ছাত্র সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন জমা নিয়ে অশান্তি অব্যাহত। বীরভূমের মল্লারপুর টুরকু হাঁসদা লেপসা হেমব্রম কলেজে এসএফআই ও এবিভিপি সমর্থকেরা কলেজে ঢোকার চেষ্টা করলে লাঠি, বাঁশ, বোমা নিয়ে তাঁদের বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। দুর্গাপুরে আবার মাইকেল মধুসূদন মেমোরিয়াল কলেজে টিএমসিপি-র দুই গোষ্ঠীর হাতাহাতি হয়। |
নিয়ম অনুযায়ী, মনোনয়ন পর্বে কলেজের ২০০ মিটার পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকে। তা অগ্রাহ্য করেই বুধবার মল্লারপুরে কলেজের সামনে জমায়েত হতে থাকে। এসএফআইয়ের অভিযোগ, ঝিকড্ডা, কানাচি, ডাবুক প্রভৃতি এলাকা থেকে শতাধিক তৃণমূল কর্মী ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে বটতলা থেকে গণপুরের ম্যানেজারপাড়া পর্যন্ত পাহারা দিচ্ছিল। মনোনয়ন জমার জন্য কলেজে যাওয়ার চেষ্টা করলে তারা চড়াও হয়। মার খান সিপিএমের ময়ূরেশ্বর জোনাল সম্পাদক অরূপ বাগও। সংবাদমাধ্যমও আক্রান্ত হয়।
কলেজের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক, এসএফআই-এর মহম্মদ গোলাম নবির অভিযোগ, জয়নাল আবেদিন নামে এক টিএমসিপি সমর্থক সিভিক পুলিশ হিসেবে গেটের সামনে ছিলেন। তিনি প্রথম লাঠি হাতে তাঁদের বাধা দেন। নবির বক্তব্য, “আমরা পালিয়ে আসি। দুপুরে ঘুরপথে গণপুরের ম্যানেজারপাড়া দিয়ে কলেজে যাওয়ার চেষ্টা করলে ওরা জাতীয় সড়কে বোমাবাজি করে। আমরা মনোনয়ন জমা দিতে পারিনি।” বিজেপি অনুগামী অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) সমর্থক ইন্দ্রনীল সাহার অভিযোগ, সাড়ে ১১টা নাগাদ মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার সময়ে তাঁদেরও কলেজের বাইরে মারধর করে টিএমসিপি। এক টিভি সাংবাদিকের ক্যামেরা, মোবাইল কেড়ে লাঠিপেটা করা হয়। ক্যামেরার মেমোরি কার্ড, মোবাইল লোপাট। |
নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধেও। অরূপবাবুর অভিযোগ, “আমি পুলিশের সাহায্য চাই। কিন্তু ওরা তো গণ্ডগোল হচ্ছে দেখে কলেজে ঢুকে যায়।” দুপুরেও মল্লারপুর ব্লক অফিস থেকে কলেজ পর্যন্ত জায়গায়-জায়গায় তৃণমূল কর্মীরা জড়ো হয়েছিলেন। কলেজের সামনে শ’দেড়েক সিভিক পুলিশ ও জনা পঁচিশ পুলিশ দাঁড়িয়ে। তাদের সামনেই জাতীয় সড়কে বাস থামিয়ে তৃণমূল কর্মীরা খোঁজ নিচ্ছিলেন, ভিতরে এসএফআই সমর্থক আছেন কি না। টিএমসিপি-র ময়ূরেশ্বর ১ ব্লক সভাপতি অভিজিৎ মণ্ডল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
দুপুর আড়াইটের পরে বোমাবাজি থামলে ম্যানেজারপাড়া মোড় অবরোধ করে এসএফআই। দাবি, তাদের এক প্রর্থীকে তৃণমূল তুলে নিয়ে গিয়েছে। তাঁকে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে হবে পুলিশকে। এসএফআইয়ের জেলা সভাপতি ঋক চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের মনোয়নপত্র জমা করার জন্য আলাদা দিন দেওয়া হোক। না হলে কোর্টে যাব।” পুলিশ নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে কাউকে ধরা হয়নি। দুর্গাপুরের ঘটনায় দু’জনকে আটক করা হয়েছে। |