নেতাজিও পুঁজি মোদীর? সংসদে শুধুই আডবাণী

২৩ জানুয়ারি
ব্যতিক্রম লালকৃষ্ণ আডবাণী। তিনি ছাড়া ২৩ জানুয়ারি সংসদের সেন্ট্রাল হলে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ছবিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসেননি আর কোনও সাংসদ।
মনমোহন সরকারের কোনও মন্ত্রী বা এআইসিসি-র নেতা দূরের কথা, পশ্চিমবঙ্গ থেকে কংগ্রেস, তৃণমূল বা সিপিএমের কোনও সাংসদই আজ সংসদের সেন্ট্রাল হলের অনুষ্ঠানে নেতাজিকে শ্রদ্ধা জানাতে যাননি। আডবাণী, জনা দুয়েক প্রাক্তন সাংসদ আর লোকসভা সচিবালয়ের গুটিকতক অফিসারের উপস্থিতিতেই শেষ হয় সংসদে নেতাজি স্মরণ।
নেতাজির তৈরি দল ফরওর্য়াড ব্লকের নেতারা সুভাষচন্দ্র বসুর প্রতি এই ‘অবহেলা’-র জন্য ইউপিএ-সরকারকে দায়ী করলেও দিল্লির রাজনীতিকদের মনে অন্য প্রশ্ন উঠেছে। তা হল, সর্দার বল্লভভাই পটেলের পর এ বার বিজেপি কি নেতাজিকেও রাজনীতির পুঁজি করতে চাইছে?
নেতাজিকে নিয়ে এ বছর বিজেপির হঠাৎ উৎসাহই এই প্রশ্ন উস্কে তুলেছে। আডবাণী যেমন সংসদে নেতাজিকে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন, তাঁর সঙ্গে যে দু’জন প্রাক্তন সাংসদ যান, তাঁরাও বিজেপির। আবার দিল্লির অশোক রোডে বিজেপির সদর দফতরে নেতাজির ছবিতে ফুল দিয়ে রক্তদান শিবির চলে দিনভর। কংগ্রেসের দফতরে নেতাজি স্মরণে অনুষ্ঠানই হয়নি।

সংসদে আডবাণী। —নিজস্ব চিত্র।
আজ উত্তরপ্রদেশে গোরক্ষপুরের জনসভায় নেতাজির ‘দিল্লি চলো’-র ডাক মনে করান মোদী। বলেন, “নেতাজি বলেছিলেন, আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো। আমি বলছি আমাকে ৬০ মাস সময় দাও। আমি তোমাদের সুখ-শান্তির জীবন দেব।” এই সভায় হাজির হওয়ার আগে সকালেই তড়িঘড়ি কটকে নেতাজির জন্মভিটে ঘুরে আসেন বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহ। সেই সঙ্গে নেতাজির অন্তর্ধান নিয়ে যাবতীয় নথি প্রকাশের দাবিও তোলেন তিনি। অতীতে কংগ্রেসে থাকলেও যে সব ব্যক্তিত্বকে কংগ্রেস আজ আর স্মরণ করে না, বিশেষ করে নেহরু-গাঁধী পরিবারের ধারার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত নন, ভোটের আগে তাঁদেরই পুঁজি করছে বিজেপি। সেই কারণেই সর্দার পটেলের পর এ বার নেতাজিকে নিয়ে মোদীর এই উৎসাহ। কিন্তু বিজেপির এই উৎসাহকে গুরুত্ব দিতে রাজি নন ফরওয়ার্ড ব্লকের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস। তাঁর যুক্তি, “আডবাণীর রথযাত্রাতেও নেতাজি-বিবেকানন্দের ছবি ছিল। কিন্তু নেতাজি বা বিবেকানন্দের দর্শন থেকে বিজেপি বহু দূরে।” পটেলের সঙ্গে নেতাজির চিন্তারও বিস্তর ফারাক রয়েছে বলে মত দেবব্রতবাবুর।
কিন্তু সংসদে কেন আডবাণী ছাড়া আর কোনও দলের সাংসদের দেখা মিলল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের কোনও সাংসদ সংসদে না-যাওয়ায় অনেকেই বিস্মিত। সিপিএম, তৃণমূল ও কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গের সাংসদরা সকলেই রাজ্যে। সেখানেই নানা অনুষ্ঠানে নেতাজিকে শ্রদ্ধা জানান তাঁরা। ফব-নেতৃত্বের বক্তব্য, দিল্লিতে দলের কেন্দ্রীয় দফতরে এবং সুভাষ প্লেসে আজ নেতাজি স্মরণে নানা অনুষ্ঠান হয়েছে। কিন্তু সদস্যদের মনোভাবে লোক-সভার সচিবালয়ের অফিসাররাও বিস্মিত। তাঁদের বক্তব্য, অতীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংসদ থাকাকালীন প্রয়াত নেতাদের জন্মদিনে শ্রদ্ধা জানাতে আসতেন। এ বার আডবাণী ছাড়া যে দুই প্রাক্তন সাংসদ শীলা গৌতম ও রাম সিংহ কাসওয়ান এসেছিলেন, তাঁরাও বিজেপিরই নেতানেত্রী। আর কেউ আসেননি।
ফব-নেতা দেবব্রত বিশ্বাস বলেন, “নেতাজির প্রতি ইউপিএ-সরকারের মনোভাবই এর কারণ। নেহরু-গাঁধী পরিবারের কারও জন্মদিন হলে কংগ্রেসের এক ডজন মন্ত্রী-নেতা সংসদে আসতেন। অন্য কারও ক্ষেত্রে তাঁদের দেখা মেলে না।” এ বিষয়ে লোকসভার স্পিকারেরও ভূমিকা নেওয়া উচিত বলে দেবব্রতবাবুর মত। অনুষ্ঠানে স্পিকার মীরা কুমারও আসেননি। এ দিন দিল্লিতে ছিলেন না স্পিকার।

চড় সাংবাদিককে
নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে এক সাংবাদিককে চড় মারার অভিযোগ উঠল দ্বারকা শ্রদ্ধা পীঠের পুরোহিত শঙ্করাচার্য স্বামী স্বরূপানন্দ স্বরস্বতীর বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক ব্যক্তির ক্যামেরায় পড়েছে সেই ছবি। অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন শঙ্করাচার্য। দ্বারকা শ্রদ্ধা পীঠের এই পুরোহিত কংগ্রেস ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত। মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশের একাধিক স্থানীয় সংবাদপত্রে এর আগে মোদীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিরূপ মন্তব্যও করেছেন তিনি। শঙ্করাচার্য জানান, তিনি ওই সাংবাদিককে রাজনৈতিক প্রশ্ন করতে বারণ করেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীকে নিয়ে বারবার প্রশ্ন করেন ওই সাংবাদিক। তাতে ধৈর্য হারিয়ে এই কাণ্ড।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.