মনোবিদের কাউন্সেলিংয়েও তেমন মুখ খুললেন না খিদিরপুর কাণ্ডের নির্যাতিতা তরুণী। অল্পবিস্তর কথা বললেও পর্যাপ্ত তথ্য পাননি গোয়েন্দারাও। ফলে রবিবার রাতে ওই তরুণীর সঙ্গে ঠিক কী কী ঘটেছিল, তা নিয়ে এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছে না পুলিশ। তবে তাঁকে নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার ফাঁদে ফেলেই ধর্ষণ করা হয়েছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
রবিবার রাতে ওয়াটগঞ্জের একটি গ্যারাজে লরির ভিতরে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। সোমবার গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় প্রথমে তাঁকে ভর্তি করা হয় হাওড়া জেলা হাসপাতালে। পরে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মধ্য কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় ওই তরুণীকে। অবস্থার কিছু উন্নতি হওয়ার পরে বৃহস্পতিবার প্রথম কাউন্সেলিং করা হয় তাঁর। চিকিৎসকেরা জানান, আপাতত কাউন্সেলিংই ওই তরুণীর প্রধান চিকিৎসা।
ধর্ষণের পরে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন ওই তরুণী। মঙ্গল ও বুধবার প্রায় নীরবই থাকলেও এ দিন কাউন্সেলিংয়ের সময় মনোবিদের সঙ্গে কিছুটা কথা বলেছেন তিনি। তবে খুব বেশি কিছু বলতে চাননি। মনোবিদের কথা শোনার সময়ে চোখ থেকে অঝোরে জল পড়েছে।
এ দিন কিছুটা খাওয়াদাওয়াও করেছেন ওই তরুণী। কাউন্সেলিংয়ের পাশাপাশি ঘুমের ওষুধও দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ঘুমের ওষুধ খেয়েও পর্যাপ্ত ঘুম হচ্ছে না তাঁর। চিকিৎসকদের মতে, পর্যাপ্ত ঘুম না হলে স্নায়ু শান্ত করার প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে।
খিদিরপুর কাণ্ডে ধৃত মহম্মদ হামিদ ওরফে রাজকে নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় ওয়াটগঞ্জ এলাকার ওই গ্যারাজ এবং সুধীর বসু রোডে রাজের এক আত্মীয়ের বাড়িতে যান গোয়েন্দারা। তার পরে রাতে ফের একপ্রস্ত জেরা করা হয় তাকে। পুলিশের দাবি, রাজকে
বারবার জেরা করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, ওই রাতে হাওড়া যাওয়ার বাস মিলবে না, এ কথা বুঝিয়েই তরুণীকে ফাঁদে ফেলেছিল রাজ। তার পরে রাতে নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার নাম করে গ্যারাজে নিয়ে গিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে সে। কিন্তু হাওড়া যাওয়ার পথে তিনি খিদিরপুর গিয়েছিলেন কেন, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা কাটেনি পুলিশের।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা তরুণীর মা গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করলেও এখনও তেমন প্রমাণ পাননি গোয়েন্দারা।
তাঁরা বলছেন, রাজ জেরায় নানা দাবি করলেও সেগুলি পুরোপুরি বিশ্বাস করা যাচ্ছে না। সেই রাতে ঠিক কী হয়েছিল, তা বলতে পারেন ওই তরুণীই।
লালবাজার সূত্রের খবর, তরুণীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ার পরে গোয়েন্দা বিভাগের মহিলা অফিসারেরা তাঁর সঙ্গে অল্পবিস্তর কথা বলেছেন। কিন্তু মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ার ফলে বিস্তারিত কথা বলতে পারছেন না ওই তরুণী। কলকাতা পুলিশের এক গোয়েন্দাকর্তার কথায়, “তরুণীর সঙ্গে বেশি কথা বলা যায়নি। ফলে ধন্দও কাটেনি।”
|