প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের কাউন্সেলিং নিয়ে বিশৃঙ্খলার অভিযোগে বৃহস্পতিবার হেস্টিংস হাউসে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। প্রার্থীদের অভিযোগ, বিশৃঙ্খলা হয়েছে মূলত দু’ভাবে। প্রথমত, কাউন্সেলিংয়ে প্রচুর দেরি হয়েছে। তা চলে গভীর রাত পর্যন্ত। দ্বিতীয়ত, মেধা-তালিকা না-টাঙিয়ে নিয়ম ভেঙে নাম ডাকা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ দেরির অভিযোগ মানলেও নিয়ম ভেঙে ভিতর থেকে প্রার্থীদের নাম ডাকার কথা স্বীকার করতে চায়নি।
এ বার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা (টেট)-য় খুব কম প্রার্থীই উত্তীর্ণ হয়েছেন। সেই প্রার্থীদের দফায় দফায় কাউন্সেলিং চলছে জেলায় জেলায়। কাউন্সেলিংয়ের সময়েই পছন্দমতো স্কুল বেছে নিতে পারছেন প্রার্থীরা। প্রতি জেলায় আলাদা আলাদা দিনে কাউন্সেলিং হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার দিন। আলিপুরের হেস্টিংস হাউসে সকাল ১০টায় কাউন্সেলিং শুরু হয়ে চলে গভীর রাত পর্যন্ত। ফলে মহিলা-সহ সব প্রার্থীই বাড়ি ফিরতে অসুবিধায় পড়েন বলে অভিযোগ। তাঁরা জানান, অত রাতে বাড়ি ফেরার জন্য কোনও অতিরিক্ত পরিবহণের ব্যবস্থা করা হয়নি। ডাকের অপেক্ষায় সারা দিন দাঁড়িয়ে থেকে কোনও ভাবে কাউন্সেলিং পর্ব শেষ করতে পারলেও পথে নেমে সমস্যায় পড়েন অনেকে। কেননা ফেরার জন্য যানবাহন প্রায় ছিলই না।
রাত ১১টায় হেস্টিংস হাউসে গিয়ে দেখা যায়, ঠান্ডার মধ্যে পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে তখনও শ’খানেক প্রার্থী ডাকের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন। প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কয়েক জন প্রার্থীর অভিযোগ, নির্ধারিত প্রার্থীদের বাদ দিয়ে চিরকুট পাঠিয়ে অন্য প্রার্থীদের ডাকা হচ্ছিল। তা নিয়ে রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ গোলমাল বাধে। পুলিশ এসে সামাল দেয়। অভিযোগ, কাউন্সেলিং কেন্দ্রে কোনও মেধা-তালিকা টাঙানো ছিল না। নিয়ম ভেঙে কাউন্সেলিংয়ের ঘর থেকে চিরকুটে নাম লিখে বাইরে থেকে প্রার্থীদের ডাকা হচ্ছিল। তাতেই নির্ধারিত প্রার্থীদের দেরি হয়ে যাচ্ছিল।
এই অভিযোগ অস্বীকার করেন প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “প্রতিটি জেলা অফিসেই মেধা-তালিকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিয়োগের ক্ষেত্রে সংরক্ষণের নিয়ম মেনেই নাম ডাকা হয়েছে কাউন্সেলিংয়ে।” তবে দেরি যে হয়েছে, তা মেনে নিয়েছেন মানিকবাবু। তাঁর ব্যাখ্যা, প্রার্থীদের পছন্দসই স্কুল বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সেই বাছাইয়ের জন্যই সময় লাগছে। কাউন্সেলিং শেষ করতে দেরি হয়েছে সব জেলাতেই। তবে বাড়ি ফেরার পথে কেউ সমস্যায় পড়লে কাউন্সেলিং কেন্দ্রে সাহায্যের ব্যবস্থাও ছিল বলে তাঁর দাবি। |