|
|
|
|
জনমত সমীক্ষা, মোদী-ঝড়ের ইঙ্গিত উত্তরপ্রদেশে
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
২৩ জানুয়ারি |
ভোটের দিন ঘোষণার এখনও বেশ কিছু দিন বাকি। গো-বলয়ের সবথেকে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশে কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর জাদুর ছাপ স্পষ্ট হতে শুরু করেছে।
উত্তরপ্রদেশে গত ২৮ ডিসেম্বর থেকে এ বছরের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত একটি জনমত সমীক্ষা করেছে এবিপি নিউজ-এ সি নিয়েলসেন। ৮০টি আসনে ন’হাজার মানুষের মতামতের ভিত্তিতে যে ছবিটি পাওয়া গিয়েছে, তা নরেন্দ্র মোদীর মুখে হাসি ফোটাতে পারে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, রাজ্যের আশিটি আসনের মধ্যে ৩৫টি পেয়ে সবথেকে বড় দল হিসেবে উত্থান ঘটতে চলেছে বিজেপির। এর পরেই থাকছে মায়াবতীর বসপা, ১৫টি আসন নিয়ে। মাত্র ১৪টি আসন পেতে পারে মুলায়ম সিংহ যাদবের সমাজবাদী পার্টি। কংগ্রেস চতুর্থ স্থানে থাকতে পারে ৮টি আসন নিয়ে। আর দিল্লি বিধানসভা ভোটের পরে যে আম আদমি পার্টি (আপ) রাতারাতি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে, উত্তরপ্রদেশে তারাও খাতা খুলতে পারে। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ থেকে দু’টি আসন জিততে পারে তারা।
অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে, বহু ক্ষেত্রেই এই জাতীয় জনমত সমীক্ষার ফলাফল বাস্তবের সঙ্গে মেলে না। তবে ভোটদাতাদের মনোভাবের আগাম আঁচ পেতে এই ধরনের সমীক্ষার একটা গ্রহণযোগ্যতাও রয়েছে। যে উত্তরপ্রদেশে সবথেকে বেশি আসন জয়ের জন্য মোদী অনেক আগে থেকে পরিকল্পনা শুরু করেছিলেন, সেখানে এই জনমত সমীক্ষার ফল তাঁকে কিছুটা স্বস্তি দেবে বলেই মনে করছে বিজেপি।
১৯৯৮ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ী জমানায় অবিভক্ত উত্তরপ্রদেশে বিজেপির আসন সংখ্যা ছিল সর্বাধিক। ৫৭টি। কিন্তু পরে সেই সংখ্যাটিই নেমে আসে। গত নির্বাচনে বিজেপি উত্তরপ্রদেশে দশটি আসন পেয়েছিল। কল্যাণ সিংহের মতো নেতার বিজেপি-ত্যাগই এর কারণ বলে মনে করেন অনেকে। এই পরিস্থিতিতে উত্তরপ্রদেশে আসন বাড়ানোটাই মোদীর কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। তাই মোদী নিজের ঘনিষ্ঠ অমিত শাহকে উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বে এনেছেন বেশ কিছু দিন আগে। অমিত এখন কল্যাণ সিংহকেও সমান গুরুত্ব দিয়ে রাজ্যে দলকে একজোট করার চেষ্টা করছেন।
সমীক্ষা বলছে, বুন্দেলখণ্ডের চারটি আসনের মধ্যে বিজেপি এ বার দু’টি পেতে পারে। গত বার এখানে একটিও আসন পায়নি তারা। কংগ্রেস নেতারা মানেন, এই বুন্দেলখণ্ড ছিল রাহুল গাঁধীর পরীক্ষাগার। যেখানে গরিবের ঘরে রাত কাটিয়েছিলেন তিনি। বুন্দেলখণ্ডের জন্য সাত হাজার কোটি টাকার প্যাকেজও দেওয়া হয়েছিল। তার পরেও এখানে এগিয়ে মোদীই।
পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে গোষ্ঠী সংঘর্ষের পরে সংখ্যালঘু ভোট ধরে রাখাই মুলায়মের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, ওই এলাকার ২৯টি আসনের মধ্যে বিজেপি ১১টি পেতে পারে। মুলায়ম পেতে পারেন মাত্র ৫টি আসন। এমনকী মায়াবতী বরাবর এই এলাকায় ভাল ফল করলেও তাঁর ঝুলিতে এ বার মাত্র ৪টি আসন যেতে পারে। দিল্লি লাগোয়া এই এলাকাতেই আপ দু’টি আসনে খাতা খুলতে পারে। যার অর্থ, মেরুকরণের জমিতে বাড়তি ফায়দা মিলছে বিজেপিরই। এখানে কংগ্রেসের সহযোগী অজিত সিংহের দল ৪টি আসন জিতে কংগ্রেসের হাত কিছুটা শক্ত করতে পারে।
মধ্য উত্তরপ্রদেশে গত কয়েক দশক ধরে গাঁধী পরিবারের দাপট রয়েছে। সনিয়া-রাহুলের কেন্দ্রও এই এলাকাতেই পড়ে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, কংগ্রেস এখানে দু’টির বেশি আসন পাচ্ছে না। এখানে ১২টি আসনের মধ্যে ৫টি পেতে পারে বিজেপি।
মোদী-জাদুর ইঙ্গিত মিলেছে পূর্ব উত্তরপ্রদেশেও। এখানেই সবথেকে বেশি জনসভা করছেন মোদী। আজও গোরক্ষপুরে সভা করেছেন। এই এলাকায় ৩৫টি আসনের মধ্যে ১৭টি বিজেপি পেতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, দলের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষার ফল এবিপি-এ সি নিয়েলসেনের ফলাফলের কাছাকাছি। এই ফল আরও ভাল করে বাজপেয়ী জমানার রেকর্ড ভাঙার চেষ্টা করবে দল। |
|
|
|
|
|