এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগে এক যুবককে পিটিয়ে মারলেন বাসিন্দারা। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ রায়গঞ্জের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের দেবীনগর এলাকায় ওই ঘটনাটি ঘটেছে। ওই যুবকের হামলায় জখম হয়েছেন ব্যবসায়ীর দুই পুত্রও। তাঁদের মাথায় ধারাল অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। ওই দু’জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, নিহত ওই যুবকের নাম সুজন সরকার (২৪)। তার বাড়ি রায়গঞ্জ থানার রুপাহার এলাকায়। সে পেশায় মোটরবাইক মেরামতির মিস্ত্রী। বুধবার দেহের ময়নাতদন্ত হয়। তবে পরিবারের লোকজন মৃতদেহটি নিতে না আসায় সেটি মর্গে রেখে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ১৯ ডিসেম্বর দেবীনগর এলাকাতেই দুষ্কৃতীরা তপন রাহা নামে এক স্টেশনারি দোকানের ব্যবসায়ীর বাড়িতে ঢুকে তাঁকে কুপিয়ে খুন করে পালায়। নিহত তপনবাবুর উল্টোদিকেই ওই ধীরেনচন্দ্র ঘোষের বাড়ি।
রায়গঞ্জ থানার আইসি পূরণ রাই বলেন, “দুষ্কৃতীরা ধীরেনচন্দ্রবাবুর বাড়িতে ডাকাতির উদ্দেশ্যে ঢুকেছিল বলে অভিযোগ। পরিবারের লোকজন টের পেয়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করায় কয়েকজন দুষ্কৃতী পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও এক দুষ্কৃতী ধরা পড়ে। পালালোর চেষ্টায় সে পরিবারের দু’জনকে জখম করে। পরে গণপিটুনিতে ওই দুষ্কৃতীর মৃত্যু হয়েছে। বাকিদের খোঁজা হচ্ছে।” পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ওই যুবকের কাছ থেকে একটি স্কুলব্যাগ, লোহার হুক লাগানো শক্ত দড়ির সিঁড়ি, একাধিক ধারাল অস্ত্র ও তালা ভাঙার যন্ত্রপাতি উদ্ধার হয়েছে।
ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহিত সেনগুপ্ত রায়গঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যানের পাশাপাশি রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক ও উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতি। এ দিন মোহিতবাবু ধীরেনচন্দ্রবাবুর বাড়িতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের ব্যপারে উদ্যোগী হওয়ার আশ্বাস দেন। মোহিতবাবু বলেন, “পুলিশি নিষ্ক্রিয়তায় রায়গঞ্জ শহরের আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন। অবিলম্বে দুষ্কৃতীরা গ্রেফতার না হলে আন্দোলন করা হবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে ডানা গিয়েছে, রায়গঞ্জের সেন্ট্রাল মার্কেটে ধীরেনচন্দ্রবাবুর স্টেশনারি দোকান রয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি বাজারে গিয়েছিলেন। বড় ছেলে সন্দীপবাবু দোকানে ছিলেন। ছোট ছেলে সুদীপ্তবাবু এক বন্ধুর বিয়ের অনুষ্ঠানে যান। বাড়িতে ব্যবসায়ীর স্ত্রী, বৃদ্ধা মা, বড়ছেলের স্ত্রী, নাতনি ছিলেন। ধীরেনচন্দ্রবাবু জানান, রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ বাড়ির ছাদে কয়েকজনের পর পর লাফিয়ে পড়ার শব্দ শোনা যায়। বাড়ির মহিলারা চিৎকার করতেই কয়েকজন ছাদ থেকে নেমে পালায়। ছেলেরাও সেই সময় বাড়িতে আসে। একজনকে ছেলেরা গ্যারাজে আটকায়। সেই সময় ও ছেলেদের কুপিয়ে দেয়। তাদের চিৎকারে লোকজন এসে ওই ছেলেটিকে ধরে মারধর শুরু করে। |