কলে জল আনার সময়ে কয়েক জন মহিলা তাকে অপমান করে বলে অভিযোগ। এই অভিযোগ সত্য কি না, বিস্তারিত ভাবে তা জানার জন্যই পড়শিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে সিআইডি সূত্রে জানানো হয়। |
|
|
|
|
|