|
|
|
|
অপহৃত দীপকে উদ্ধারের দাবিতে ফের মিছিল ইন্দাসে
নিজস্ব সংবাদদাতা • ইন্দাস |
মিজোরামে কাজে গিয়ে অপহৃত বাঁকুড়ার ইন্দাসের যুবক দীপ মণ্ডলকে উদ্ধারের দাবিতে ফের সরব হলেন তাঁর বন্ধু, শিক্ষক, ব্যবসায়ী থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার প্ল্যাকার্ড হাতে এলাকায় মিছিল করলেন তাঁরা। কিছুক্ষণ থানার সামনে রাস্তা অবরোধও করেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে দীপকে উদ্ধার করতে প্রশাসন ব্যর্থ হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা।
দিল্লির একটি বেসরকারি টেলিকম সংস্থার কর্মী দীপ মিজোরামের মামিত জেলার ডাম্পারেংপুই গ্রাম এলাকায় মোবাইল টাওয়ার বসানোর জন্য সমীক্ষা চালাতে গিয়ে নিখোঁজ হন। পরে জানা যায়, তাঁর সঙ্গী দুই গাড়ি চালক-সহ তাঁকে জঙ্গিরা অপহরণ করেছে। তাঁকে মুক্তির বিনিময়ে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ চেয়েছে জঙ্গিরা, বাড়ির লোকেদের সঙ্গে কথা বলে, দীপ সে কথা জানিয়েছেন। কিছু দিন আগে দুই মিজো চালককে জঙ্গিরা মুক্তি দিলেও দীপকে ছাড়েনি। এতদিন পরেও বাড়ির ছেলের কোনও খোঁজ না পেয়ে উদ্বিগ্ন ইন্দাসের দিবাকরবাটির মণ্ডল পরিবার। উদ্বিগ্ন তাঁর কলেজের বন্ধু থেকে শিক্ষক, পড়শিসকলেই। আন্দোলনকারীদের তরফে বিশ্বজিৎ কুণ্ডু বলেন, “দীপের মুক্তির ব্যাপারে শুক্রবার থেকে ইন্দাসের পীরতলায় আমরা ধর্না অনশনে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শনিবার এলাকায় বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে।” |
|
বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র। |
পরিবার সূত্রের খবর, গত বছর ইন্দাস কলেজ থেকে বিএ পাশ করে দীপ কলকাতায় সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়র পিসতুতো দাদা অর্ণব মণ্ডলের কাছে কাজ শিখে টেলিকম সংস্থায় যোগ দেন। পুজোর সময় বাড়িতে এসেছিলেন। পরে ওই সংস্থা তাঁকে গুয়াহাটি যেতে বলে। ভাইফোঁটার দিন গত ৫ নভেম্বর দুপুরে বাড়িতে খেয়ে দীপ গুয়াহাটি রওনা দেন। গত ২১ নভেম্বর সেখান থেকে তিনি মিজোরামের মামিত জেলায় যান মোবাইল টাওয়ারের কাজে।
এ দিকে, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ইন্দাস বাজার থেকে দীপের মুক্তির দাবিতে প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিল শুরু হয়। পরে থানার সামনে ইন্দাস-রসুলপুর রাস্তা অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে। মিছিল গোটা ইন্দাস এলাকা প্রদক্ষিণ করে। বন্ধু মানস রায়, বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য, ইন্দাস হাইস্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক পাঁচুগোপাল আদিত্য, শিক্ষক ওঙ্কার প্রসাদ সিংহদেব বলেন, “দীপকে এতদিন ধরে জঙ্গিরা আটকে রেখেছে। অথচ তাঁর সঙ্গেই যে দু’জন চালককে অপহরণ করেছিল, তাঁদের ছেড়ে দিয়েছে ওরা। ওকে উদ্ধার করাটা প্রশাসনের কর্তব্য। তাই দলমত নির্বিশেষে সকলে সরব হয়েছি।” মিছিলে সামিল দীপের একমাত্র বোন মধুমন্তী বৃহস্পতিবার বলেন, “গত এক মাসের মধ্যে দাদা বেশ কয়েকবার ফোন করেছিল। বুধবার সকাল ১১টার সময় দাদার সঙ্গে প্রায় আধ ঘণ্টা আমাদের কথা হয়েছে। দাদা প্রচণ্ড কান্নাকাটি করছিল। বলছিল, ‘ওরা আমাকে খুব মারধর করছে। আমি চলতে পারছি না। তার পরেও ঘন ঘন জায়গা বদলের জন্য আমাকে জঙ্গলের পাহাড়ি পথে হাঁটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।” বাবা নিখিল মণ্ডল বলেন, “জঙ্গিরা দীপকে দিয়ে ফোন করিয়ে এখনও টাকা দাবি করে যাচ্ছে। কিন্তু কত টাকা, কোথায় কাকে দিতে হবে সে সব কিছুই বলছে না। দীপকে উদ্ধারের ব্যাপারে প্রশাসন সক্রিয় ভূমিকা নিক এটাই চাইছি।”
ইন্দাসের বিডিও পুষ্পেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আগেই জানানো হয়েছে। বন্ধ না করার জন্য আন্দোলনকারীদের কাছে অনুরোধ করা হচ্ছে।” বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, “দীপ মণ্ডলের উদ্ধারের ব্যাপারে মিজোরাম পুলিশের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখা হয়েছে। তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে ওখানকার পুলিশ জানিয়েছে।” |
|
|
|
|
|