|
|
|
|
বাংলাই মিলিয়ে দিল চিন জাপানকে
অগ্নি রায় • নয়াদিল্লি
২৩ জানুয়ারি |
সেনকাকু দ্বীপের দখল নিয়ে বেজিং এবং টোকিও-র মধ্যে তিক্ততা প্রায় যুদ্ধকালীন পর্যায়ে। কিন্তু বাংলা ভাষার খাতিরে সম্প্রতি এই দু’দেশের প্রতিনিধিকে হাত মেলাতে দেখল দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ডিপার্টমেন্ট অব মডার্ন ল্যাংগুয়েজেস অ্যান্ড লিটেরারি স্টাডিজ’-এর নেতৃত্বে বাংলা ভাষা শিক্ষার ইতিহাস এবং সমাজতত্ত্ব নিয়ে দু’দিনব্যাপী একটি সম্মেলন হয়ে গেল। এসেছিলেন হিরোশিমা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার শিক্ষক তোগাওয়া মাশাহিকো, পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝাং ঝিং, সিলেট-এর শাহজলাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ফারজানা সিদ্দিকারা।
বক্তৃতা-আলোচনার ফাঁকেই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যান্টিনে গভীর আড্ডায় ডুবে থাকতে দেখা গেল জাপান এবং চিনের দুই শিক্ষককে। ওঁরা কথা বলছেন বাংলাতে! বিষয়? রবীন্দ্রনাথ। মাশাহিকো পাঁচ বছর বাংলা ভাষা শিক্ষা নিয়েছেন শান্তিনিকেতনে। এখন হিরোশিমা বিশ্ববিদ্যালয়ে কালচারাল অ্যানথ্রোপলজি বিভাগে পড়াচ্ছেন বাংলা। জানান, “রবীন্দ্রনাথ নিজে জাপানে যান ১৯১৬ সালে। কিন্তু তারও চোদ্দো বছর আগে জাপানি ইতিহাসবিদ ও শিল্প গবেষক ওকাকুরা তেনশিন কলকাতা সফরে এসে রবীন্দ্রনাথে মজেছিলেন।”
একমত পাশে বসা চিনা অধ্যাপক ঝাং ঝিং। বাংলা এবং ইংরেজিকে প্রধান বিষয় রেখে ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিকেশন-এ স্নাতকোত্তর করেছেন তিনি। ঢাকা ও কলকাতায় থেকে কাছ থেকে দেখেছেন বাঙালিদের। কলকাতার চিনেপাড়ায় গিয়ে খুঁজেছেন আত্মপরিচয়। ঝাং-এর কথায়, “১৯৬০ সালে আমাদের দেশ থেকে কলকাতায় প্রায় ২৫ হাজার মানুষ চলে এসে বসতি গড়েছিলেন। বৌবাজার এবং ট্যাংরায় গড়ে উঠেছিল দু’টি চিনে পট্টি।” পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় এবং কমিউনিকেশন ইউনিভার্সিটি এই দু’জায়গাতেই বাংলা পড়ানো হয় ডিগ্রি স্তরে। প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে বাংলার ক্লাস চললেও ছাত্র সংখ্যা অবশ্য কখনই বিশ ছাড়ায়নি। যাঁরা পাশ করেন তাঁরা বাংলা রেডিওর জন্য কাজ করেন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। অনুবাদের কাজও শুরু হয়েছে। ১৯৮৬ সালে জাপানি ভাষায় রবীন্দ্রসমগ্র অনুবাদের কাজ শেষ হয়েছে।
সম্মেলনের আহ্বায়ক, বাংলার অধ্যাপিকা নন্দিতা বসু জানাচ্ছেন, “এঁরা দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে বাংলা ভাষা নিয়ে যে উৎসাহ দেখালেন তা খুবই প্রেরণা জোগায়। ছাত্ররা দেখল যে অন্যান্য দেশেও বাংলা পড়ার উৎসাহ রয়েছে।” |
|
|
|
|
|