পোস্টার থেকে সরলেন গাঁধী
পোস্টার বিতর্কে সিপিএমের চাপে শেষ পর্যন্ত পিছু হঠল ডিওয়াইএফ। পোস্টার থেকে গাঁধীজি-সহ সমস্ত স্বাধীনতা সংগ্রামীর ছবিই সরিয়ে ফেলল তারা। বৃহস্পতিবার বিকালে হলুদ কাগজে কালো কালিতে লেখা নতুন পোস্টার লাগানো হল দুর্গাপুরের বিধাননগরের বিভিন্ন জায়গায়। ‘দূর্নীতি মুক্ত দেশ গড়া’র আগে জুড়ে দেওয়া হয়েছে ‘সকলের জন্য কাজ’ কথাটি। সংগঠনের যুব নেতাদের অবশ্য দাবি, “এই পিছু হঠা সাময়িক। বহুদিন পর পার্টির মধ্যে তাত্ত্বিক চর্চা শুরু হল। লেনিন বলেছিলেন, এক পা পিছিয়ে দু’পা এগোনোর কথা। আমরা মনে করি এটাও তেমনই।”
নতুন পোস্টার। —নিজস্ব চিত্র।
২৬ জানুয়ারি ডিওয়াইএফ-এর দুর্গাপুর পূর্ব ২ জোনাল কমিটি ‘দুর্নীতি মুক্ত ভারত’ গড়ার ডাক দিয়ে দুর্গাপুরে দশ কিলোমিটার ম্যারাথন দৌড় আয়োজন করেছে। সিপিএম বা ডিওয়াইএফ-এর বিভিন্ন আন্দোলনে সাধারণত পোস্টার-ব্যানারে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন কমিউনিস্ট নেতাদের ছবি। কিন্তু ম্যারাথনের ডাক দেওয়া পোস্টারে নেতাজি, ভগৎ সিংহ, লক্ষ্মী সাইগলের পাশাপাশি মহাত্মা গাঁধীর ছবি ব্যবহার করায় বিতর্ক তৈরি হয়। ফেসবুকের মাধ্যমে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নজরে আসে সিপিএম নেতাদেরও।
গাঁধীর ছবি থাকবে কি না, সে নিয়ে কার্যত দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যান দলীয় নেতৃত্ব। দলের একাংশ সরাসরি বিরোধীতা না করলেও অন্য পক্ষ জানিয়ে দেয়, নেতাজি, ভগৎ সিংহ বা লক্ষ্মী সায়গল নিয়ে আপত্তি নেই। কিন্তু মহাত্মা গাঁধীর ছবি ব্যবহার করা যাবে না। ডিওয়াইএফ-এর দুর্গাপুরের এক নেতা জানান, এরপরেই ফেসবুক থেকে ওই বার্তা সরিয়ে ফেলার নির্দেশ আসে। নির্দেশ আসে পোস্টার-ব্যানার লুকিয়ে ফেলারও। মঙ্গলবার সকাল থেকে অনেকেই নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে ওই পোস্টার সরিয়ে ফেলতে শুরু করেন। নতুন করে পোস্টার ছাপানো হয়। বৃহস্পতিবার বিকালে তা লাগানো হয় বিধাননগরের বিভিন্ন জায়গায়।
ডিওয়াইএফ-এর যুব নেতাদের কেউ অবশ্য প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে তাঁরা এবং তাঁদের পাশে দাঁড়ানো সিপিএম নেতৃত্বের একাংশ ‘গাঁধীজি যে কমিউনিস্ট পার্টিতে মোটেও ‘অছ্যুৎ’ নন তা প্রমাণে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ইএমএস নাম্বুরিপাদের ‘গান্ধী অ্যান্ড ইজম’, ‘ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস’, সুধাংশু দাসগুপ্তের ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে সশস্ত্র বিপ্লবীদের ভূমিকা’, মৌলানা আবুল কালাম আজাদের লেখা ‘ভারত স্বাধীন হল’, সৈয়দ সাহিদুল্লার ‘লেনিনবাদীর চোখে গান্ধীবাদ’ প্রভৃতি বই থেকে গাঁধীজির মূল্যায়ন তুলে ধরছেন তাঁরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুব নেতা বলেন, “আপাতত আমরা সরে এসেছি। কিন্তু পার্টির মধ্যে বিষয়টি নিয়ে জোর তর্ক শুরু হয়েছে। এটা পার্টির পক্ষে স্বাস্থ্যকর।” সিপিএমের বিধাননগর-জেমুয়া লোকাল কমিটির সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকার জানান, ডিওয়াইএফআইয়ের কোনও অফিসিয়াল ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ছবি-সহ বার্তা পাঠানো হয়নি। ব্যক্তিগত অ্যকাউন্ট থেকে পাঠানো হয়েছিল। তিনি বলেন, “আমাকেও অনেকে ট্যাগ করেছিলেন। আমি মন্তব্যও করেছিলাম। আবার দেখি তাঁরা তুলে নিয়েছেন। কেন ঠিক বলতে পারব না।” তাঁর মতে, যুব সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামনের সারতে ছিলেন গাঁধীজি, সে জন্যই তাঁর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি বলেন, “কমিউনিস্ট পার্টির অভ্যন্তরে বিতর্ক হয়েই থাকে। তবে এমন কিছুই হওয়া উচিত নয় যা পার্টি বা গাঁধীজির জন্য অবমাননাকর।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.