হুঁশ ফেরেনি, মোবাইল কানে খড়্গপুরে ট্রেনের নীচে প্রৌঢ়
ন্ধ রেলগেট খোলার অপেক্ষা না করে জীবনের কয়েক মিনিট সময় বাঁচাবেন বলে ভেবেছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। কানে মোবাইল নিয়ে খড়্গপুরের খরিদা রেলগেট পেরোনোর সময় ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক প্রৌঢ়ের। মৃতের নাম রবীন চৌধুরী (৫৫)। তিনি কলকাতার সল্টলেকের বাসিন্দা। পেশায় বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তারক্ষী রবীনবাবু কর্মসূত্রে খড়্গপুরের মালঞ্চ এলাকায় থাকেন। এ দিন রেললাইন পার হওয়ার সময় হাওড়াগামী পুরুলিয়া এক্সপ্রেসের ধাক্কায় তাঁর মৃত্যু হয়।
খবরের কাগজে রেলের বিজ্ঞাপন, রেলগেটের সামনে সতর্কবার্তা থেকে সচেতনতা শিবির-এসব হলেও বাস্তবে ছবিটা বদলায়নি। তাই অসচেতনতার খেসারত দিয়ে প্রায়শই এধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। শুধুমাত্র রেলগেট নয়, স্টেশনে ওভারব্রিজ থাকা সত্ত্বেও দ্রুত প্ল্যাটফর্ম পেরনোর জন্য লাইন টপকে যাতায়াতও চলছে অবাধেই। খড়্গপুর রেল ডিভিশনের সিনিয়র নিরাপত্তা অফিসার শুকদেব মাহাতো বলেন, “রেলের পক্ষ থেকে মাঝে-মধ্যেই যাত্রী নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতা শিবির আয়োজন করা হয়। রেলগেটের প্রহরীরা পথচারী মানুষদের ঝুঁকি নিয়ে রেলগেট পার হতে নিষেধও করেন। কিন্তু কেউই তা না মানায় দুর্ঘটনা আটকানো শক্ত।”
দুর্ঘটনা থেকেও শিক্ষা হয়নি। খড়্গপুরের ঝুঁকি নিয়েই চলছে পারাপার। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
খড়্গপুর রেল ডিভিশনে এক্সপ্রেস, প্যাসেঞ্জার ও মেমু মিলিয়ে দিনে প্রায় ১৫৭ জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করে। এই ডিভিশনে মোট ৪৪০টি রেলগেট রয়েছে। ডিভিশনের সদর রেলশহর খড়্গপুর দীর্ঘতম জংশন স্টেশন। তাই শহরের তিনদিকই রেলপথে ঘেরা। সম্প্রতি শহরের আইআইটি সংলগ্ন পুরীগেটের রেল ক্রসিংয়ে চালু হয়েছে উড়ালপুল। তবে শহরের প্রাণকেন্দ্র খরিদা, গিরিময়দান ও গ্রামীণের দীঘাগামী সড়কের বেনাপুরের রেলগেটে এখনও কোনও উড়ালপুল গড়ে ওঠেনি। ফলে ওই সমস্ত রেলগেটে যানজট অব্যাহত। এর মধ্যেই গিরিময়দান থেকে গোকুলপুর পর্যন্ত অংশে দ্বিতীয় লাইন চালু হওয়ায় দিনের বেশিরভাগ সময়েই ব্যস্ততম খরিদা ও গিরিময়দানের রেলগেট বন্ধ থাকে। দীর্ঘক্ষণ রেলগেট না খোলায় ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে মানুষের। এই পরিস্থিতিতে যানজট এড়াতে কে কার আগে যাবে সেই প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিনও রবীনবাবুর কানে মোবাইল থাকায় তিনি ট্রেনের আওয়াজ শুনতে পাননি।
বন্ধ রেলগেট পেরনো আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। নিয়মিত ধরপাকড়ের অভাবে তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মানা হয় না বলে স্থানীয়দের দাবি। খড়্গপুর রেল পুলিশের আইসি আশিস রায় বলেন, “আমরা কিছুদিন আগেই সচেতনতা শিবির করেছি। এ ছাড়া আইন কার্যকর করতে মাঝে-মধ্যে জরিমানা বা ধরপাকড় করা হয়। তবে আমাদের সর্বত্র মোতায়েন করার মতো অত কর্মী নেই। তাই মানুষকেও সচেতন হতে হবে।”
খরিদার বাসিন্দা প্রণবকুমার দাম, মালঞ্চর বাসিন্দা খোকন রাউতের কথায়, “মানুষকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। এছাড়া যানজট এড়াতে খরিদায় উড়ালপুল গড়ে তোলাও প্রয়োজন।” খড়্গপুরের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ইতিমধ্যেই ওই এলাকায় একটি উড়ালপুল করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে উড়ালপুলের একটি নকশাও তৈরি করা হয়েছে। এনিয়ে রাজ্য সরকার ও রেলের আলোচনা হবে। আশা করছি, খুব শীঘ্রই খরিদা উড়ালপুলের কাজ শুরু হবে। তদুর্ঘটনা কমাতে সচেতনতা বাড়ানোই বেশি প্রয়োজন, তা বলাই বাহুল্য।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.