ডাকটিকিটে নেতাজি স্মরণ
কোথাও যুদ্ধরত আজাদ হিন্দ সেনা, কোথাও আজাদ হিন্দ বাহিনীর আহত সেনাকে সেবা করছেন একজন নার্স, আবার কোথাও ভারতের মানচিত্রের উপর শেকলখুব যত্ন করে এক ডাকটিকিটগুলি দেখাচ্ছিলেন দুর্গাপুরের অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ককর্মী অমরেন্দ্রনাথ বাগ।
সুভাষ ঘরে ফেরেননি। কিন্তু তাঁর নেতৃত্বে তৈরি আজাদ হিন্দ বাহিনীর স্মারক ডাকটিকিট বাংলায় ফিরেছিল। সেই টিকিটই ব্যক্তিগত উদ্যোগে সংগ্রহ করেছিলেন হুগলির ধনেখালির স্বাধীনতাসংগ্রামী রাখালচন্দ্র বাগের ছেলে অমরেন্দ্রনাথ বাগ। প্রতি বছরের ২৩ জানুয়ারি সেই ডাকটিকিটগুলি সামনে রেখে প্রিয় নায়ককে শ্রদ্ধা জানান বর্তমানে দুর্গাপুরের বাসিন্দা ওই অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক কর্মী।
আজাদ হিন্দ ফৌজের ডাকটিকিট।—নিজস্ব চিত্র।
ডাকটিকিট সংগ্রহ হল অমরেন্দ্রনাথবাবু নেশা। তাঁর সংগ্রহে নানা দেশের প্রায় ৫০ হাজার ডাকটিকিট রয়েছে বলে জানান তিনি। তার মধ্যেই রয়েছে আজাদ হিন্দ বাহিনীর প্রকাশ করা ৯টি ডাকটিকিট। অমরেন্দ্রবাবু জানান, এই ডাকটিকিটগুলি ভারতের প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দিয়ে মুক্ত ভারতের ডাক দিতে চেয়েছিলেন নেতাজি। সেই উদ্দেশ্যে জার্মানির বার্লিনের ছাপাখানা থেকে নয় রকমের ছবি দেওয়া প্রায় ৯ লক্ষ ডাকটিকিট ছাপা হয়েছিল। এই ডাকটিকিটগুলির ডাকমাশুল ছিল আধ আনা, এক আনা, দুই আনা। এ ছাড়াও অনুদান হিসেবে নেওয়া হত ২ আনা থেকে ১২ আনা পর্যন্ত। কিন্তু নেতাজির স্বপ্ন সফল হয়নি। ডাকটিকিটগুলি ব্যবহারের আগেই চলে গিয়েছিল সেই সময় ব্রিটিশের সহযোগী দেশ আমেরিকার হাতে।
নেতাজির স্মৃতিবিজরিত এই ডাকটিকিটগুলি পেতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল অমরেন্দ্রবাবুকে। তিনি বলেন, “১৯৬০ সালে খবরের কাগজ পড়ে জানতে পারি, আজাদ হিন্দ বাহিনীর ঐতিহাসিক ডাকটিকিটগুলি কলকাতায় পাওয়া যাচ্ছে। এর পরে আমি কলকাতায় খোঁজখবর করে যুদ্ধরত আজাদ হিন্দ সেনা, জমিতে লাঙ্গল দেওয়া কৃষক, আহত সেনাকে সেবা করা নার্স, অবিভক্ত ভারতের মানচিত্রে শিকল ভাঙার ছবি-সহ বিভিন্ন ছবি দেওয়া ৯টি ডাকটিকিট পাই। ভারত স্বাধীন হওয়ার পরে দেশের ডাকবিভাগ বিভিন্ন সময়ে নেতাজির উপরে মোট ৫টি ডাকটিকিট প্রকাশ করেছিল। সেগুলিও আমার সংগ্রহে রয়েছে।” তবে তাঁর ক্ষোভ, “ভারত ছাড়া অন্য কোনও দেশ নেতাজিকে নিয়ে এখনও ডাকটিকিট বের করেনি।”
ডাকটিকিটগুলি হাতে পাওয়ার পরে পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। তাতে কী? এ বছরও বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ডাকটিকিটগুলিকে সামনে রেখে নেতাজিকে স্মরণ করলেন ষাট পেরোনো অমরেন্দ্রনাথ। ছুঁয়ে দেখলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের এক মরিয়া লড়াইকে। যে লড়াই তথ্যগত ভাবে ব্যর্থ হলেও প্রতিটি ভারতবাসীর হৃদয়ে রয়ে গিয়েছে। রূপকথা হয়ে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.