এসজেডিএ-র বিভিন্ন প্রকল্পে আর্থিক দুর্নীতি কাণ্ডে জড়িত ঠিকাদার সংস্থার কর্ণধার ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হল। বুধবার শিলিগুড়ি অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতের থার্ড কোর্টে তাদের তোলা হলে তদন্তের স্বার্থে পুলিশ ৭ দিনের জন্য হেফাজতে নেওয়া আবেদন করে। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের নাম পার্থ পাল, সিদ্ধার্থ পাল এবং সঞ্জয় পাল। তাঁরা এসজেডিএ দুর্নীতি কাণ্ডে অভিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থার কর্ণধার শঙ্কর পালের কারবারের অংশীদার এবং তাঁরই আত্মীয়।
জোড়াপানি নদীখাত সংস্কারে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে পুলিশ শঙ্কর পালকে গ্রেফতার করেছিল। ওই কাজে যুক্ত অপর একটি সংস্থার কর্মকর্তা শঙ্করবাবুর আত্মীয় ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। শঙ্করবাবুকে গ্রেফতার করলেও তাঁর আত্মীয় অভিযুক্তেরা পালিয়ে যান। পুলিশ তাদের বাড়িতে বারবার হানা দিলেও খোঁজ পায়নি। শেষ পর্যন্ত গত ১৫ জানুয়ারি ওই তিন অভিযুক্ত শিলিগুড়ি আদালতে আত্মসমর্পণ করে আগাম জামিনের আবেদন করেন। আদালত তাদের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়। গত ১৬ জানুয়ারি আদালতের বিশেষ অনুমতি নিয়ে কোর্ট লক আপেই জেরা করে পুলিশের একটি দল।
সরকারি আইনজীবী দীননাথ মোহন্ত বলেন, “জোড়াপানি নদীখাত সংস্কারে আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ তিন জনই স্বীকার করেছেন। সেই কারণে তদন্তের স্বার্থে তাঁদের পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছিল।” শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার জগমোহন জানান, সাত দিনের পুলিশ হেফাজত চাওয়া হয়েছিল। আদালত তা মঞ্জুর করেছে। পুলিশ কমিশনার বলেন, “দায়িত্ব নেওয়ার পরেই জানিয়েছিলাম এসজেডিএ মামলা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে। সেই মত তদন্ত চলছে।”
আদালত এবং পুলিশেরই একটি সূত্র জানিয়েছে, তদন্তকারী দলের কাছে অভিযুক্তরা স্বীকার করেন তাদের সংস্থা কার্যত কোনও কাজ না করেই নদীখাত সংস্কার প্রকল্পে মোটা টাকা আদায় করেছে। পুলিশকে তাঁরা তদন্তের কাজে সাহায্যেরও আশ্বাস দিয়েছে। জোড়াপানি নদী খাত সংস্কারে কোথায় কী খরচ হয়েছে কোন কাজ না করেই টাকা নেওয়া হয়েছে বিস্তারিত তথ্য জানতে অভিযুক্তদের জেরা করার গুরুত্বপূর্ণ বলে পুলিশ জানিয়েছে।
জোড়াপানি নদীখাত সংস্কারের কোটেশনের মাধ্যমে কাজ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। মাত্রাতিরিক্ত দরে বরাত দেওয়া এবং কাজ না করেই প্রায় ৯ কোটি টাকা ঠিকাদার সংস্থাগুলিকে মিটিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এমনকী তৎকালীন চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন তাঁকে অন্ধকারে রেখেই দফতরের বাস্তুকারদের একাংশ ওই কাজ করেছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবকে তিনি বিস্তারিত জানিয়ে তদন্তের আবেদনও করেছিলেন। পরে এসজেডিএ’র তরফে প্রধাননগর থানায় ওই প্রকল্পের কাজ নিয়ে আলাদা ভাবে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। |